সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৩ পূর্বাহ্ন

হাড্ডাহাড্ডি ১২৬ আসনে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে গতকাল। প্রতীক পেয়েই প্রচার শুরু করেছেন প্রার্থীরা। মাঠের বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে না এলেও নির্বাচন বেশ জমজমাট হওয়ার আভাস মিলেছে। কোথাও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র, কোথাও জাতীয় পার্টি, কোথাও অন্য দলের প্রার্থীর সঙ্গে তুমুল লড়াই হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ১২৬টিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকা-৪ আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। এখানে নৌকা নিয়ে লড়ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য সানজিদা খানম। লাঙ্গল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। দলের মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী ড. আওলাদ হোসেন। এ তিনজনের মধ্যে তুমুল লড়াই হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। একই অবস্থা ঢাকা-৫ আসনে। এখানে নৌকা পেয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মুন্না। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র লড়ছেন সাবেক এমপি হাবিবুর রহমানের ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন। এ আসনেও কারও চেয়ে কারও অবস্থান কম নয়। সমানে সমান লড়াই হবে। ঢাকা-১৮ আসনে নৌকা দেওয়া হয়েছিল বর্তমান এমপি হাবিব হাসানকে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা হওয়ায় এ আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে লাঙ্গল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে রয়েছেন ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খসরু চৌধুরী। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এখন খসরু চৌধুরীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে এখানে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে জাতীয় পার্টিকে। ঢাকা-১৪ আসনে নৌকা পেয়েছেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। দলের মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক সংরক্ষিত আসনের এমপি ও ঢাকা মহানগরী উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি, বর্তমান ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সাবিনা আকতার তুহিন। এখানে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

পিরোজপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম আবদুল আউয়াল। এ দুই প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে।

নেত্রকোনা-২ আসনে (সদর ও বারহাট্টা) আওয়ামী লীগের প্রার্থী সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তাঁর সঙ্গে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী ফুটবলার আরিফ খান জয়। নেত্রকোনা-৩ আসনে নৌকা পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক বর্তমান এমপি অসীম কুমার উকিল। এখানে স্বতন্ত্র লড়ছেন সাবেক এমপি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী। এখানেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

 

মেহেরপুর-১ আসনে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন।

চাঁদপুরের পাঁচ আসনের মধ্যে চারটিতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের। চাঁদপুর-২ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবীক্রম। তাঁরই প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশিষ্ট শিল্পপতি এম ইসফাক আহসান। শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি চাঁদপুর-৩ আসনের (সদর ও হাইমচর) বর্তমান সংসদ সদস্য। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য শামসুল হক ভুইয়া। তাঁর পক্ষে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের একাংশ। আরেকাংশ দীপু মনির পক্ষে। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মৎস্যজীবী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা রেদওয়ান খান বোরহান। এখানে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানা গেছে। চাঁদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি মো. শফিকুল ইসলাম। এখানে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. শামসুল হক ভুইয়া।

নরসিংদী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোহরদী উপজেলা পরিষদের পাঁচবারের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান। প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি সম্প্রতি চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন। লালমনিরহাট-২ আসনে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল হক। মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছোট ভাই কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন বলে এলাকায় আলোচনা আছে। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীও আছেন। ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। নওগাঁ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন নিয়ামতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও চন্দননগর ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান খালেকুজ্জামান। নাটোর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ?মেদ। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিংড়া উপজেলা পরিষদের সম্প্রতি পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ। রাজশাহী-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য রাহেনুল হক।

হবিগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বেসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক যুবলীগ নেতা ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এখানে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানা গেছে।

ময়মনসিংহ-১ আসনে বর্তমান এমপি জুয়েল আরেংয়ের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া মাহমুদুল হক সায়েম। ময়মনসিংহ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নিলুফার আনজুম পপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোমনাথ সাহা। ময়মনসিংহ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মোহিত উর রহমান শান্তর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হক শামীম। ময়মনসিংহ-৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রুহুল আমীন মাদানীর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পৌর মেয়র এ বি এম আনিছুজ্জামান। ময়মনসিংহ-৮ আসনে জাপাকে আসন ছেড়ে দিলেও তিনি আলোচনায় নেই। এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমনের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল আলম প্রদীপের। ময়মনসিংহ-১১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান এমপি কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনুর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ ওয়াহেদ। ময়মনসিংহ-৯ আসনে হাই কোর্টের আদেশে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন নৌকার মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম। তাঁর সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিনের।

সিলেট-২ আসনে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান ও সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী। সিলেট-৩ আসনে নিজ দলের স্বতন্ত্র ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে বর্তমান সংসদ সদস্য নৌকার কান্ডারি হাবিবুর রহমান হাবিবকে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় দলের একটি অংশ তাঁর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রয়াত সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর অনুসারীরাও প্রকাশ্যে ও গোপেনে ডা. দুলালকে সমর্থন দিচ্ছেন।

সিলেট-৫ আসনে দলীয় প্রার্থী মাসুক উদ্দিন আহমদকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. আহমদ আল কবীর। মাসুকবিরোধী বলয়ের নেতারা আহমদ আল কবীরের সঙ্গে অবস্থান নিয়েছেন। সিলেট-৬ আসনে নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদের জয়ে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন। সরওয়ার হোসেনের সঙ্গে নাহিদবিরোধী বলয়ের নেতা-কর্মীরা রয়েছেন।

যশোর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন মো. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক মনিরুল ইসলাম ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান। যশোর-৩ আসনে বর্তমান এমপি কাজী নাবিল আহমেদ এবারও নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। একই দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ। যশোর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। তবে এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা এস এম ইয়াকুব আলীর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন। যশোর-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। অন্য আসনগুলোর মতো এখানেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা এইচ এম আমির হোসেনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন।

জামালপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ ফরিদুল হক খান দুলাল এমপির জন্য এবারের নির্বাচনের লড়াইটা বেশ কঠিন হবে। তার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ। এ ছাড়াও এ আসনে আওয়ামী লীগের দুই নেতা জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মো. জিয়াউল হক জিয়া ও বিমানবন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান আলী মণ্ডল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন।

জামালপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান হেলালকে নিজ দলের দুই শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করতে হবে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও দুইবারের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান এমপি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।

সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে এবারও নৌকা পেয়েছেন আবদুল মমিন মণ্ডল। এখানে তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস। এখানে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে। সিরাজগঞ্জ-৬ আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী চয়ন ইসলাম। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক মেয়র, সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার জামিনে থাকা আসামি হালিমুল হক মিরু।

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তারই বড় ভাই স্বতন্ত্র মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের। কিশোরগঞ্জ-২ নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুল কাহার আকন্দের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিনের।

গাজীপুর-১ আসনে আ ক ম মোজাম্মেল হকের নৌকার বিরুদ্ধে ট্রাকের রেজাউল করিম রাসেল, গাজীপুর-২ এ জাহিদ আহসান রাসেলের নৌকার বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলিম উদ্দিন, গাজীপুর-৩ এ রুমানা আলী টুসির বিরুদ্ধে আছেন মহম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ ও গাজীপুর-৫ এ মেহের আফরোজ চুমকির বিরুদ্ধে শক্ত লড়াইয়ে আছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি মো. আখতারুজ্জামান।

ফেনী-৩ আসনে লড়াই হবে মাসুদ চৌধুরীর সঙ্গে রহিম উল্যাহর। ফেনী-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল বাশারের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে আসনটি জাতীয় পার্টির প্রার্থী লে. জেনারেল (অ.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ আসনে লাঙলের সঙ্গে লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিদ্রোহী আওয়ামী লীগ নেতা রহিমের।

কুমিল্লা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কুমিল্লা-৬ সদর আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সংরক্ষিত নারী এমপি আঞ্জুম সুলতানা সীমার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. মুজিবুল হকের সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র মো. মিজানুর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

নীলফামারী-২ আসনে নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে জমজমাট লড়াই হবে সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রাথী জয়নাল আবেদীনের।

ভোলা-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। এই আসনে তার সঙ্গে ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন এই আসনের আওয়মী লীগের সাবেক এমপি মেজর (অব.) জসিম উদ্দিন। লালমনিরহাট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোতাহার হোসেন এমপি (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সোনালী ব্যাংকের এমডি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটির সদস্য আতাউর রহমান প্রধান (ঈগল প্রতীক)-এর সঙ্গে তুমুল লড়াই হবে। লালমনিরহাট-২ আসনে আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল হকের (ঈগল) সঙ্গে ভোটযুদ্ধ হবে।

গাইবান্ধা-১ আসনে মহাজোটের আসন ভাগাভাগিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আফরুজা বারীকে বসিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আফরুজা বারীর কন্যা। এ দুজনার মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন সাধারণ ভোটাররা। গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনটি দুইবারের নির্বাচিত এমপি ও হুইপ আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহাবুব আরা বেগম গিনিকে বসিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুর রশীদ সরকারকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ সারোয়ার কবীরও জনপ্রিয়তায় অনেকটা এগিয়ে। আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ সারোয়ার কবীরের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। গাইবান্ধা-৩ আসনে নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই হবে। এ আসনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলছুম স্মৃতি, আওয়ামী লীগেরই দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুল হক সরকার ও সাদুল্লাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সাহারিয়ার খান। মূলত এই তিনজন প্রার্থীর মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মনে করছেন ভোটাররা। গাইবান্ধা-৪ আসনে নির্বাচনে দ্বিমুখী লড়াই হবে ধারণা করছেন স্থানীয় ভোটাররা। এ আসনে ভোটের মাঠে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এবং শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী। গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত ত্রিমুখী লড়াই হবে বলেই ধারণা করছেন স্থানীয় ভোটাররা। জয়ের জন্য মরিয়া আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন। তবে হাল ছাড়তে নারাজ জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার আতা, অনেকটা সুবিধাজনক স্থানে আছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রয়াত সাবেক ডেপুটি স্পিকারের কন্যা ফারজানা রাব্বী বুবলী।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আছলাম হোসেন সওদাগর কেন্দ্রীয় নির্দেশে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় এখানে উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। শুধু ভোটের মাঠে থাকবেন জাপা প্রার্থী এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান। তার সঙ্গে অন্য ছোট দলগুলো অংশ নিচ্ছে।

দিনাজপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হুইপ ইকবালুর রহিমের (নৌকা) শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। কিন্তু একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক দিনাজপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চন (ট্রাক) ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জয়ী হওয়ার আশা করছেন জাতীয় পার্টির আহাম্মেদ শফি রুবেল (লাঙল)। দিনাজপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী (নৌকা) এবারও শক্তিশালী প্রার্থী। এখানে দলীয় কোন্দল রয়েছে বলে জানায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এ কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তারিকুল ইসলাম তারিক (ট্রাক)। দিনাজপুর-৫ আসনে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার সাত বারের এমপি। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কোনো প্রার্থী নেই।

জয়পুরহাট-২ আসনে এবারও নৌকার প্রার্থী জাতীয় সংসদের হুইপ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্কেলপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে নির্বাচনে দ্বিমুখী লড়াই হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা। আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান এমপি বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম (নৌকা)। তার বিপরীতে নির্বাচনি লড়াইয়ে আছেন সদ্য বহিষ্কৃৃত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে এমরামুজ্জামান (কলার ছড়ি)। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ায় জোট প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পার্টিও অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া (লাঙল)। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রাথী মঈন উদ্দিন মঈন (কলার ছড়ি) ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা (ঈগল পাখি)। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনটিতে লড়াই হবে দ্বিমুখী। এ আসনে আওয়ামী লীগ বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী পেয়েছেন (নৌকা)। তার প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিশালী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান ওলিও (কাঁচি প্রতীক)। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪-(কসবা-আখাউড়া) সীমান্ত ঘেঁষা আসনটিতে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে লড়াই করবেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (নৌকা প্রতীক)। তবে তার বিপরীতে শক্তিশালী কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শক্তিশালী কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই।

ঝালকাঠি-১ আসনের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সদ্য সাবেক বিএনপির নেতা আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী সাবেক আইন ও ভূমি প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমর বীর উত্তমের সঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা (ঈগল প্রতীক) মো. মনিরুজ্জামানের।

শেরপুর-১ (সদর) আসনে পাঁচ বারের এমপি সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিকের (নৌকা) সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন ছানু (ট্রাক) ও মো. মাহমুদুল হক মনির (জাতীয় পার্টি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

মেহেরপুর-১ আসনের প্রার্থী জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন (নৌকা)। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি প্রফেসর আবদুল মান্নান (ট্রাক)। প্রফেসার আবদুল মান্নানকে জিতাতে ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে এবার ঐক্য গড়েছেন দলের সাবেক সংসদ সদস্যসহ দলীয় জ্যেষ্ঠ নেতারা।

মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

ফরিদপুর-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ত্রিমুখী। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. আবদুর রহমান (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলন (ঈগল পাখি) ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) শাহ মো. আবু জাফর (নোঙ্গর)। ফরিদপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহদাব আকবর লাবু (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া (ঈগল পাখি)। ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাজী জাফরউল্লাহ (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান নিক্সন (ঈগল পাখি)। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে ভোটের মাঠে লড়াই হবে জাতীয় পার্টির বিভাগীয় মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা ও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নৌকার প্রার্থী সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতের মধ্যে।

রংপুর-১ আসনে জাপা থেকে বহিষ্কৃত মশিউর রহমান রাঙ্গা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। তার সঙ্গে নির্বাচনি যুদ্ধে রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আসিফ শাহরিয়ার ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলু। এই তিন প্রার্থীর সঙ্গে ভোট যুদ্ধ হবে। রংপুর-২ তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসনে আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউককে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ সরকার বিটু ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুমনা আকতার লিলির সঙ্গে। তবে এখানে জাপার সাবেক এমপি আনিছুর রহমান মন্ডলও ফ্যাক্টর হতে পারেন সরকারদলীয় প্রার্থীর কাছে। অপরদিকে রংপুর-৫ মিঠাপুকুর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাশেক রহমানকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হবে আওয়ামী লীগের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থীয় জাকির হোসেন সরকারের সঙ্গে। তবে এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আনিছুর রহমানও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।

সাতক্ষীরা-২ আসনে জাতীয় পার্টিকে আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দুবারের নির্বাচিত বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি।

কক্সবাজার-১ আসনের কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি জাফর আলমের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কক্সবাজার-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাইমুম সরওয়ার কমলের সঙ্গে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবদুল আওয়াল মামুনের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কক্সবাজার-৪ উখিয়া টেকনাফ আসনে আওয়ামী লীগের শাহীন আক্তারের সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল আমিন ভুট্টোর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

সুনামগঞ্জ-১ আসনে নিজ দলের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে নৌকার প্রার্থী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিত সরকারকে। দুই স্বতন্ত্র হলেন- আসনটির টানা তিন মেয়াদের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং শ্রমিক লীগ নেতা সেলিম আহমদ। সুনামগঞ্জ-২ নৌকার মাঝি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ওরফে আল আমিন চৌধুরীর প্রতিপক্ষ প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পত্নী বর্তমান এমপি জয়া সেনগুপ্তা। সুনামগঞ্জ-৪ টানা দুই মেয়াদে এই আসনের সংসদ সদস্য জেলা জাপার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। ১০ বছর এমপি থাকাকালীন উন্নয়নের পাশাপাশি দলকে গুছিয়েছেন তিনি। আগে থেকেই জাপার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনটিতে আরও পাকাপোক্ত হয়েছে জাপার ভিত। এ আসনে নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ সাদিকের মধ্যে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সুনামগঞ্জ-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরীর।

মৌলভীবাজার-২ আসনে নৌকার প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। নাদেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন হেভিওয়েট তিন প্রার্থী। তিন প্রার্থীরই রয়েছে স্থানীয়ভাবে ব্যক্তি ইমেইজ ও রাজনৈতিক ব্যাপক পরিচিতি। নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তৃণমূল বিএনপি থেকে সোনালি আঁশ প্রতীকে এম এম শাহীন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সাবেক এমপি আবদুল মতিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যন এ কে এম সফি আহমদ সালমান।

পিরোজপুর-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দীন মহারাজের। পিরোজপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়া জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বর্তমান এমপি ডা. রুস্তাম আলী ফরাজী ঈগল মার্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী কলার ছড়ি মার্কার মো. শামীম শাহনেওয়াজ।

খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য এস এম মোর্ত্তজা রশিদী সুজার ভাই এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. রশিদুজ্জামানের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ জিএম মাহবুবুল আলমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

নাটোর-১ আসনে সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল নৌকার মাঝি। তার বিরুদ্ধে আছেন ২ জন আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে বকুলের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ২০১৪ সালের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদের। নাটোর-২ বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে। দুবারের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার।

নাটোর-৪ আসনটিতে গত অক্টোবরের উপনির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আসনটিতে ত্রিমুখী লড়াই হবে। ৫ বারের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (চলতি বছরের আগস্টে মারা যান) প্রয়াত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে আসিব আবদুল্লাহ বিন কুদ্দুস স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে গুরুদাসপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

নেত্রকোনা-১ আসনে নৌকার প্রার্থী মোশতাক আহমেদ রুহীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার (ট্রাক প্রতীক)। নেত্রকোনা-৫ আসনে নৌকা নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন লড়াই করবেন কর্নেল তাহেরের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি পেয়েছেন ঈগল প্রতীক।

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের ড. আনোয়ার হোসেন খান এমপি (নৌকা) এর সঙ্গে জাতীয় পার্টির মাহামুদুর রহমান (লাঙল) ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন (ঈগল প্রতীক) এর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। লক্ষ্মীপুর-২ আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি (নৌকা) এর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জাতীয় পার্টির বোরহান উদ্দিন আহমেদ (লাঙল) এর সঙ্গে।

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আলী আজগার (নৌকা) এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আবু হাশেম রেজার (ট্রাক) সঙ্গে।

বরিশাল-২ আসনে লড়াই হবে ত্রিমুখী। এখানে ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সঙ্গে জাতীয় পার্টির মো. ইকবাল হোসেন ও স্বতন্ত্র সাবেক এমপি মনিরুল ইসলামের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে আলোচনা রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের আরেক স্বতন্ত্র একে ফাইয়াজুল হক এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নকুল কুমার বিশ্বাসও ভোটের মাঠে অভাবনীয় কিছু করে ফেলতে পারেন।

বরিশাল-৩ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টি। জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপুর সঙ্গে লড়াই হতে পারে ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতানের। বরিশাল-৫ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আওয়ামী লীগের জাহিদ ফারুকের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর।

বরিশাল-৬ আওয়ামী লীগের আবদুল হাফিজ মল্লিকের সঙ্গে ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রতনা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ শামসুল আলমের।

কুষ্টিয়া-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও রাকসুর সাবেক ভিপি আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ্র সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর। দুজনই যথাক্রমে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সহ-সভাপতি। এ ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত কোরবান আলীর ছেলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহারিয়ার জামিল। কুষ্টিয়া-২ আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। তিনি ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জাসদের ভোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ভোট যোগ করে এর আগে জয়লাভ করে আসছেন। কিন্তু এবার মিরপুর উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন। তাদের দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। কুষ্টিয়া-৪ আসনে নৌকা নিয়ে লড়ছেন বর্তমান এমপি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার সেলিম আলতাফ জর্জ। তার বিপরীতে শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আবদুর রউফ। গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মানুষের কাছে রউফের জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্যদিকে তরুণ নেতা হিসেবে সেলিম আলতাফ জর্জও জনপ্রিয়।

ঝিনাইদহ-৩ আসনে ত্রিমুখী লড়ায়ের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিন্দন্দ্বিতায় থাকছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) সালাউদ্দিন মিয়াজী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল (ট্রাক প্রতীক) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার নবী নেওয়াজ (ঈগল প্রতীক)।

নড়াইল-২ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাশরাফী বিন মর্তুজার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি শেখ হাফিজুর রহমান (হাতুড়ী প্রতীক)। পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকে এস এম শাহজাদা এমপির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হতে পারেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) আবুল হোসেন। পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে ক্ষমতাশীন দলের নেতাদের মধ্যে ভোটের মাঠে লড়াই হবে ত্রিমুখী। এ আসনে সাবেক এবং বর্তমান এমপিদের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ভোটের মাঠে হবে টানটান উত্তেজনা। থাকবে এলাকা ভিত্তিক আঞ্চলিক সমর্থন। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মহিব্বুর রহমান মহিব বর্তমান এমপি।

পাবনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর (নৌকা) সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনুষ্ঠিত হবে বলে সাধারণ ভোটারদের ধারণা। পাবনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলহাজ মকবুল হোসেনের এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চাটমোহর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ মাস্টারের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন।

চট্টগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের মাহবুব উর রহমান রুহেলের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের। চট্টগ্রাম-২ আসনে আওয়ামী লীগের খাদিজাতুল আনোয়ার সনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েও কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এ আসনে তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ও সুপ্রিম পার্টির সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ সনি মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। চট্টগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান মিতার সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরীর। চট্টগ্রাম-১০ আসনে আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন বাচ্চুর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মনজুর আলমের। চট্টগ্রাম-১১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ লতিফের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমনের। চট্টগ্রাম-১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা কারণে দলীয় মনোনয়ন হারিয়েও পুনরায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সামশুল। চট্টগ্রাম-১৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ একই দলের নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল জব্বার চৌধুরী। চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে জিততে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। এই আসনে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান। চট্টগ্রাম-৫ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন জাতীয় পার্টির সিনিয়ার কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তার সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে তৃণমূল বিএনপির মো. নাজিম উদ্দিনের। চট্টগ্রাম-৮ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ। তবে আওয়ামী ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সঙ্গে জিততে শেঠকে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজবাড়ী-১ আসনের নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী ও রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী কেরামত আলী ও ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইমদাদুল হক বিশ্বাসের মধ্যে। মানিকগঞ্জ ১ আসনে নৌকার প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চলে এসেছে সতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এস এম জাহিদের সঙ্গে জোটের প্রার্থী জহিরুল আলম রুবেলের (জাপা)। মানিকগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মমতাজ বেগমের প্রতিপক্ষ হচ্ছেন তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহম্মেদ টুলুর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানান তৃণমূলের লোকজন।

মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে নিজ দলের কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। তবে গণফোরামের সাবেক সংসদ সদস্য মফিজুল ইসলাম খান কামাল ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল আলম রুবেল এ আসন থেকে নির্বাচন করছেন। যে কোনো একজন তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন।

মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে দ্বিমুখী লড়াই হবে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সোহানা তাহমিনার মধ্যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আলহাজ মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছেলে সদ্য পদত্যাগকৃত মুন্সীগঞ্জ পৌর মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব। ()

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335