শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন
জিটিবি নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সরকার সকলের জন্য খেলাধুলা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। ফুটবল খেলোয়াড়দের এমনভাবে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে যাতে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বিশ্বকাপ খেলতে পারে। কয়েক দিন আগে বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শেষ হয়েছে। তবে বাংলাদেশ কোয়ালিফাই করতে পারেনি। আমি আশা করি বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলবে এবং তোমাদের নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে। ’ আজ বৃহস্পতিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণকালে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ফুটবল টুর্নামেন্টে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ের এক লাখ ১০ হাজার ৫৫২ জন ছেলে ও মেয়ের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা। আমি মনে করি বিশ্বে এমন আর কোনো দেশ নেই যেখানে এত বিপুলসংখ্যক ফুটবলার এ ধরনের টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। ’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকার খেলাধুলায় মানুষকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি। আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা ছিল আমাদের সন্তানদের ফুটবল, ক্রিকেট এবং অন্যান্য খেলাধুলায় আরো উৎসাহিত করা। আমাদের শিশুরা যত বেশি খেলাধুলায় নিজেকে নিয়োজিত করবে আমরা তত বেশি সুবিধা পাব। ’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া ৪০ জন ছেলে এবং ৪০ জন মেয়েকে তাদের প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) তিন মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং তাদের মধ্যে কয়েকজনকে প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে পাঠানো হবে। ’ বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের মেধাবীদের বের করে আনার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। এমনকি বিশেষভাবে চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করেছি এবং অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করে এনেছি। ’ দেশের প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম এবং প্রতিটি জেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণের পাশাপাশি একাডেমি নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ৫৬টি জেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া তৃণমূলে খেলাধুলা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সারা দেশে সুইমিং পুল, শ্যুটিং রেঞ্জ, কাবাডি ও ভলিবল স্টেডিয়াম এবং স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ করছেন বলে জানান তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ন্যাশনাল গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুর্ধ-১৭ বালক ফাইনাল ম্যাচে প্যানাল্টি শটে গোল করে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে খেলায় সমতা ফিরিয়ে এনে ১-১ গোলে ড্র করে সিলেট বিভাগ। বালক পর্যায়ে সিলেট বিভাগের মো. সাইফুর রহমান ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট এবং একই বিভাগের মো. রাজু মিয়া ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়। বরিশাল বিভাগের শাহাদৎ গাজী সেরা গোলদাতা এবং একই বিভাগের মো. রিয়াজ সেরা গোলকিপার হয়েছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ন্যাশনাল গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালিকা অনূর্ধ্ব-১৭-তে ২-১ গোলে খুলনা বিভাগকে পরাজিত করে রংপুর বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। গার্লস ফুটবল টুর্নামেন্ট রংপুর বিভাগের কাকলি ওমেন অব দ্য টুর্নামেন্ট এবং ফাইনাল ম্যাচে একই বিভাগের শান্তি মর্জি সেরা খেলোয়াড়, নাসরিন সেরা গোলদাতা এবং শাম্মি আক্তার সেরা গোলকিপার নির্বাচিত হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উদ্দিন স্বাগত বক্তব্য দেন।