শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৭ অপরাহ্ন

সজনে সচ্ছলতার স্বপ্ন চাষিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: খুলনায় সজনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। বৈরী আবহাওয়া না থাকলে ভালো লাভের আশা করছেন তারা।

জেলার বটিয়াঘাটা, দাকোপ, ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকাঘুরে দেখা যায়, রাস্তার পাশে ও বাড়িতে থাকা সজনে গাছগুলোতে ব্যাপক হারে ফুল ফুটেছে। কিছু গাছে সজনেও ধরেছে। সপ্তাহখানের মধ্যে সেটি বাজারে চলে আসবে।

বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়নের বাসিন্দা ইমরান হোসেন জানান, তার বাড়িতে ১৯-২০টা সজনে গাছ রয়েছে। প্রতি বছর এ গাছের সংখ্যা বাড়ানো হয়। এক একটা গাছ থেকে বছরে একবারই ফলন পাওয়া যায়। গত বছর ১৯টি গাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার সজনে বিক্রি করেছিলেন তিনি।

তিনি জানান, এবার গতবারের চেয়ে সজনে গাছে ফলন ভালো। গত বছর এ সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আগে থেকে ফুল ঝরে গেছে। যা ছিলো তাই দিয়েই ৫০ হাজার টাকার বেশি সজনে বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। ইতোমধ্যে ফড়িয়াররা (পাইকার) আনাগোনা শুরু হয়েছে। দরদামও চলছে। তবে সজনে কেবল ফুল থেকে বের হচ্ছে। আরও একটু বড় না হলে বিক্রি করা যাবে না। এবার তিনি ৭০-৮০ হাজার টাকার সজনে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের মৎস্যজীবী কাজী হুমায়ুন কবীর বলেন, তার ঘেরের আইলে ৪০-৫০ টা সজনে গাছ রয়েছে। সবগাছে ফুল এসেছে। কিছুকিছু গাছে সজনেও ধরেছে। ঘেরের আইলের এ সজনে গাছ থেকে এবার ভালো ফলন আশা করছেন।

তিনি বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলার অধিকাংশ ঘেরের আইলে নানা সবজির চাষ হয়। কিন্তু তাতে অনেক খরচ ও পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু সজনে গাছে কোনো খরচ নেই। সজনে হয়ে যাবার পর ডাল কেটে তা কয়েকদিন শুকিয়ে আবার লাগিয়ে দেওয়া যায়। তাতে পরের বছর ফলন আসে।

একই উপজেলার চুকনগর এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, সবজি চাষ করে লাভ করা গেলেও সজনে গাছে কোনো পরিশ্রম আর ব্যয় করা লাগে না। তাই এখন অনেক ঘেরের আইলে ও বাড়ির আশপাশের পতিত জমিতে সজনে গাছের চারা লাগিয়ে ফলন পেয়েছেন। বিশেষ করে এই উপজেলায় ১২ মাসি সজনে গাছের নার্সারি আছে। সেখান থেকে চারা সংগ্রহ করে সেটি দিয়ে অনেকে সজনে বাগানও গড়ে তুলেছেন। খাওয়া আর ঔষধি গুণের কারণে সজনে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয় একটি সবজি। যা বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে।

বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, সজনে একদিকে অর্থকরী ফসল অন্যদিকে পুষ্টির আধার। তবে এ সজনের ব্যাপারে কৃষিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের কোনো সহায়তা বা পরামর্শ দেওয়া হয় না। কৃষকরা নিজের উদ্যোগে সজনে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, শুধু সজনের ডাটাই নয়, সজনের পাতাও শাক হিসেবে খাওয়া যায়। সজনে ডাটায় রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স। এতে রয়েছে ফোলেট, ভিটামিন বি-৬, থায়ামিন, রিভোফ্লাভিন, প্যানটোথেনিক এসিড এবং নিয়াসিন। এগুলো শর্করা, প্রোটিন এবং চর্বি হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও প্রচুর ক্যালসিয়াম, লৌহ, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, সেলেনিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়। সে কারণে এ সময়ে বেশি বেশি সজনে খাওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335