মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন

বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাব ইতিহাস (ভিডিও সহ)

বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাব এর ইতিহাস

 

বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাব এর যাত্রা শুরু, “মাতৃভুমি তথা নিজ দেশ ভ্রমন করুন, দেশকে জানুন; পর্যটন হোক টেকসই উন্নয়নের হাতিয়ার” এই শ্লোগান কে উপজীব্য করে ১৫ নভেম্বর ২০১৫ইং সালে ঢাকায় বসে মাত্র ৩ জন সদস্যের পরিকল্পনায় ক্লাবটি প্রথম গঠিত হয়। শুরুতেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই প্রত্ন সম্পদে ভরপুর বগুড়া জেলাকে দেশে/বিদেশে তুলে ধরার।

বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ এক দিকে হিমালয় পর্বত অন্যদিকে বে-অফ বেঙ্গল। বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ হলেও পর্যটন বৈচিত্রের দিক থেকে পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় বেশি পর্যটককে টানার মত দেশ আর বগুড়া জেলার মহাস্থানগড় পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন সভ্যতার জ্বলন্ত প্রমান।মহাস্থানগড়কে বলা হয় হরপ্পা মহেঞ্জোদারোর সমসাময়িক সভ্যতা। প্রতিদিন রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল ইত্যাদি বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা পর্যটন বিশ্বের ইতিহাস দেখি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার দেশকে ডিজিটাল ও দরিদ্রমুক্ত করার লক্ষ্যে যেভাবে দায়িত্ব পালন করছেন, তা আমাদের আশার আলো দেখায় কিছুটা।

 

 

 

 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে যখন “পর্যটন বর্ষ ২০১৬” ঘোষণা করলেন তখন আমরা মনে করলাম, সরকারের পক্ষে একা সব করা সম্ভব নয় উপোরক্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তা বাস্তবায়নের জন্য আমরা বগুড়া জেলার স্থায়ী, আদর্শবান, শিক্ষিত সুনাগরিকদের পক্ষ থেকে কিছু সদস্যগণ ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ সালে স্থায়ী কমিটি গঠন পূর্বক (বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাব) নামক একটি সংগঠনের আওতায় বগুড়া জেলার পর্যটন শিল্পের প্রচার ও গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবহেলিত প্রত্ন সম্পদ, সম্ভাব্য পর্যটন স্থান খুজে বের করে সেগুলিকে জনগণ এবং সরকারের দৃষ্টিতে আনার জন্য ৬০ সপ্তাহব্যাপী প্রচার ও প্রচারনা কার্যক্রম হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ২রা এপ্রিল ২০১৬ থেকে শুরু করে ইতিমধ্যে ৬০ সপ্তাহ শেষ করেছি। বগুড়া জেলা সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গের ইতিহাস ঐতিহ্য দেশে এবং বিদেশে ফেসবুক, টুইটার, লিংকিন্ড, ট্যুরিস্টলিংক, গুগল, ইউটিউব, অনলাইন টেলিভিশনের মাধমে প্রচার করে চলেছি। আগামী দিনে পর্যটন শিল্পের বিকাশে আমাদের এই প্রচেষ্টা কাজে লাগবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। “বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাব” এর বর্তমান কার্যালয়; আল মদিনা মার্কেট ফুলতলা, বগুড়া। অর্থ সংকটের কারনে আমরা এখন স্থায়ী কার্যালয় নিতে পারিনি। বর্তমানে আমাদের কার্যক্রমের আওতাভুক্ত এলাকা বগুড়া জেলা। আগামী দিনে সমগ্র উত্তরবঙ্গে আমাদের কাজ সম্প্রসারনের চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।

বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাবএর মূলনীতিঃ

শান্তি শৃঙ্খলা, একতা, উন্নয়ন, অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও সমাজকল্যান মূলক পর্যটন শিল্পের প্রচার প্রসার ও উন্নয়ন করা।

বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাবএর লক্ষ উদ্দেশ্যেঃ

(ক) বগুড়া জেলার পর্যটন শিল্প নিয়ে কাজ করা।

(খ) দুনিয়ার মানুষের কাছে বগুড়া জেলার পর্যটন শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরা।

বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাবএর বর্তমান পরিকল্পনাঃ

(ক) গোল টেবিল বৈঠক, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করার মধ্য দিয়ে পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সরকারের সাথে যৌথ ভাবে কাজ করা। ভ্রমনের মাধ্যমে দেশে / বিদেশে বগুড়া জেলাকে তুলে ধরা।

(খ) প্রতি বছর একটা পর্যটন ও ঐতিহ্য মেলা করা।

(গ) জন সাধারনের উন্নতির জন্য হস্তশিল্প, কারিগরী শিল্প, কুটির শিল্প, ইত্যাদি বিষয়ের সাথে পর্যটন কে জুক্ত করে প্রচার করা।

(ঘ) গ্রাম গঞ্জের অবহেলিত পর্যটন স্পট গুলোর গুরুত্ব স্থানীয় জনসাধারনের মাঝে তুলে ধরে সংরক্ষনের চেষ্টা করা।

বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাবএর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ

(ক) সংগঠনের নামে নিজস্ব পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা।

(খ) গোল টেবিল বৈঠক, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করার মধ্য দিয়ে পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সরকারের সাথে যৌথ ভাবে কাজ করা।

(গ) রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মানের সাথে পর্যটন শিল্পকে জুড়ে দিয়ে সভা সেমিনার করা।

আমাদের দীর্ঘ কর্মকান্ডে গত ৭ মাসে বগুড়া জেলার কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, প্রশাসন, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ সহ সাধারন জনগনের ব্যাপক সহযোগিতা পেয়েছি যা আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা আশা করছি বাকী ৪৪ সপ্তাহের কর্মকাণ্ড শেষে বগুড়া জেলার পর্যটন শিল্প সঠিক একটা পরিকল্পনা দেশবাসী এবং সরকারের কাছে তুলে ধরতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি। সেই ৬০ সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠানে বগুড়ায় একটা আন্তর্জাতিক পর্যটন সম্মেলন করার আশা করছি। বগুড়া জেলার জানা অজানা যেসব স্থান গুলো নিয়ে আমরা আমরা কাজ করছি,

প্রায় ১১১ টি ঐতিহ্য, প্রত্নতত্তাতিক, সম্ভাব্য পর্যটন স্পট পর্যটন পণ্যঃ

১। মহাস্থানগড় ২। দধি সাগর ৩। নলডুবি মাজার ৪। বাঁকা দিঘী ৫। মথুরা রাজবাড়ির ধংসাবশেষ ৬। দরগাহাট সুলতানের মাজার ৭। কাহালু জমিদার বাড়ীর নট মন্দির ৮। ঐতিহাসিক যোগীর ভবনের মন্দির ৯। কালু পীরের মাজার ১০। মুরইল জমিদার বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ ১১। পাঁচপীর মাজার ১২। শাল বাহন রাজার প্রাসাদ ১৩। সতীকন্যা সাহেবানীর মাজার ১৪। অচিন গাছ ১৫। পীড়াপাট গোরক্ষনাথ মন্দির ১৬। বাংলাদেশের ক্ষুদ্রতম মসজিদ সান্তাহার ১৭। বগুড়া নবাব বাড়ি প্যালেস মিউজিয়াম ১৮। বাবা আদমের মাজার ও আদমদিঘীর প্রখ্যাত দিঘী ১৯। বাবুর পুকুরের গণকবর ২০। আস্তান শরিফ মাজার ২১। সুলতান বগরা সাহেবের মাজার ২২। শেরপুরের ঐহিত্যবাহী মা-ভবানীর মন্দির ২৩। পঞ্চদশ শতাব্দীর ঐতিহাসিক খেরুয়া মসজিদ ২৪। সিংহের সিমলা জমিদার বাড়ি ২৫। মশমা দিঘী ২৬। জয়পীরের মাজার ২৭। সান্তাহার সাইলো ২৮। দেওতা খানকা হ্ মাজার শরিফ ২৯। এডওয়ার্ড পার্ক ৩০। কালীদহ সাগর ৩১। বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকীর জন্ম ভিটা ৩২। হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর মাজার শরীফ ৩৩। রানী ভবানির বাবার বাড়ি ৩৪। আকবর ই ইলাহি এবাদত খানা ৩৫। হরিনা জমিদার বাড়ি ৩৬। মসলা গবেষণা কেন্দ্র, শিবগঞ্জ ৩৭। ঐতিহাসিক সাতমাথা ৩৮। ফুলবাড়িয়া বধ্যভূমি ৩৯। বেহুলার বাসর ঘর (গোকুল মেধ) ৪০। জিউৎকুন্ড ৪১। শীলাদেবীর ঘাট ৪২। ভিমের জাংগাল ৪৩। ভাসু বিহার বা খুরনার ধাপ ৪৪। করতোয়া তট ৪৫। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ৪৬। গুনাহার জমিদার বাড়ি ৪৭। ঊডবাণ পাবলিক লাইব্রেরী ৪৮। নিলকুটি শেরপুর ৪৯। গাবতলি ফকির বাড়ি ও মসজিদ ৫০। জৈন মন্দির ( গালাপট্টি ) ৫১। সনাতন মন্দির ৫২। বগুড়া বাইতুল মামুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ (উত্তরবঙ্গের ভিতর বড় মসজিদ ) ৫৩। অন্ধ পুকুর ৫৪। শাহ ফতেহ আলী মাজার ৫৫। মোহাম্মাদ আলী হাসপাতাল ৫৬।সরকারী আজিজুল হক কলেজ ৫৭। সুখানপুর হাইস্কুল ৫৮। বগুড়া লালন একাডেমী ৫৯। পল্লীউন্নয়ন একাডেমী বগুড়া ৬০। মজিবুর রাহমান মহিলা কলেজ ৬১। করনেশন স্কুল বগুড়া ৬২। শেরপুর ডিজে হাই স্কুল ৬৩। পুন্ড্র বিশ্ববিদ্যালয় ৬৪। জিলা এন্ড ভিএম স্কুল ৬৫। সাউদিয়া সিটি পার্ক ৬৬। প্রেম যমুনার ঘাট ৬৭। মহাস্থানের কটকটি ৬৮। সোনাকানিয়া গুড়াভাঙ্গা নদীর পাড় (তেমাথা) ৬৯। হোটেল নাজ গার্ডেন ৭০। ইছামতি নদির চর ৭১। শখের পল্লী সান্তাহার ৭২। বাঙ্গালী নদির মোহনা বিলচাপড়ি ৭৩। ওয়ন্ডারলান্ড পার্ক বগুড়া ৭৪। স্ট্রবেরি বাগান ৭৫। কেল্লাপুশির মেলা শেরপুর ৭৬। চুন্নুর চাপ ৭৭। শহীদ জিয়া রহমান মেডিকেল কলেজ ৭৮। সারিয়াকান্দির পানি বন্দর ৭৯। শিমুলবাড়ী গোয়েন বাধ ও ভান্ডারবাড়ী সুটিং পার্ক ৮০। সদ্য নির্মিত মোকামতলা ঈদগাহ মাঠ ৮১। বগুড়া মাঝিড়া ক্যান্টনমেন্ট ৮২। পিলুর পেয়ারা বাগান (উত্তর বঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বড়) ৮৩। বগুড়ার মরিচ ৮৪। বগুড়ার দই ৮৫। উত্তরবঙ্গের প্রথম সিলভার কারখানা (দুপচাচিয়া) ৮৬। কাঁকড়ার বিল ৮৭। ডেমাজানি টিয়া পাখির আশ্রম ৮৮। সোনাই তলীর বিল ৮৯। বাইসা বিল ৯০। শহিদ চান্দু ষ্টেডিয়াম ৯১। পোড়াদহ মাছের মেলা ৯২। সান্তাহার রেল জংশন ৯৩। বগুড়া রেল ষ্টেশন ৯৪। টুটুল প্যাঁলেস (বায়বহুল এবং বড় বাড়ি) ৯৫। জামিল মাদ্রাসা (উত্তরবঙ্গের ভিতর বড় মাদ্রাসা ) ৯৬। দেবডাঙ্গা ফিস পাস ৯৭। বলিহার রাজকাচারি বাড়ি ( ডেমাজানি- শাজাহানপুর ) ৯৮। থমসন হল বগুড়া ৯৯। ধুনট নিল কুঠি ১০০। মাদলা জমিদার বাড়ি ১১১। বগুড়া ইয়ুথ কয়্যার ১০২। বাগবাড়ি ( জিয়াউর রহমানের বাড়ি) ১০৩। শেরশাহের সৈন্য বাহিনীর আস্থাবল ১০৪। মহিষাবান ( জিয়ার দাদার বাড়ি ) ১০৫। বামুনিয়া কুমার পল্লী (গাবতলি) ১০৬। শাওয়াল তাতপল্লী ( আদমদীঘি) ১০৭। গুনাহার জমিদার বাড়ি ( দুপচাচিয়া) ১০৮। গান্ধী ভিটা ( দুপচাচিয়া) ১০৯। খোলাশ খেলনা শিল্প (দুপচাচিয়া) ১১০। গোবিন্দ মন্দির (দুপচাচিয়া) ১১১। রামকৃষ্ণ মিশন বগুড়া।

ইতিমধ্যেই আমরা বেশকিছু স্কুল/কলেজ সহ থানা শহর গুলোতে যোগাযোগ গড়ে তুলেছি। বগুড়া জেলায় প্রায় ১৫ টা আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করে এবং তাঁতশিল্প সহ হস্তশিল্পের বেশ কিছু কারিগর বাস করে “বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাব” সেই সব মানুষদের মাধ্যমে কমিউনিটি বেইজ ট্যুরিজ্‌ম উন্নয়নের চেষ্টা তরুন প্রজন্মকে দিয়ে। কারন আমরা মনে করি পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সব থেকে বড় কথা হল বগুড়া জেলার মানুষের অতিথিওতা আমাদের বড় সম্পদ।

.

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335