শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

বগুড়ায় তুচ্ছ ঘটনায় মা ছেলেকে বেধড়ক মারপিট, বেঁধে রাখার অভিযোগঃ পুলিশ কর্তৃক উদ্ধার

বগুড়া প্রতিনিধি।। বগুড়া শহরের বারপুর এলাকায় আবারো একই প্রভাবশালী পরিবারের বেধড়ক মারপিটের শিকার হলেন এলাকার হতদরিদ্র একটি অসহায় পরিবারের গৃববধু নাজনিন বেগম(৩০)। এসময় প্রায় ৪ঘন্টা প্রভাবশালীদের বাড়ীর মধ্য বেঁধে রাখা হয় তার কিশোর পুত্র স্কুল ছাত্র নাদিম পাইকার(১২)কে । পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এলেও মামলা নিতে তালবাহানার অভিযোগ ।
মারপিটের শিকার গৃহবধু বারপুর স্কুল পাড়া এলাকার নবিদুল পাইকারের স্ত্রী । তার ছেলে নাদিম স্থানীয় নূনগোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ।
এদিকে অব্যাহত ভয়ভীতি আর হুমকী ধামকীর মুখে থানা ফাঁড়ীতে এসেও অভিযোগ করতে পারছেননা পরিবারটি এমন গুরুত্বর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে. শহরের বারপুর স্কুল পাড়া এলাকার বাসিন্দা নবিদুল পাইকার পেশায় একজন গ্রিল মিস্ত্রী । স্বামী কাজে বাহিরে থাকায় তার অনোউপস্থিতিতে একই এলাকার প্রভাবশালী সন্তোষ তার ছেলে কাদের ও তার পারিবারে সদস্যরা প্রায়ই তুচ্ছ ঘটনার জের নিয়ে ওই আসহায় পরিবারটির উপর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। ইত্বপূর্বেও একাধিক বার তারা বিভিন্ন অজুহাতে গৃহবধু নাজনিনকে মারপিট করা সহ তার উপর মানুষিক অত্যাচার চালিয়েছিল ।এ ঘটনায় থানায় সাধারন ডাইরী করার পরও প্রভাবশালী হবার কারনে প্রতিবারই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তাদের দোষররা আপোস মিমাংসার নাম করে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে আসছিল ।
এবারও তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার দুপুরে নিজেদের জায়গা থেকে পাতা কুঁড়াতে বারন করার অজুহাতে এলাকার সন্তোষ ও তার পরিবারের সদস্যরা গৃহবধু নাজনিনকে বেধড়ক ভাবে মারপিট করে স্বামীর অনোউপস্থিতিতে তাকে বাড়ীতে একা পেয়ে বর্বর কায়দায় নির্যাতন চালায় ।

এতে করে গৃহবধু মারাত্বক ভাবে আহত হয় । তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের কারনে অশুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এর এক পর্যায়ে তার ছেলে নাদিম বাড়ীতে এসে মার অবস্থা দেখে ঘটনার প্রতিবাদ করে । এতে করে এলাকার মৃত করিমের পুত্র সন্তোষ ও তার ছেলে কাদের ক্ষুব্ধ হয় । এসময় তার স্ত্রী কহিনূর বেগম ছেলে আব্দুল কাদের সহ অন্যরা কিশোর নাদিমকেও মারপিট করে নিজেরদের বাড়ীতে তুলে নিয়ে যায় তাকে । সেখানে মারপিট করার একপর্যায়ে তাকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে তারা।
পরে বিকালে এঘটনার প্রতিবাদে আহত গৃহবধু নাজনিন ছেলেকে উদ্ধারে বগুড়া সদর থানার স্বরনাপন্ন হয়। সেখান থেকে বিষয়টি দেখার জন্য স্থানীয় উপশহর ফাঁড়ীতে যেতে বলা হয় তাকে। পরে ছেলেকে উদ্ধারে মা নাজনিন বেগম উপশহর ফাঁড়ীতে গেলে সন্ধ্যার আগে সেখানকার ফাঁড়ী পুলিশের এসআই গফুর তৎক্ষনাত সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার ৪ঘন্টা পর কিশোর নাদিমকে উদ্ধার করে ফাঁড়ীতে নিয়ে আসে।

এদিকে সন্ধ্যার পর ভুক্তভোগী নাজনিন বেগম স্থানীয় ফাঁড়ীতে অভিযোগ দিতে গেলে এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ও একশ্রেণীর দালাল বিষয়টি আগের মত মিমাংসার কথা বলে তাকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং মামলা করলে বিষয়টি খারাপ হবে বলে শাষায় ।
এঘটনার সংবাদে,রাত ১০টার দিকে কয়েকজন সংবাদ কর্মী স্থানীয় ফাঁড়ীতে গেলে ভুক্তভোগী গৃহবধু নাজনিন বেগম সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে খুড়িয়ে তাদের কাছে অভিযোগ জানাতে এলে তাকে টানা হিচরা করে সেখান থেকে বার বার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মিমাংসার অজুহাত দেখিয়ে সাংবাদিকদের বার বার তাদের ছবি ধারন করতে বাঁধা দেয়া হয় । পরে সাংবাদিকরা ভুক্তভোগী মা ছেলে ছবি তুললে সেখানে থাকা তাদের কয়েকজন পরিছন্ন ভাবে তাদের মা ছেলেকে হুমকী প্রদান করে । এ সময় হতভাগ্য মা, ছেলে সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে তাদের নিরাপত্তার চান।

এদিকে রাতে এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে ফাঁড়ী পুলিশের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শফিকের সাথে কথা বলা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, যদি কেউ অভিযোগ না করে, কিম্বা অভিযোগ করতে না চায় তাহলে পুলিশের কি করার আছে? পরে তিনি আবারো জানান, সম্ভবত এ বিষয়ে তারা নিজেরা নিজেরা উল্লেখিত বিষয়ে মিমাংসা করে নিয়েছে ।এদিকে ভুক্ত ভোগী গৃহবধু অভিযোগে জানান ,ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে মামলা করতে দেয়া হচ্ছেনা
প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, বার বার কি নিপীড়িত নিস্ব অসহায় হতভাগ্য পরিবারটি একই ভাবে নির্যাতিত হয়ে এভাবেই নিস্পেষিত হতে থাকবে । তারা কি কোন কালেও অন্যাযের বিচার পাবেনা ?বার বারই কি তারা অভিযোগ করা থেকে এভাবেই বঞ্চিত হবে ?

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335