মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৩১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: অভিজাত এলাকায় পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বারিধারা এলাকায় পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে, খালে বা লেকে দেওয়া বন্ধ করতে অভিযানে গিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।
অভিযানের অংশ হিসেবে বারিধারা ১১ নম্বর সড়কের চারটি বাড়ির সামনে ড্রেনে কলাগাছ দিয়ে সারফেস ড্রেন থেকে পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাড়ির মালিকরা অনতিবিলম্বে নিজ থেকে এসব সংযোগ বন্ধ না করলে স্থায়ীভাবে বন্ধ করারও হুঁশিয়ারি দেন ডিএনসিসি মেয়র।
এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, দেশের সবচেয়ে অভিজাত এলাকা হিসেবে খ্যাত বারিধারার ৫৫০টি বাড়ির মধ্যে ৩৪২ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়েছে। সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী বেঁধে দেওয়া আট স্তরের ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে বারিধারা এলাকার মাত্র পাঁচটি বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও ২০৩টি বাড়ি আটটি শর্তের মধ্যে কিছু শর্ত পূরণ করেছে। অন্যদিকে একদমই শর্ত পূরণ করেনি ৩৪২টি বাড়ি, যাদের পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, একটি অভিজাত এলাকায় যদি এমন চিত্র আমাদের দেখতে হয় তাহলে আর কী করার? অভিজাত এলাকায় পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ খুবই দুঃখজনক। বারবার বলছি সিটি করপোরেশনের স্যুয়ারেজ লাইনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ দেওয়া যাবে না। ওয়াসার পৃথক লাইনে এসব বাড়ির বর্জ্য যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি নেই। যেখানে ওয়াসার লাইন নেই সেখানে নিজস্ব ব্যবস্থায় ইটিপি প্ল্যান্ট বসিয়ে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আজ আমরা দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান পরিচালনা করেছি। পরে বনানী ও নিকেতন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এর আগে গত ৪ জানুয়ারি গুলশান-২ এর ১০৪ ও ১১২ নম্বর সড়ক এলাকায় পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধে ডিএনসিসি প্রথমবার অভিযান পরিচালনা করে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, কোনোভাবেই পয়োবর্জ্য বা ব্ল্যাক ওয়াটার সিটি করপোরেশনের ড্রেন, খাল বা লেকে ঢুকতে পারবে না। অনেক আগে থেকেই এ বিষয়ে তাদের জানিয়ে আসছি, সচেতন করে আসছি। গণবিজ্ঞপ্তিও দিয়েছি, কিন্তু তারা কথা শোনেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা অভিযান শুরু করলাম। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে, এখানে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। বাসার সামনে গিয়ে ড্রেনগুলো আমরা কলাগাছ দিয়ে বন্ধ করে দিচ্ছি।
তিনি বলেন, গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতন এলাকায় তিন হাজার ৮৩০টি বাড়িতে জরিপ করা হয়। এসব বাড়ির মধ্যে তিন হাজার ২৬৫টি বাড়ির পয়োবর্জ্য সরাসরি সারফেস ড্রেন ও লেকে পড়েছে। মাত্র ৪১টি বাড়িতে পয়োবর্জ্যের সংযোগ সঠিকভাবে দেওয়া আছে এবং ৫২৪টি বাড়িতে আংশিকভাবে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। ফলে লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে ও মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পয়োবর্জ্যের কারণে লেকের পানি দূষিত হয়ে গেছে উল্লেখ করে মেয়র আতিক বলেন, লেকে মাছ চাষ করা যাচ্ছে না। মশা নিধনে ন্যাচারাল সলিউশন সম্ভব হচ্ছে না মাছ চাষ করতে না পারার কারণে। আমরা ড্রেন ও খাল আর দূষিত হতে দেবো না।