শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৪ অপরাহ্ন

হেনড্রিকস ঝড়ে সহজেই জিতলো দক্ষিণ আফ্রিকা

আগ্রাসী ফিফটিতে ভারতকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিলেন সূর্যকুমার যাদব ও রিংকু সিং। তবে এই দুজন আড়ালে পড়ে গেলেন রিজা হেনড্রিকসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। ভারতকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা।

বৃষ্টি বিঘ্নিত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) ডাকওয়ার্থ লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ৫ উইকেটে। গেবেখার সেন্ট জর্জেস পার্কে ভারত ১৯.৩ ওভারে ১৮০ রান করার পর নামে বৃষ্টি। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫ ওভারে ১৫২। ৭ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল প্রোটিয়ারা। ডারবানে প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল।

২৭ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলে ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার নায়ক হেনড্রিকস। এই ওপেনারের ইনিংস গড়া ৮ চার ও এক ছক্কায়। তবে ৪ ওভারে স্রেফ ১৮ রান দিয়ে সুরিয়াকুমারের উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার তাবরেজ শামসি।

 

বৃষ্টির কারণে দিনের বেশিরভাগ সময় কাভারে ঢাকা ছিল উইকেট। মেঘলা আকাশের নিচে টস জিতে বোলিং নিতে ভাবতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এইডেন মার্করামকে। তার সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করেন নতুন বলের দুই বোলার মার্কো ইয়ানসেন ও লিজাড উইলিয়ামস।

প্রথম দুই ওভারে বিদায় নেন ভারতের দুই ওপেনার ইয়াশাসবি জয়সওয়াল ও শুবমান গিল। দুজনের কেউ খুলতে পারেননি রানের খাতা। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শূন্য রানে ফিরলেন ভারতের দুই ওপেনার। ২০১৬ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই তেতো অভিজ্ঞতা হয়েছিল রোহিত শার্মা ও আজিঙ্কা রাহানের।

জোড়া ধাক্কা সামলে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ভারতকে এগিয়ে নেন তিলাক ভার্মা ও সূর্যকুমার। শূন্য রানে জীবন পাওয়া তিলাক থামেন ২০ বলে ২৯ রান করে। তার আগেই টি-টোয়েন্টিতে বলের হিসাবে দ্রুততম ২ হাজার রান পূর্ণ করেন সূর্যকুমার। মাইলফলক ছুঁতে তার লাগল ১ হাজার ১৬৪ বল। আগের রেকর্ডধারী অ্যারন ফিঞ্চের লেগেছিল ১ হাজার ২৮৩ বল।

টানা দ্বিতীয় সিরিজে ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া সূর্যকুমার ফিফটি করেন ২৯ বলে। খানিক পরই থামে তার ৩৬ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় গড়া ৫৬ রানের ইনিংস। রিংকুর সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৪৮ বলে ৭০ রান।
রিংকু পরে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করেন ৩০ বলে। শেষ ওভারে জেরল্ড কুটসিয়ার পরপর দুই বলে রবীন্দ্র জাদেজা ও আর্শদিপ সিংয়ের বিদায়ের পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। হ্যাটট্রিকের সুযোগ তাই আর পাননি কুটসিয়া। ৩৯ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন রিংকু।

লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম দুই ওভারেই ৩৮ রান তুলে ফেলেন ম্যাথিউ ব্রিটজকি ও হেনড্রিকস। পরের ওভারে দ্বিতীয় রানের চেষ্টায় সঙ্গীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন ব্রিটজকি (৭ বলে ১৬)। দ্বিতীয় উইকেটে মার্করামের সঙ্গে ৩০ বলে ৫৪ রানের আরেকটি বিস্ফোরক জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন হেনড্রিকস। দুজনই অবশ্য বিদায় নেন পরপর দুই ওভারে। মার্করাম বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৭ বলে ৩০ রান করে। হেনড্রিকসের ইনিংসও শেষ হয় ক্যাচ দিয়ে। হাইনরিখ ক্লসেনও দ্রুত বিদায় নিলে খানিকটা আশা জাগে ভারত শিবিরে।

সফরকারীদের সেই আশা মাড়িয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের কাছে নিয়ে যান ট্রিস্টান স্টাবস ও ডেভিড মিলার। জয় থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে মিলার ফিরলেও আন্দিলে ফেলুকোয়াইয়োর সঙ্গে বাকিটা সারেন স্টাবস। জাদেজাকে ছক্কায় ম্যাচের ইতি টানেন ফেলুকোয়াইয়ো। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) জোহাসেনবার্গে হবে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ১৯.৩ ওভারে ১৮০/৭ (জয়সওয়াল ০, গিল ০, তিলা ২৯, সুরিয়াকুমার ৫৬, রিংকু ৬৮*, জিতেশ ১, জাদেজা ১৯, আর্শদিপ ০; ইয়ানসেন ৩-০-৩৯-১, উইলিয়ামস ৩-০-৩২-১, কুটসিয়া ৩.৩-০-৩২-৩, ফেলুকোয়াইয়ো ৩-০-২৯-০, শামসি ৪-০-১৮-১, মার্করাম ৩-০-২৯-১)

দক্ষিণ আফ্রিকা: (লক্ষ্য ১৫ ওভারে ১৫২) ১৩.৫ ওভারে ১৫৪/৫ (ব্রিটজকি ১৬, হেনড্রিকস ৪৯, মার্করাম ৩০, ক্লসেন ৭, মিলার ১৭, স্টাবস ১৪*, ফেলুকোয়াইয়ো ১০*; সিরাজ ৩-০-২৭-১, আর্শদিপ ২-০-৩১-০, জাদেজা ২.৫-০-২৮-০, মুকেশ ৩-০-৩৪-২, কুলদিপ ৩-০-২৬-১)

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা

ম্যান অব দা ম্যাচ: তাবরেজ শামসি ()

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335