মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৪ অপরাহ্ন

নওগাঁর মহাদেবপুরে গ্রামপুলিশের বাবাসহ গ্রামপুলিশকে মারপিটের অভিযোগ

আইনুল ইসলাম, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মহাদেবপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক গ্রামপুলিশের বৃদ্ধ পিতা আব্দুল মালেককে (৭৫) প্রতিপক্ষরা মারপিট করে জখম অবস্থায় তাদের ঘরে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার খবর পেয়ে গ্রামপুলিশ ও থানাপুলিশ ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটে ৭মে উপজেলার চাঁন্দাশ ইউনিয়নের বাগডোব গ্রামে। এই মারপিটের ঘটনায় ওই বৃদ্ধের ছেলে গ্রামপুলিশ মোস্তাকিন আহম্মেদ সরদার ওইদিনই বাগডোব গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দীনের ছেলে রহিম সরদার (৪০), তার ভাই আব্দুল কুদ্দুস (৩৫) এর বিরুদ্ধে মহাদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে প্রকাশ, ওইদিন সকাল ১১ টায় তাদের খলিয়ানে বিবাদীগন ধান মাড়াই করতে গেলে তার বৃদ্ধ পিতা নিষেধ করে। প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হয়ে বৃদ্ধ আব্দুল মালেককে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ী মারপিট করে এবং তাদের বসত আঙ্গিনায় পিয়ারা গাছের সাথে বেঁধে চড় থাপ্পর ও কিলঘুষি মারে। গ্রামপুলিশ মোস্তাকিন আহম্মেদ সরদার জানান, আমি ওইদিন মহাদেবপুর সোনালী ব্যাংকে বয়স্ক ভাতার টাকা উত্তোলনের ডিউটিতে ছিলাম। পরে জানতে পেরে এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানালে বিবাদীগণ ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকেও এলোপাথাড়ী মারপিট করে এবং আমার ডিউটিরত পোশাকের ডান সোল্ডার ব্যাজ ছিনিয়ে নিয়ে খাকি পোশাক ছিয়ে ফেলে। তারা আমাকে হত্যা করার হুমকিও দেয়।

আমি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠ বিচারের দাবী জানায়। এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ আব্দুল রহিমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি খবর প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বৃদ্ধ আব্দুল মালেককে মারপিট বা গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়নি তবে তাকে তাদের আঙ্গিনায় নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। এ ব্যাপারে চাঁন্দাশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদাননবী রিপনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, তিনি গ্রামপুলিশ (দফাদার) আয়নাল হক ও সইবর আলীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম জুয়েলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মহাদেবপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ ৫ জন আহত ও ১ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা ॥ গ্রেফতার ১

আইনুল ইসলাম, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মহাদেবপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে একই পরিবারের মহিলাসহ পাঁচজন আহত এবং একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় থানা পুলিশ সাইদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে। এব্যাপারে নিহতের ভাই আব্দুল মালেক ৭ জনকে আসামী করে মহাদেবপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসীরা জানায় মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের মর্ত্তুজাপুর গ্রামের সন্ত্রাসী প্রকৃতির মৃত সৈয়দ আলী মন্ডলের পুত্র আলিমুদ্দীন, আলিমুদ্দীনের পুত্র ছয়ফুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, শরিফুল ইসলামের মামা দেবীপুর গ্রামের মৃত ছায়েদ আলী পুত্র সাইদুর রহমানসহ তাদের সহযোগীদের নিয়ে গত ৭ মে বৃহস্পতিবার বেলা ২ টার দিকে লাঠি-সোটা, লোহার রড, শাবল ও ধারালো অস্ত্রসহ একই গ্রামের প্রতিবেশী মৃত মফিজ উদ্দীনের পুত্র আব্দুল আজিজের বসত বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আব্দুল আজিজ (২৫) কে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে।

এ ঘটনায় আব্দুল আজিজের ভাই আব্দুল মালেক (৪০), আব্দুল খালেক (৩২), বোন মাবিয়া (৪৮), ভাতিজি মরিয়ম (১৫) ও খাতিজা (১২) তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাদেরকেও এলোপাথারী মারপিট করা হয়। এ সময় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের মারপিটে মৃত মফিজ উদ্দীনের পুত্র আব্দুল আজিজ, আব্দুল মালেক, আব্দুল খালেক, মেয়ে মাবিয়া, নাতনী মরিয়ম ও খাদিজা আহত হয়। এ সময় গ্রামবাসীরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় আব্দুল আজিজকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ মে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে আব্দুল আজিজ মারা যায়। মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল খালেকের অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আব্দুল খালেকের অবস্থা এখনও শংকামুক্ত নয় বলে জানা গেছে।

এব্যাপারে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার রাতেই নিহত আব্দুল আজিজের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পূর্ণ করা হয়েছে। ওইদিন রাতেই নিহতের বড় ভাই আব্দুল মালেক বাদী হয়ে ৭জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে একজন আসামী সাইদুর রহমানকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335