মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪০ অপরাহ্ন

কুড়িগ্রামে এক টাকার রেস্টুরেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুড়িগ্রামে অসহায় মানুষের জন্য চালু হয়েছে এক টাকার রেস্টুরেন্ট। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সদর উপজেলার চরসুভারকুঠি গ্রামে ব্যতিক্রমী রেস্টুরেন্টটি চালু করে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সপ্তাহে দুুদিন এক টাকায় পেট পুরে খেতে পারবেন পাঁচ শতাধিক অসহায়।

স্থানীয় ও আয়োজক সূত্র জানায়, এক টাকার এ রেস্টুরেন্টে কোমল পানীয়সহ বিরিয়ানি, পোলাও, ভাত, মাছ, মাংস, ডিমসহ ১২ পদের খাবার। মনোরম এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রেস্টুরেন্টটিতে ৫০ জন এক সঙ্গে খেতে পারবেন। একদিনে পাঁচ শতাধিক মানুষ খাবার খেতে পারবেন।

রেস্টুরেন্টে খেতে আসা মোছা. গোলাপী বেগম বলেন, এক টাকার রেস্টুরেন্টে নাতি-নাতনি, বিয়াইন, বোনসহ আসছি। হামরা গ্রামের মানুষ কোনো দিন চিন্তা করতে পারি নাই যে রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খামো। আজকে এক টাকায় পেট ভরে খেতে পেরে সবাই খুশি।

সত্তোরোর্ধ্ব বৃদ্ধ কাশেম আলী বলেন, বাবা মোর বয়স মেলা হইছে। কোনো দিন টাকার অভাবে বড় হোটেলে খাবার খেতে পারি নাই। চা-বিস্কুট খাইছি। এখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় সেটাও হয় না। কিন্তু বউসহ এক টাকায় এমন দামী খাবার খেতে পারবো ভাবতেই পারিনি।

রেস্টুরেন্টে আসা বুলবুলি আক্তার বলেন, বাচ্চা নিয়ে এসেছি এক টাকার হোটেলে। ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, সালাদ, ফল ও মিষ্টি খেলাম। কামলা দেওয়া সংসারে শহরের হোটেলে গেলে কম করে হলেও ৪-৫শত টাকা খরচ হতো। কিন্তু এখানে এক টাকায় খেতে পেরে স্বপ্ন মনে হচ্ছে।

স্বেচ্ছাসেবক হৃদয় বলেন, জীবনে প্রথমবারের মতো রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করছি। সেটিও বিনা পয়সায়। এতে করে উপলব্ধি করতে পারবো যারা নিয়মিত হোটেলে ওয়েটার, বাবুর্চিসহ কর্মচারীদের ঘাম ঝরানো শ্রম। সত্যি আমি বেশ গর্বিত প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জন্য এমন কষ্ট করতে পেরে।

স্বেচ্ছাসেবক প্রধান আকরুম হোসেন বলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দরিদ্র, এতিম, অসহায়দের খুঁজে বের করে তাদের টোকেন দেয়। পরে তারা এসে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সুবিধা নেন।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ প্রধান সালমান খান ইয়াছিন বলেন, সপ্তাহে দুদিন এ রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম চলবে। তবে এই কাজে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে প্রতিদিন করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ মানুষ এ রেস্টুরেন্ট থেকে সেবা দেওয়া সম্ভব। কুড়িগ্রামে এ রেস্টুরেন্ট একটি মডেল মাত্র। দেশের বিভিন্ন দরিদ্র এলাকায় এ ধরনের কার্যক্রম চালু করা গেলে ক্ষুধায় মানুষের কষ্ট থেকে মুক্তির পাশাপাশি পুষ্টিজনিত অভাবের রোগ থেকেও মুক্তি মিলবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335