শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চলন্ত বাসে গার্মেন্টসকর্মী শিউলি আক্তারের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন তাঁর সহকর্মী আরিফ মিয়া। এতে ব্যর্থ হয়ে শিউলিকে বাস থেকে ফেলে দেন আরিফ। এতে শিউলি বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওই বাসের চালক রুহুল আমিন (৩৫) এসব কথা বলেছেন।
বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আশিকুজ্জামানের আদালতে ওই জবানবন্দি নেওয়া হয়। রাত সোয়া আটটার দিকে টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (মির্জাপুর সার্কেল) মো. আফসার উদ্দিন খাঁন স্থানীয় সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। এ সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুল হক ও পরিদর্শক (তদন্ত) শ্যামল কুমার দত্ত উপস্থিত ছিলেন।
চালক রুহুল আমিনের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পাংখারচর গ্রামে। এ ঘটনায় তাঁকে ছাড়াও নিহত শিউলির সহকর্মী মির্জাপুরের পুষ্টকামুরী চরপাড়া গ্রামের আরিফ মিয়া (৩৫) ও বাস চালকের সহকারী পাংখারচর গ্রামের সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মো. আফসার উদ্দিন খাঁন বলেন, গ্রেপ্তার বাসচালক রুহুল আমিনের স্বীকারোক্তি মতে, ঘটনার দিন গত ২৬ জুলাই সকাল সোয়া সাতটার দিকে শিউলি ও আরিফ তাঁদের কর্মস্থলে যেতে গ্রামীণ শুভেচ্ছা পরিবহনের ওই বাসটিতে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৩৬৩৭) ওঠেন। তাঁরা দুজনই মির্জাপুরের গোড়াই শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত একটি কারখানায় চাকরি করতেন। আরিফ বাসে উঠেই শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায় শিউলির। এতে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আরিফ শিউলিকে ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে দিলে ঘটনাস্থলেই শিউলি মারা যান। ওই সময় শিউলির মৃত্যুর ঘটনাটি বুঝতে পেরে আরিফ নিজেকে বাঁচাতে কারখানায় চলে যান।
মো. আফসার উদ্দিন খাঁন বলেন, পুলিশ ওই ঘটনার প্রকৃত তথ্য জানতে নানাভাবে তৎপরতা চালায়। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত সিসি টিভি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করে বাসটি শনাক্ত করা হয়। এরপর ওই বাসের চালক ও তাঁর সহকারী গ্রেপ্তার হয়। পরে চালকের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ আরিফকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি মিজানুল হক বলেন, ‘দুজনের ধস্তাধস্তির পরও চালক বাস না থামিয়ে নিজ গতিতে চলছিলেন। এ কারণে ঘটনায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত আরিফ মিয়া ও সোহেল রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য টাঙ্গাইলের আদালত তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। চালক রুহুল আমিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে মামলাটির বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে।’