শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪২ অপরাহ্ন

বিসিএস নন-ক্যাডার নিয়োগে আসছে পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিসিএস পরীক্ষায় নন-ক্যাডার নিয়োগে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ পদে নিয়োগের জন্য আগে আসলে আগে পাবে এ নীতি থেকে সরে এসে পদ নির্বাচনের সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। আবেদনের সময় প্রার্থীরা পদ নির্বাচন করতে পারবেন। মেধাতালিকা অনুযায়ী নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।

তবে চলমান ৪১তম থেকে ৪৪তম বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে ওয়েভার (ছাড়) দেওয়া হবে। শিগগির নন-ক্যাডার নিয়োগের বিধিমালা প্রকাশ করা হতে পারে বলে পিএসসি সূত্রে জানা গেছে।

পিএসসি থেকে জানা যায়, গত কয়েকটি বিসিএসে মেধার ভিত্তিতে ক্যাডার পদে নিয়োগের পর উত্তীর্ণ বাকি প্রার্থীদের নন-ক্যাডার হিসেবে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হচ্ছিল। এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে তাদের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শূন্যপদের সংখ্যা কত তা পিএসসিতে পাঠানোর অনুরোধ করা হতো। সেখান থেকে পাঠানো পদের চাহিদা অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। নতুন আরেকটি বিসিএসের ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত শূন্যপদের চাহিদা এলে পিএসসি থেকে অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে যোগ্যদের নিয়োগের সুপারিশ করা হতো।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে নতুন বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাডার পদের পাশাপাশি নন-ক্যাডার পদের সংখ্যাও উল্লেখ থাকবে। চলমান ৪০, ৪১, ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের ক্ষেত্রে কোন বিসিএসের সময় কোন শূন্যপদের চাহিদা এসেছে, তা পর্যালোচনা করে মেধারভিত্তিতে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।

শুধু তাই নয়, আগে ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করার পর নন-ক্যাডারে পাস করা প্রার্থীদের মধ্যে আগে আসলে শূন্য থাকা যেকোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য পচ্ছন্দ করতে পারতো। এতে মেধা তালিকায় এগিয়ে থাকলেও পরে আসার কারণে চয়েজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতো। বর্তমানে এমন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিধিমালা সংশোধনে একটি খসড়া তৈরি করে গত জানুয়ারি মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে পিএসসি। চলতি মাসে সেটি প্রকাশ করার কথা রয়েছে।

জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন  বলেন, নন-ক্যাডার নিয়োগে আগের চাইতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ক্যাডারের মতো নন-ক্যাডার পদে আবেদনের সময় চয়েজ দিতে হবে। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধা তালিকা অনুযায়ী তাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে।

তিনি বলেন, ৪৫ থেকে নন-ক্যাডার পদ সংখ্যা উল্লেখ করে নিয়োগ সুপারিশ করা হবে। তবে ৪১ থেকে ৪৪ নন-ক্যাডারে পদ সংখ্যা উল্লেখ করে নিয়োগ দিতে ওয়েভার দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে এসব বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলের পর যে সব নন-ক্যাডারের পদ পাওয়া যাবে সেসব পদে ওয়েভার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।

পিএসসি’র ক্যাডার শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা  বলেন, ৪১তম বিসিএসে নন-ক্যাডার পদ আগের চাইতে বাড়ানো হচ্ছে। আগে এ পদে নিয়োগের জন্য আইন অনুসরণ না করায় যতগুলো শূন্যপদ পাওয়া যেত সেসব পদে নিয়োগ দেওয়া হতো। সে কারণে কোনো কোনো বিসিএসে নন-ক্যাডার নিয়োগে কম বেশি হতো। নতুন বিধিমালা কার্যকর করা হলে ক্যাডার পদের মতো নন-ক্যাডার নিয়োগ হবে। ৪৬তম বিসিএস থেকে এক বছরের মধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

তিনি বলেন, বিধিমালা কার্যকর হওয়ার পর ৪০তম থেকে ৪৪তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্যে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের কাছে নতুন করে নবম, দশম ও ১১ গ্রেডে নিয়োগের জন্য আবেদন নেওয়া হবে। তাদের মধ্যে যারা বেশি নম্বর পাবে তাদের ভালো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে।

এ বিষয়ে পিএসসি’র চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেন, বর্তমানে ৪১, ৪২, ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএস পরীক্ষা চলমান। এর মধ্যে ৪৫তম বিসিএস শুরু হতে যাচ্ছে। ৪৬তম বিসিএস থেকে এক বছরের মধ্যে তিন ধাপের পরীক্ষা শেষ করে ফলাফল দেওয়া হবে। এখন থেকে ৪৬তম বিসিএসের প্রশ্ন মডারেটরের কাজ শুরু হয়েছে। যে প্রশ্ন পরীক্ষা শুরুর এক মাস আগে প্রণয়ন ও মডারেশনের কাজ হয়ে সেটি এক বছর আগে শুরু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ডিসেম্বর মাসে দেওয়া হয়। এক বছরের মধ্যে এ পরীক্ষা শেষ করতে পরবর্তী বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ১ জানুয়ারি প্রকাশ করা হবে। সেই ক্ষেত্রে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কেউ উত্তীর্ণ হলেও তাদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তির মধ্যেও অনেক পরিবর্তন আনা হবে। নন-ক্যাডার নিয়োগে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। মূলত ক্যাডার এবং নন-ক্যাডর পদে একই পদ্ধতি অনুসরণ করে নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335