বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন

টাকা ছাড়াই খাবার মেলে ‘আম জনতার হোটেলে’

নিজস্ব প্রতিবেদক: পেটপুরে ভালো খাবার খাওয়া কিছু মানুষের স্বপ্ন। খেয়ে না খেয়ে থাকা এ মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটানোর জন্য প্রতিনিয়তই কাজ করে যাচ্ছেন অনেক স্বেচ্ছাসেবী। তেমনি একটি উদ্যোগ ‘আম জনতার হোটেল’। এ হোটেলে খেতে কোনো টাকা পায়সার প্রয়োজন হয় না। প্রতি শুক্রবারে এ হোটেলে ১০০ জনকে খাবার খাইয়ে দৃষ্টি কাড়ছেন ‘ভিলেজ ভিশন’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘আম জনতার হোটেলটি’ ২০২১ সাল থেকে ওই উপজেলায় সপ্তাহে একদিন বিভিন্ন স্থানে এ খাবারের আয়োজন করে থাকে। এখানে স্থানীয় ভিক্ষুক, ভ্যান ও রিকশাচালক, দিনমজুরসহ ছিন্নমূল লোকেরা খেতে আসেন। খাবার তালিকায় থাকে পোলাও, গরুর মাংস, মুরগির রোস্ট, গিলা-কলিজা দিয়ে মুগের ডাল, ডিম, সালাত ও দই।

বিনে পয়সায় গরিব ও দুস্থদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ভিলেজ ভিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার শামসুদ্দিন শরিফ (৫৮)।

তিনি  বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া অর্থায়নে প্রতি শুক্রবারে আমি ৮০ থেকে ১০০ মানুষকে এ খাবার খাওয়াই। কোনো কোনো দিন লোকের সংখ্যা বেশিও হয়। স্থানীয় স্কুল কলেজের ৩০ জন শিক্ষার্থীরা আমাকে এ কাজে সহযোগীতা করেন।

ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনে উপজেলার সরাপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে খাবারের আয়োজন করে ‘আম জনতার হোটেল’। এতে খাবার খেতে আসা ভ্যানচালক সোবাহান আলী  বলেন, আমি মাঝে মধ্যেই এখানে এসে বিনে পয়সায় তৃপ্তি সহকারে দুপুরের খাবার খাই। টাকা ছাড়াই এখানে জামাই আদর পাওয়া যায়।

তাড়াশ সদর ইউনিয়নে ভিক্ষা করে বেড়ানো মাহেলা খাতুন  বলেন, ভিক্ষা করি বলে, কোনো খাওয়ার দোকানে আমায় ঢুকতে দেয় না। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে আমাদের মতো ভিক্ষুকদের ডেকে খাবার দেন তারা। সবার সঙ্গে বসে খাবার খেয়ে মনে হয় পৃথিবীটা কত সুন্দর।

এ বিষয়ে খন্দকার শামসুদ্দিন শরিফ  বলেন, সমাজের সামর্থ্যবানরা হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে পারে। কিন্তু গরীব মানুষ কিনে খেতে পারে না। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহযোগীতায় ঠিক করলাম সপ্তাহে অন্তত একবার গরিব মানুষদের বিনামূল্যে ভালো খাবার খাওয়াবো। যতদিন সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায়তা করবেন ততদিন আমরা গরিবদের মাঝে এ খাবার বিতরণ করে যাবো।

হোটেলের নাম ‘আম জনতার হোটেল’ নামকরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি  বলেন, এ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থী সমাজের ছিন্নমূল মানুষদের খাবার খাওয়ায়। তাদের অর্থায়নেই হোটেলটি চালানো হয় বলে এটিরও নামকরণ করা হয়েছে ‘আম জনতার হোটেল’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসান  বলেন, করোনা শুরুর পর কয়েকজন বন্ধু মিলে সমাজের ছিন্নমূল মানুষদের বিনামূল্যে খাবারের প্লাটফর্ম হিসেবে ‘আম জনতার হোটেল’ চালু করি। এরপর আস্তে আস্তে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় বিস্তার ঘটানো হয়। সবার সার্বিক সহযোগীতায় বেশ সুন্দরভাবে এটি পরিচালিত হচ্ছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335