বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৬:১০ অপরাহ্ন

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারই চ্যালেঞ্জ

ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরানো, রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি কমানো, এডিপি বাস্তবায়নে গতি বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে গতি ফেরানো এবং মূল্যস্ফীতির চাপ কমিয়ে আনা এ মুহূর্তে অর্থনীতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এক মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে সামগ্রিক অর্থনীতি প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে। প্রায় দুই বছর ধরে কস্ট কাটিং করেও অর্থনীতিতে গতি ফেরানো সম্ভব হয়নি। আমদানিতে নিয়ন্ত্রণারোপ করেও এ খাতের ব্যয় কমানো যায়নি। আমদানি ব্যয় বাড়ার ফলে ডলার সংকটও বেড়েছে। যার ফলে রিজার্ভ নেমেছে ২০ বিলিয়নের ঘরে। অথচ এক বছর আগেও রিজার্ভ ছিল প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য মূল্যস্ফীতির চাপ এক বছরের বেশি সময় ধরেই বাগে আসছে না। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘর ছুঁইছুঁই করছে। আর খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশেরও বেশি। অর্থনীতির এই বেহাল দশা কাটাতে নতুন করে পরিকল্পনা করছে অর্থ বিভাগ। অবশ্য তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। অর্থ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ মুহূর্তে সবাই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের পর সে সরকার যেন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কাজে হাত দিতে পারে- সে জন্যই এ পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, করোনা মহামারিতে ধসে পড়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল সেটার বাস্তবায়নের অগ্রগতি দেখে নতুন করে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী জানুয়ারি/ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির চাপ ৮ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. এম শামসুল আলম। এ ছাড়া ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে। এটা আরও কমবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দামও কমতে শুরু করেছে। আসছে মৌসুমে চাল, ডাল, তেল, মাছ, মাংসসহ নিত্যপণ্যের কমে আসবে বলে মনে করেন শামসুল আলম। এতে মূল্যস্ফীতির চাপও কমবে।

সূত্র জানায়, অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক অংশীজনদের সঙ্গে প্রয়োজনে আবারও সংলাপ করবে। অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারকে বাজারমুখী করে মুদ্রানীতির কৌশলগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। একই সঙ্গে রাজস্ব আদায় বাড়ানো হবে। নতুন নতুন রপ্তানির বাজার সৃষ্টি করা হবে। রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ করা হবে। একেক পণ্যের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসা হবে। শুধু ইউরোপ আর আমেরিকায় নির্ভর না করে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বাজারকেও ধরার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অর্থ বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য ঠিক করেছিল, কিন্তু অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। এটাকে কমিয়ে আনাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। অর্থ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, এ অবস্থায় সরকার চেষ্টা করছে সামগ্রিক আর্থিক খাতের অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে। রপ্তানি বাড়াতে বিদেশি ক্রেতাদের ধরার চেষ্টা করছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে বড় কাজ উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডলার সরবরাহ বাড়ানো এবং রিজার্ভের পতন আটকানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু রপ্তানি আয়, প্রবাস আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদান কমছে। এটাকে গিয়ারআপ করার জন্যও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ()

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335