শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১২:৫০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই ইউনিয়নের বাদশা মাঝির টিলার বাসিন্দা ইসমাইল মিয়া। রোববার বন থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক অজ্ঞাত বস্তু কুড়িয়ে পান তিনি। সন্ধ্যা ৬টার দিকে সেই বস্তু রান্নাঘরের পাশে রেখে চা খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইসমাইল ও তার পরিবার। হঠাৎ সেটি বিস্ফোরণে বিকট শব্দে কম্পিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
এ সময় বিস্ফোরণে ইসমাইলের হাতের কব্জি উড়ে যায়। শরীর ঝলসে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পাশে থাকা তার ছেলে রিফাতও মুখমণ্ডল ঝলসে মারা যায়। স্ত্রী সখিনা বেগম গুরুতর আহত হন। এখন তিনি চট্টগ্রাম হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
এদিকে বিস্ফোরণের কিছু সময় আগে পাশের এক বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায় ইসমাইলের দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে ইসরাত জাহান ফারিয়া (৮)। তাই ভাগ্যক্রমে সে প্রাণে বেঁচে যায়। এখন ছোট ফপু পারভিন আক্তার তার দেখাশোনা করছেন। তবে বাবা-মা-ভাইকে খুঁজে বেড়াচ্ছে ফরিয়া। তিন দিন ধরে মায়ের কাছে যেতে কান্না করছে।
ফারিয়ার ফুপু পারভিন আক্তার বলেন, মেয়েটা এখন আমার সঙ্গেই আছে। সে কারও সাথে কথা বলছে না। তার মা এখনো চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি। মেয়েটা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। কিছু সময় পর পর কান্না করছে। সে তার মাকে খুঁজছে।
ফারিয়ার দাদা আশাদ উল্লাহ বলেন, আমার ছেলে আর নাতি দুনিয়া থেকে চলে গেছে। কী যে হয়ে গেলো কিছুই তো বুঝে উঠতে পারছি না। ফারিয়ার মা হাসপাতালে আছে আল্লাহ তারে যেন ফিরিয়ে দেয়। ছোট্ট মেয়েটার মা ছাড়া তো কেউ নাই। ফারিয়াও চুপচাপ হয়ে গেছে। তার বাবা ভাইকে খুঁজে। মায়ের কাছে যেতে চায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন বলেন, বিস্ফোরণে নিহত ইসমাইলের ডান হাতের কব্জি উড়ে গেছে এবং পেট ঝলসে গেছে। ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিস্ফোরিত বস্তু উদ্ধার করে কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গেছে।
এদিকে বাবা ও ছেলের লাশ সুরতহাল শেষে গত সোমবার বিকাল ৫টায় বাদশা মাঝির টিলায় দাফন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওশন আরা রব বলেন, কীভাবে বিস্ফোরণ হয়েছে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। আমাদের তদন্ত চলছে। তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।