শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৬ অপরাহ্ন

সিলেটের ঐতিহ্য আম-কাঁঠালিতে জমেছে ফলের হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক: জমে উঠেছে মৌলভীবাজারের ফলের হাট। ফলের গন্ধে ম-ম করছে কোর্ট মার্কেট। প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে রাস্তার পাশে বসে এ ফলের হাট। শহরের কোর্ট এলাকায় প্রতিদিন এই হাটে আম, কাঁঠাল ও আনারসসহ নানা জাতের রসালো ফল বিক্রি হয়। মৌলভীবাজার শহর ও শহরতলির লোকজন এখান থেকে ফল কিনে সিলেটের প্রথা অনুযায়ী মেয়ের বাড়ি ‘আম-কাঁঠালি’ উপঢৌকন পাঠিয়ে থাকেন।

ফল ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকার বেচকেনা হয় এই বাজারে। জেলার কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল উপজেলার পাহাড়ি এলাকা থেকে পাইকাররা কাঁঠাল ও আনারস এখানে সরবরাহ করেন।

ব্যবসায়ী ইয়াওর মিয়া কাঁঠালের স্তূপ নিয়ে বসে আছেন। কথা হলে তিনি জাগো নিউজকে জানান, আজ ১৫ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছেন। আশা করছেন, রাত পর্যন্ত আরও ১০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করবেন। প্রতি মৌসুমে তিনি কাঁঠাল বিক্রি করে অনেক লাভ করেন।

কথা বলার এক পর্যায়ে পাশের ব্যবসায়ী খেলন মিয়া ও মান্নান মিয়া এগিয়ে আসেন। তারা বলেন, ৫০ বছর ধরে এই কোর্ট মার্কেট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা ২০-২৫ বছর ধরে ফলের ব্যবসা করি। আমরা পাহাড়ি এলাকা থেকে কম দামে সংগ্রহ করি। বিভিন্ন সাইজের কাঁঠাল রাখতে হয়। ক্রেতা বুঝে বিক্রি করি। বোনের বাড়ি, মেয়ের বাড়ি আম-কাঁঠালি দিতে গিয়ে অনেকে একসঙ্গে ৫০-৬০ পিসও কিনে নেন।

কোট মার্কেটের আনারস ব্যবসায়ী ফজলু খান বলেন, খুচরা প্রতি হালি আনারস ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি করি। কোনো ক্রেতা একসঙ্গে ২০০ পিস কিনলে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করি।

তিনি বলেন, আমি পেশায় গাড়িচালক কিন্তু ফলের মৌসুমে বেশি লাভের আশায় ফল বিক্রি করি। জৈষ্ঠ্য-আষাঢ় দুই মাস ফল বিক্রি করে বাড়তি আয় করি। যা দিয়ে সংসারের অন্যান্য খরচপাতি চলে।

বোনের বাড়ি আম-কাঁঠালি পাঠাতে ফলের হাটে এসেছেন রুহিন মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের সিলেটের ঐতিহ্য মেয়ে ও বোনদের বাড়িতে ফলের মৌসুমে আম-কাঁঠালি পাঠানো। এই প্রথা এখনো রয়েছে। তাই ২০ হাজার টাকা বাজেট নিয়ে এসেছি ৬০টি কাঁঠাল, ২০০ আনারস, আম, জাম ও খৈ কিনবো বলে। বোনের বাড়ি কুলাউড়ায়, নিয়ে যাবো, বোন খুশি হবে। তার শ্বাশুরবাড়ির লোকজনও খুশি হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, মৌলভীবাজারে ২২৮ হেক্টর ভূমিতে ৪১ হাজার টন কাঁঠাল উৎপাদন হয়েছে। শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি টিলায় ১ হাজার ২১০ হেক্টর ভূমিতে আনারস চাষ হয়েছে। তবে খরার কারণে এবার ফলের আকার ছোট।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335