বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৪ অপরাহ্ন

খুলনা-মোংলা রেলপথ: ১১ বছর মেয়াদসহ ব্যয় বেড়ে ৪২৬০ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: একে একে পাঁচবারের মতো সময় ও ব্যয় বেড়েছে খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে। নানা কারণে বাংলাদেশ রেলওয়ে ‘খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের মেয়াদ পাঁচবার বৃদ্ধি করেছে। মূল অনুমোদিত প্রকল্পের ব্যয় ছিল এক হাজার ৭২১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বৃদ্ধি হয়ে দাঁড়ায় তিন হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ২৬০ কোটি ৮৯ কোটি টাকা।

মূল অনুমোদিত প্রকল্পের কাজ ডিসেম্বর ২০১০ থেকে ডিসেম্বর ২০১৩ নাগাদ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। অথচ বারবার মেয়াদ বৃদ্ধি করে তা ২০২৪ সাল নাগাদ করা হয়েছে।

প্রকল্প এলাকা: খুলনা জেলার ফুলতলা, দৌলতপুর, ডুমুরিয়া, বটিয়াঘাটা এবং বাগেরহাট জেলার বাগেরহাট সদর ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা উপজেলা।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার (৮৫ দশমিক ২৭৭ কি.মি. লুপ লাইনসহ) ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ, মোংলা সমুদ্রবন্দরকে বিদ্যমান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা, রেলযোগে আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মোংলা সমুদ্রবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বৃদ্ধি।

এছাড়া মোংলা থেকে তেলবাহী ওয়াগন সারাদেশে চলাচলের ব্যবস্থা করা, দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদন বৃদ্ধি করা, খুলনা শহরে সড়ক যানজট হ্রাস, পর্যটকদের মোংলা বন্দর পর্যন্ত নিরাপদ ও আরামদায়ক রেলওয়ে পরিবহন সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করার সুবিধা প্রদান এবং রেলওয়ের মোডাল শেয়ার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের আয় বাড়ানো।

প্রধান কার্যক্রম: ৭৭৬ দশমিক ৬৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ, এমব্যাংকমেন্টসহ রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ, রূপসা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ, মেজর ও মাইনর ব্রিজসহ অন্যান্য স্থাপনা, মোংলা পোর্টে ২৫ মিটার ক্রস ড্রেন নির্মাণ। আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ ২০০ মিটার ও লেভেলক্রসিং গেইটসমূহ নির্মাণের প্রয়োজনে ৯০০ মিটার ইউ-লুপ নির্মাণ ইত্যাদি।

প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির কারণ: প্রকল্প এলাকার মাটির গুণাগুণ নিম্নমানের হওয়ায় নতুনভাবে ডিজাইন রি-ভিউ করে বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে প্রকল্পের কাজ নির্বাহ করতে হয়েছে এবং এর ফলে কাজের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি সাধন সম্ভব হয়নি। বর্তমান কাজের অগ্রগতি অব্যাহত রাখা সম্ভব হলেও এখনো এ কাজের ভেরিয়েশন চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। নির্মাণকাজ সমাপ্তির ২৮ দিন পর থেকে এপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট ফিলিং কাজ আরম্ভ করা যাবে। অনুমোদিত ডিজাইন সেটেলমেন্টের চেয়ে বাস্তবে অধিক সেটেলমেন্ট পরিলক্ষিত হওয়ায় পরামর্শক, ঠিকাদার এবং প্রকল্প প্রতিনিধি কর্তৃক নিয়মিত ক্লোজ মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। ফলে অধিক সময়ের প্রয়োজন হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকে প্রকল্পের জন্য কিছু পরিমাণ অধিগ্রহণকৃত ভূমি হস্তান্তর পাওয়া গিয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে। দ্বিগরাজ স্টেশন এপ্রোচ রোডের ভূমি এখনো অধিগ্রহণ সম্ভব হয়নি। ভূমি অধিগ্রহণ বিলম্ব হওয়ায় কাজ শুরু করতে যেমন বিলম্ব হয়েছে, তেমনই অধিগ্রহণ সমাপ্ত না হওয়ায় নির্মাণকাজ সমাপ্ত করতেও বর্তমানে সমস্যা হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশনের মতামত: প্রকল্পটির সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫০ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের মাধ্যমে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে বিদ্যমান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে রেলযোগে আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনও হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335