শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১২:০২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় বেড়েছে বন্যহাতির তাণ্ডব। হাতির আক্রমণে কৃষকরা যেমন ক্ষতির মুখে পড়ছে তেমনি জনজীবন নিয়ে আতঙ্কে আছে এলাকাবাসী।
বিশেষ করে দুইদিনে হাতির তাণ্ডবে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি গ্রামের ভুট্টা, সরিষা ক্ষেত, পানি সেচের শ্যালো ইঞ্জিনসহ বসতবাড়ি নষ্ট হচ্ছে। ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছে কৃষকরা।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা জানান, রাত গভীর হলে ভারতীয় বন্যহাতি চলে আসে লোকালয়ে। সীমান্তের পাশে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করে বীজতলা, ভুট্টা ক্ষেত, ঘরবাড়ির উপর তাণ্ডব চালিয়ে ভারতীয় সীমান্তে ফিরে যাচ্ছে। এতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিয়া পাড়া, পূর্ব জালছিড়া পাড়া ও বালিয়ামারী সীমান্তে গত তিনরাত ধরে হাতির তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
জালছিড়া পাড়া গ্রামের আমান উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে আন্তর্জাতিক পিলার ১০৭২ এর দক্ষিণ দিকে বর্ডার হাটের পাশ দিয়ে ৩০/৩৫ টি হাতি ভারতের কালাইয়ের চর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বালিয়ামারী বেপারী পাড়া গ্রামের সামনে দিয়ে ঢুকে মিয়া পাড়া ও জালছিড়া পাড়া সীমান্তের প্রায় পাঁচ একর জমির ভুট্টা, সরিষা ও গমের জমি লণ্ডভণ্ড করে দেয়। একই সঙ্গে তিনটি শ্যালোমেশিন দুমরে মুচড়ে দিয়েছে।
বালিয়ামারী গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ দেওয়ানী বলেন, হাতির পাল আমার সরিষার জমি এবং শ্যালোমেশিনসহ অন্তত পাঁচটি শ্যালোমেশিন ভাঙচুর করেছে। এছাড়া আমার জমির আশেপাশের প্রায় ৫ বিঘা জমির ভুট্টা, সরিষা, ধানের বীজতলা, সবজি বাগান ও গমের ক্ষেত পদদলিত করে ক্ষতি সাধন করেছে।
রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর ইসলাম বলেন, তিনদিন ধরে রাতের বেলা ভারতীয় সীমান্ত থেকে হাতির পাল বাংলাদেশে এসে ফসল ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি করছে। হাতির তাণ্ডবের ভয়ে মানুষ আতঙ্কে আছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরন মো. ইলিয়াস বলেন, ভারতীয় হাতির পাল বাংলাদেশের কৃষকদের অনেক ফসলের ক্ষতি করেছে। সেচযন্ত্র ভেঙে ফেলেছে। আমি বালিয়ামারী বিজিবি কোম্পানি কমান্ডারকে বিষয়টি জানিয়েছি। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।
রাজিবপুর বন কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, তিনদিন ধরে হাতির উপদ্রব শুরু হয়েছে। আমি ওই গ্রামগুলোতে গিয়ে মানুষদের সচেতন করতে হাতি আসার সময় আগুনের কুণ্ডলী জ্বালানোসহ নানান পরামর্শ দিয়ে এসেছি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হবে।