শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন

বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার দুর্ঘটনা ক্ষতিপূরণ ব্যয় ধরা আছে ২০ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডারচাপায় রাজধানীর উত্তরায় গত ১৫ আগস্ট প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

রুলে দুর্ঘটনারোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ১৭ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

একইসঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে জনগণের নিরাপত্তার জন্য বিআরটি কর্তৃপক্ষ কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ৬০ দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. জাকারিয়া খান। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনার আলোকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক নীলিমা আক্তারের সই করা একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সেফটি ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্বে থাকা মো. জুলফিকারের সেফটি ও সিকিউরিটির কোনো একাডেমিক জ্ঞান নেই, তবে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস উল্লেখ রয়েছে।

মূলত সিজিজিসি কোম্পানিতে সেফটি সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। কোম্পানির কাছে তার বেতন বাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ করার পরে বেতন না বাড়িয়ে তাকে সেফটি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তার কোনো নিয়োগপত্র ছিল না। সিজিজিসি কোম্পানি কর্তৃক সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সেফটি ইঞ্জিনিয়ার পদে অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ মো. জুলফিকারকে নিয়োগ করা সম্পূর্ণ চুক্তিসম্মত হয়নি। নিয়োগও যথাযথ হয়নি বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।

এছাড়া ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট দুই কর্মীর মধ্যে আফরোজ মিয়া ঘটনার ১৭ দিন আগে কাজে যোগদান করেন। তিনি বয়োবৃদ্ধ ও নিরক্ষর। জীবনে প্রথমবারের মতো তিনি ঢাকায় এসেছেন বলেও তদন্ত কমিটিকে জানান। রুবেল হোসেন সিজিজিসির কাজ শেষে রিকশা চালান বলেও জানান।

তাদের শারীরিক অবস্থা দেখে তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, তারা ট্রাফিক কর্মী হিসেবে দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কি না তা সিজিজিসিতে নিয়োগের আগে যাচাই করা উচিত ছিল। এতে সিজিজিসি ও ফোর ব্রাদার্স সিকিউরিটিজ দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উদাসীনতার সুস্পষ্ট প্রমাণ।

 

এ প্রতিবেদনের বিষয়ে আগামী বছরের ১২ জানুয়ারি শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে  নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাকারিয়া খান।

এছাড়া একই ঘটনায় রাজধানী ঢাকার সড়কে জনগণের চলাচলে নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছিল। ১৬ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করা হয়। প্রাইভেটকারে থাকা পাঁচজন নিহতের ঘটনায় রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ। অন্য ওই রিটটি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তালিকা থেকে বাদ দিয়ে আদেশ দেন।

গার্ডার দুর্ঘটনায় যেসব কারণ চিহ্নিত

বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার দুর্ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শুরু থেকেই এ প্রকল্পে নিরাপত্তা ব্যবস্থা উপেক্ষিত ছিল। ফলে আগেও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর আগে সংঘটিত দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটির সুপারিশ যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন ছিল।

দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান

তদন্ত কার্যক্রমের সার্বিক পর্যালোচনা বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, জাতীয় শোক (১৫ আগস্ট) দিবসে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যত্যয়ের/ লঙ্ঘনের কারণে যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে তাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান (সিজিজিসি) প্রধানত দায়ী, যা দুটি ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান (ইডিসিএম) থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে (সিজিজিসি) ১১ জানুয়রি থেকে এ পর্যন্ত যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার বিষয়ে ৩৪টি চিঠি পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে শুধু চিঠি পাঠানোই যথেষ্ট ছিল না। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন এবং নিবিড় তদারকির প্রয়োজন ছিল।

প্রকল্প কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের কাজ নিরাপত্তাসহ বাস্তবায়নের জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার এবং প্রকল্প কাজে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুভাবে পালিত হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিল।

সরকারি ছুটির দিনে কাজ করা হয়েছিল। ওইদিন কাজ করার অনুমতি ছিল না। প্রথমবারের মতো দিনের বেলায় গার্ডার স্থানান্তর করা হয়। দিনের বেলায় সেদিনই প্রথম কাজ করা হয়। অথচ দিনের বেলা কাজ করার অনুমতি নেই। রাত ৮টার পর কাজ শুরুর কথা। ক্রেনটি সহকারী অপারেটর/হেলপার চালাচ্ছিলেন।

সুনির্দিষ্ট ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা ছিল না। ভারী কাজ করার সময় ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কাজে কেউ ছিল না। ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের যোগ্যতা না থাকা। যারা কাজ করতে এসেছিলেন তাদের সেফটি ইঞ্জিনিয়ারের যোগ্যতা না থাকা। জরুরি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাও ছিল না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নিয়োগ অনুমোদিত ছিল না।

সেখানে বলা হয়, দুর্ঘটনার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি দায়ী। তাদের অবহেলার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তিতে উল্লেখিত নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট শর্তসমূহ পালন করে তাদের নিজ দায়িত্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কাজটি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো যেত। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো নিরাপত্তার বিষয় তোয়াক্কা না করে দায়িত্ব জ্ঞানহীনভাবে কাজটি সম্পাদনের প্রক্রিয়াকরণ করে অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। ফলে প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ কত টাকা দিতে পারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

এই প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী কোনো দুর্ঘটনায় মানুষ এবং মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হলে তার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান আছে। সেখানে ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান: ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান (ইডিসিএম) কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে ১৫ আগস্ট কর্মপরিকল্পনা অনুসরণ করে গার্ডার স্থানান্তরের কাজ করা হচ্ছিল। প্রকৃতপক্ষে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সরকারি ছুটির দিনে কাজ করার জন্য কোনো অনুমোদিত ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান তারা দেখাতে পারেনি। ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের সঙ্গেও আগে সমন্বয় করা হয়নি। সড়ক সচল রেখে কাজ করায় গার্ডারটি ওপর থেকে একটি প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

সাক্ষ্য বিশ্লেষণে জানা যায়, গার্ডার স্থানান্তরের সময় অপারেটর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য তাগাদা দিলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা আমলে নেয়নি। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে রেখে কাজটি করলে প্রাণহানির ঘটনা এড়ানো যেত।

ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ছিল না

সাক্ষী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকস্মিক দুর্ঘটনার পর উদ্ধার তৎপরতা জোরদার এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান থাকা আবশ্যক। এক্ষেত্রে দুর্ঘটনার পর উদ্ধার তৎপরতা বা ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী ছিল না। তদন্তকালে এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি প্রতীয়মান হয়।

অন্যান্য

প্রকল্পে নিয়োজিত পরামর্শকদের পূর্বানুমতি গ্রহণ না করে কিছুসংখ্যক অদক্ষ-অপেশাদার জনবলের মাধ্যমে গার্ডার স্থানান্তর-উত্তোলনের মতো একটি ভারী ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ সম্পাদন করছিল। এক্ষেত্রে কোনো লিখিত বা মৌখিকভাবে কাজ সম্পাদনের বিষয়ে অনুমতি নেওয়া হয়নি। ফলে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের ছুটি থাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সরাসরি সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে তদন্তকালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত পরামর্শকদের ভূমিকা বিস্তারিত পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চুক্তিপত্রের নিরাপত্তা সংক্রান্ত শর্তাবলি শুরু থেকেই অবহেলিত ছিল, যা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারকে চিঠি পাঠানোতেই সীমিত ছিল।

সেক্ষেত্রে চুক্তির আওতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তি আরোপ যেমন সম্পাদিত কাজের বিল পরিশোধ না করাসহ অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট শর্তাদি প্রতিপালনের ক্ষেত্রে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে আরও প্রো-অ্যাকটিভ হতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

সুনির্দিষ্ট ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ছিল না

নির্মাণ ঠিকাদানি প্রতিষ্ঠান অনুমতি ছাড়াই গার্ডার স্থানান্তরে জাতীয় শোক দিবসে সরকারি ছুটির দিনে কাজ করা হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত কোনো পরিকল্পনা ছিল না। ঘটনার দিন পরিচালক, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এবং ট্রাফিক পুলিশের কোনো অনুমতি দিনের বেলায় গার্ডার স্থানান্তরের সঙ্গে চুক্তি নেই। সড়ক সচল রেখে দিনের বেলায় কাজ করা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাহানি ঘটেছে। গার্ডার স্থানান্তর কাজে সাক্ষীরা জানান এই প্রথম দিনের আলোতে গার্ডার স্থানান্তরের কাজ করা হয়েছে।

ক্রেনটি সহকারী অপারেটর/হেলপার চালাচ্ছিলেন

দুর্ঘটনার সময় মো. আলামিন হোসেন (হৃদয়) চেনটি অপারেট করছিলেন না। অপারেটরের সহকারী রাকিব হোসেন অপারেট করছিলেন। অপারেটর এবং সহকারী দুজনই তাদের সাক্ষ্যে এটা নিশ্চিত করেন।

ছিল না লাইসেন্স

অপারেটরের হালকা যান চালনার লাইসেন্স ছিল, কিন্তু সহকারী, যিনি ক্রেনটি অপারেট করছিলেন তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। সিজিজিসিএর ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ক্রেন অপারেটরের যোগ্যতা এবং লাইসেন্স যাচাই করা হয়েছিল কি না বা এ সংক্রান্ত কাগজপত্র আছে কি না তা দেখাতে ব্যর্থ হন তারা।

এছাড়া দুর্ঘটনার সময় ক্রেনের অবস্থান ছিল অসমতায়। সাক্ষীদের বক্তব্য থেকে জানা যায়, গার্ডারটি স্থানান্তরের সময় ক্রেনটি সমতলে ছিল না। ব্যবহৃত ক্রেনটি ছিল এনালগ প্রযুক্তির।

সহকারী মিটারে ওয়াটার লেভেল দেখে ভূমি এবং উত্তোলনকৃত বস্তুর তারতম্য জানতে পারে। এছাড়া ২০২১ সালে ক্রেনটির সর্বশেষ ফিটনেস করা হয়েছিল। তার সপক্ষে কোনো ডকুমেন্টও দাখিল করা নেই।

ছিল না পূর্বানুমতি

কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিপত্র অনুযায়ী গার্ডার সেগমেন্ট উত্তোলনের ক্ষেত্রে প্রকল্প পরামর্শকসহ কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে পূর্ব অনুমতি নিয়ে ভারী কাজ ট্রাফিক বন্ধ রেখে করার কথা। সরকারি ছুটির দিনে গার্ডার স্থানান্তরের কোনো অনুমতিও দেখাতে পারেনি তারা।

জানা গেছে, ১৫ আগস্ট বিকেলে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহতরা ঢাকায় একটি বৌভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, গাড়িটিতে মোট সাতজন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে দুই শিশু, দুই নারী ও একজন পুরুষ মারা গেছেন। নিহতরা হলেন রুবেল (৫০), ঝর্ণা (২৮), ফাহিমা, জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। আহত নবদম্পতি হৃদয় (২৬) ও রিয়ামনি (২১) উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছিলেন।

গত ১৫ আগস্ট বিকেলে উত্তরা জসীম উদদীন রোডের মাথায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে বিআরটি প্রকল্পের একটি বক্সগার্ডার ট্রেইলারে তোলার সময় ভারসাম্য হারায় ক্রেন। বিপুল ওজনের কংক্রিটের গার্ডারটি টঙ্গীমুখী সড়কে চলমান একটি প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। ভারী গার্ডারের চাপে চ্যাপ্টা হয়ে যায় প্রাইভেট কারটি। এতে প্রাইভেটকারের ভেতরেই মৃত্যু হয় পাঁচজনের। দুজনকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় হাসপাতালে। হতাহতরা সবাই একই পরিবারের সদস্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335