বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন

অগ্নিনির্বাপণ মহড়া: ধোঁয়ায় ছেয়ে গেলো সচিবালয়ের এক নম্বর ভবন, তারপর…

নিজস্ব প্রতিবেদক: মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা। সচিবালয়ের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থাকা এক নম্বর ভবন থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে থাকে। দুলতে থাকে সামনের গাছগুলো। এরপর ফোন- ‘হ্যালো ফায়ার সার্ভিস। আমাদের এক নম্বর ভবনে আগুন লেগেছে।’ জবাব আসে- ‘কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের গাড়ি চলে যাবে, আপনারা ধৈর্য্য ধরুন।’

এরমধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। সাইরেন বাজিয়ে মুহূর্তের মধ্যে চলে আসে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি (ফোর হুইলার)। ফায়ার ফাইটাররা এসে এস্টিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এরপরই চলে আসে পানিবাহী গাড়ি।

আগুন থেকে বাঁচতে কর্মকর্তা-কর্মমচারীরা ছুটোছুটি শুরু করেন। ফায়ার ফাইটাররা আহতদের উদ্ধার করে আনতে থাকেন ভবনের সামনে স্থাপিত প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে। একই সঙ্গে বসানো হয় কমান্ড পোস্ট। আরেক দল মই এনে দোতলা থেকে আহতদের নামিয়ে আনেন।

সাইরেন বাজিয়ে আসতে থাকে অ্যাম্বুলেন্স। অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের নেওয়া হয় হাসপাতালে। এরপর ভবনের ছাদে আটকেপড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দড়ি বেয়ে নামিয়ে আনেন ফায়ার ফাইটাররা। রশির সাহায্যে ইর্মাজেন্সি মেথড রেসকিউ পদ্ধতিতেও নামিয়ে আনা হয় আটকেপড়াদের। জাম্বো কুশনে লাফিয়ে পড়েও অনেকে ভবন থেকে বেরিয়ে এলেন।

সচিবালয়ের এক নম্বর ভবনের দেওয়ালের ওপাশের সড়কে গাড়িতে থাকা টার্ন টেবল ল্যাডার দিয়ে পানি ছুড়ে নেভানো হয় আগুন। দূর নিয়ন্ত্রীত অত্যাধুনিক গাড়ি (এলইউএফ-৬০) থেকেও ছিটানো হয় পানি।

এই দৃশ্য দেখে মনে হবে সচিবালয়ে আগুন লেগেছে। কিন্তু না, সত্যি সত্যি সচিবালয়ের ১ নম্বর ভবনে আগুন লাগেনি। এটি ছিল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের আগুন নেভানো এবং উদ্ধারের মহড়া।

উপস্থিত থেকে এ মহড়া দেখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এরপর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গ্যাস সিলিন্ডার এবং বাসা-বাড়িতে আগুন লাগলে কীভাবে নেভাতে হবে তা শেখানো হয়।

পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ঘণবসতিপূর্ণ একটি দেশ। তাই আমাদের বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। ফায়ার সার্ভিসের জন্য অনেক আধুনিক যন্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা যদি প্রথমেই আগুন নেভাতে পারি তাহলে অনেক দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে পারি। তাই প্রত্যেক মানুষকে নিতে হবে প্রশিক্ষণ। আতঙ্কিত না হয়ে কার্যকরীভাবে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য হাতে-কলমে আমাদের প্রশিক্ষণ দরকার। তাই আজকের এই মহড়া।

তিনি বলেন, আধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে চমৎকারভাবে মহড়াটি করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে সবাইকে অবহিত করা এবং একই সঙ্গে একটা মেসেজ দেওয়া যে, এ রকম ঘটনা ঘটলে আমাদের আগে থেকে সতর্ক থাকতে হবে। কিছু প্রশিক্ষণ দেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।

‘আমি মনে করি এ ধরনের মহড়া আরও বেশি বেশি করতে হবে। দুর্যোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করা ও জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে এটি আগে থেকেই একটি প্রস্তুতি বলে মনে করি।’ বলেন ফরহাদ হোসেন।

এসময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335