শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন
জিটিবি নিউজ টুয়েন্টিফোর : নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় আবাসিক হল ভাঙচুর এবং শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের ১৬ জনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার এবং ১৯ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতজনকে ২০ হাজার টাকা করে, ১২ জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সভার সুপারিশ অনুযায়ী এবং রিজেন্ট বোর্ডের ৯ নভেম্বরের বিশেষ সভার অনুমোদনক্রমে ভাষাশহীদ আব্দুস সালাম হলে ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রদের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যক্রমের অভিযোগের ভিত্তিতে এই শাস্তি দেওয়া হলো।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মমিনুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
মারামারি ও ভাঙচুরের ঘটনায় রবিউল হক চৌধুরী (কৃষি বিভাগ), মো. জহিরুল ইসলাম (ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ), মো. আবদুর রহিম সিয়াম (কৃষি বিভাগ), জাহিদ হাসান শুভ (ইএসডিএম বিভাগ), কাজী আশরাফুল হক লিসান (ইএসডিএম বিভাগ), ইয়াসিন আরাফাত তারেক (ইএসডিএম বিভাগ), মো. শফিউর রহমান অন্তর (বিজিই বিভাগ), মো. সাইফুল্লাহ সনি (সিএসটিই বিভাগ), অর্নব সরকার (সমাজকর্ম বিভাগ), মো. তৌহিদুল ইসলাম (কৃষি বিভাগ), মো. আল ইমরান (আইসিই বিভাগ), আবদুল্লাহ আল মাসুদ (ফলিত গণিত বিভাগ), ওমর ফারুক (কৃষি বিভাগ), মো. মিরাজ মাহতাব (ইংরেজি বিভাগ) , আবদুল্লাহ আল নোমান (অর্থনীতি বিভাগ) ও কে এস এম সায়েমকে (মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ) ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
নেতৃত্বদান ও হুকুমদাতা হিসেবে মো. মুহাইমিনুল ইসলাম নুহাশ (ফার্মেসি বিভাগ), মাহবুবুর রহমান চৌধুরী (ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ), জাহিদ হাসান শুভ (ইএসডিএম বিভাগ), হাসানুজ্জামান (ইএসডিএম বিভাগ), আতাউল করিম রনি (কৃষি বিভাগ), শাফকাত আবির (ইংরেজি) ও আব্দুল্লাহ আল নোমানকে (ইংরেজি) ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঘটনায় উপস্থিত এবং বিভিন্নভাবে ব্যবহূত হওয়া আবদুল রহমান শিহাব (মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ), কাজী মাহমুদুর রহমান রহিম (মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ), আব্দুল্লাহ আল মাহদি (কৃষি বিভাগ), মো. আল আমিন (কৃষি বিভাগ), শাকিল মোস্তফা মানিক (অর্থনীতি বিভাগ), ইয়াসিন আরাফাত (বিলডাব্লিউএস বিভাগ), আক্তারুজ্জামান জিসান (বিলডাব্লিউএস বিভাগ), মো. আলি (ইংরেজি বিভাগ), জুবায়ের আহমেদ জনি (বিজিই বিভাগ), কামরুল হাসান (এফটিএনএস বিভাগ), আরফানুল হক (সিএসটিই বিভাগ) ও এহতেশামুল হক শুভকে (টিএইচএম বিভাগ) পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ আগস্ট রাত ৯টার দিকে হলের সামনে ধূমপান করাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম রবিন ও সাধারণ সম্পাদক এস এম ধ্রুব গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে বাগিবতণ্ডা হয়। এ নিয়ে রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ আব্দুস সালাম হলে উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপ লাঠিসোঁটা নিয়ে হলের বেশ কয়েকটি রুমের দরজা, জানালা, লাইট, ফ্যান, চেয়ার, টেবিল, ফুলের টব এবং বাথরুমের বেসিনসহ মূল্যবান জিনিস ভাঙচুর করে। পরদিন ১ সেপ্টেম্বর রাতে একই ঘটনার জের ধরে আবার সংঘর্ষ শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ড. ফিরোজ আহমেদ। এ সময় ছাত্রদের হামলায় তিনি আহত হন। এ ঘটনায় শিক্ষকসহ অন্তত ১০ ছাত্রলীগকর্মী আহত হন। পরে ১ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে এবং পরদিন ২ সেপ্টেম্বর দুপুরে ওই হলে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করে পুলিশ।