শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন

গরম পানি ঢেলে গৃহকর্মীকে নির্যাতন: ৫ লাখ টাকায় রফাদফার চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লায় গৃহকর্মীকে নির্যাতন করে গরম পানি ঢেলে শরীর ঝলসে দেওয়ার অভিযোগে কারাগারে আছেন গৃহকর্ত্রী তাহমিনা তুহিন। সম্প্রতি তিনি ৫ লাখ টাকায় মামলাটি রফাদফার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে শিশু গৃহকর্মীর মামা ইব্রাহিম খলিল  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, মামলা করার আগে থেকেই টাকা দিয়ে তারা সমাধানের চেষ্টা করছেন। মামলার পরে আমাদের স্থানীয় নেতারা এসেছেন মিমাংসা করতে। প্রথমে এক লাখ টাকা দেবে বলেছেন। আমি রাজি না হওয়ায় পর্যায়ক্রমে পাঁচ লাখ পর্যন্ত প্রস্তাব এসেছে। প্রয়োজনে না খেয়ে থাকবো তারপরও এই নিষ্ঠুর অমানবিকতার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই আদালতের কাছে।

ইব্রাহিম খলিল আরও বলেন, অধ্যক্ষ আবু তাহেরের মেয়ের বাচ্চাদের খেলার সঙ্গী হিসেবে আমার ভাগ্নিকে তারা নিয়েছিল। এরপর থেকে বাসার ছোটবড় সকল কাজ তাকে দিয়ে করিয়েছে। ঠিকমতো তাকে খাবার দিতো না। গত চার বছরে বহুবার চেষ্টা করেও ভাগ্নির সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। তারা সবসম বলতো আপনাদের সঙ্গে কথা বললে সে কান্নাকাটি করবে।

‘ভাবতাম ভাগনি দূরে থেকেও ভালো আছে। কিন্তু সেদিন খবর পাই ভাগনি ভালো নেই। হাসপাতালে গিয়ে তার মুখে নির্যাতনের যে বর্ণনা শুনেছি তা আইয়্যামে জাহেলিয়াতকেও হার মানায়। তার পুরো শরীরে দেখি দাগ আর দাগ।’

এর আগে ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কুমিল্লা শহরতলীর ধর্মপুর ভিক্টোরিয়া কলেজ সংলগ্ন পূর্ব দৌলতপুর এলাকার এসআরটি প্যালেসের মালিক ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহেরের বাড়ির গৃহকর্মীকে মারধর করেন তার স্ত্রী তাহমিনা তুহিন। পরে গরম পানি ঢেলে তার শরীর ঝলসে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় তাহমিনাকে কুমিল্লা কোতয়ালি থানা পুলিশ আটক করে।

পরে ৪ জানুয়ারি বিকেলে ভুক্তভোগী শিশুটির মামা ইব্রাহিম খলিল কোতয়ালি থানায় তাহমিনার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রীকে গ্রেফতার দেখিয়ে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়।

ওই মামলায় ৯ জানুয়ারি গ্রেফতার তাহমিনা তুহিনের জামিন নামঞ্জুর করেন কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিনের আদালত।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোর্শেদ মিন্টু বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করা যাচ্ছে না।

রফাদফার বিষয় অস্বীকার করে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহের বলেন, মেয়েটি আমাদের আত্মীয়ের মধ্যে। তাকে মারধর করা হয়নি। সে পাপশে পা পিছলে পড়ে পায়ে একটু গরম পানি পড়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335