শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১১:৩১ অপরাহ্ন

রাতের আঁধারে ঘরে আগুন – অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা

সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সোনাতলায় মামলার জামীনে এসে বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে হত্যার চেষ্টায় রাতের আঁধারে ঘরে পেট্রোল ঢালিয়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলো মুক্তযোদ্ধার পরিবারের লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে ৭ আগষ্ট সোমবার দিবাগত রাত অনুঃ আড়াইটার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রানিরপাড়া গ্রামে।
এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের লোকজন জানান, গত ৪আগষ্ট শুক্রবার সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রানিরপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম খানের বীর নিবাস নির্মাণ কাজে বাধা স্থাপনা উচ্ছেদ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ওইদিন রাতেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম খান বাদি হয়ে জুলকার নাঈম রুমেলকে প্রধান আসামি করে ৮জন নামীয় ও অজ্ঞাত ১৫/২০জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় ৭ আগষ্ট সোমবার প্রতিপক্ষ আসামি জুলকার নাঈম রুমেল সহ সকলেই বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসে। এরপর ওইদিন রাতে তারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির আসপাসে ঘুরাফেরা করে। এদিকে মুক্তযোদ্ধা আবুল কালাম খান ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রতিদিনের ন্যায় রাতের খাবার খেয়ে তাদের শয়ন ঘরে ঘুমিয়ে পরে। অন্যদিকে হঠাৎ করেই রাত অনুঃ আড়াইটার দিকে মুক্তযোদ্ধার পরিবারের লোকজন তাদের ঘরে আগুন দেখে ভয়ে আতংকিত হয়ে পরে এবং জীবন রক্ষার্থে তারা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। তাদের চিৎকার সুনে আশপাসের লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এতে করে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম খানের পরিবারের সদস্যরা। প্রতিপক্ষরা যে ঘরে আগুন লাগিয়েছে  সেই ঘরে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম খানের ছেলে, মেয়ে ও বোন ছিল বলে জানান তারা।
এঘটনায় সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জ সৈকত হাসানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, মৌখিকভাবে বিষয়টি সোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে আগুন লাগার কারন জানতে অনুসন্ধানের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।উল্লেখ্য, সোনাতলায় জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম খানের বীর নিবাস নির্মাণে বাঁধা স্থাপনা উচ্ছেদ লুটপাটের অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি ঘটেছে ৪ জুলাই শুক্রবার সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রানীরপাড়া গ্রামে। এঘটনায় ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম খান জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। পরে ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম খান বাদি হয়ে রাতে জুলকার নাঈম রুমেলকে মূল আসামিসহ ৮জন নামীয় ও অজ্ঞাত ১৫/২০জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে ও ভুক্তভোগী বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম খান জানান, রানীরপাড়া গ্রামের মৃত আঃ লতিফ মন্ডলের ছেলে মোঃ জুলকার নাঈম রুমেলের সহিত পূর্ব হইতে জমি জমা এবং সরকারী বরাদ্দ বীর নিবাসের নির্মাণ কাজকে কেন্দ্র করে বিরোধসহ মনোমালিন্য চলে আসছে। উক্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন সময় নির্মান কাজে বাধাসহ ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে আসতে থাকে। এরই একপর্যায়ে ৪আগষ্ট সকাল সাড়ে ৮টার সময় উপরোক্ত বর্নিত আসামীরা বে-আইনী ভাবে দলবদ্ধ পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে তাদের হাতে বাঁশের লাঠি, লোহার রড, হাসুয়া, ধারালো ছুরিসহ দেশীয় অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার নামীয় বীর নিবাস নির্মাণ‌ কাজে হামলা চালায়। জুলকার নাঈম রুমেলের নির্দেশে তার লোকজন প্রথমে বীর নিবাসের সাইনবোর্ডসহ ১৫ বান্ডিল টিনের বাউন্ডারী ভাংচুর করে তাদের বাড়ীতে নিয়ে যায়।
যার অনুমান মূল্য ৭হাজার ৫শত টাকা  এছাড়াও ১টি মটর টিউবওয়েলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র যার অনুমান ৪৫ হাজার টাকা মূল্যে। এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার নামীয় বীর নিবাসের নির্মাণ সামগ্রী অসৎ উদ্দেশ্যে  লুটতারাজ করে নিয়ে যায়। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম খান তাদেরকে বাঁধা দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মারমুখী আচরণ করে। তিনি ডাকচিৎকার করলে তাকে রক্ষা করার জন্য তার স্ত্রী মোছাঃ রেজিয়া আক্তার খানম ও মেয়ে মোছাঃ শামিমা নাছরিন আগায়ে আসলে তাহাদেরকে ধাক্কা ধাক্কিসহ পড়নের কাপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটায়। একপর্যায়ে  তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও খুন জখমের হুকুমী দিলে  তারা প্রাণ রক্ষার্থে সেখান থেকে দূরে অবস্থান করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335