শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৪৫ অপরাহ্ন

‘দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় জলাশয় ভরাট করে ভবন তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিবছর একলাখ ভবন তৈরি হচ্ছে। কোনো নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। এতে শহর বিপদের মুখে পড়ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ঝুঁকি নিরসনে সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজের মাধ্যমে নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া এখন দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করতে হবে।

‘স্ট্রেন্থদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স’ (সুপার) কনসোর্টিয়াম প্রকল্প আয়োজিত দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারবিষয়ক এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউমেনিটেরিয়ান এইডের (একো) অর্থায়নে আয়োজিত এ কর্মশালায় দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বিষয়ে সচিত্রে উপস্থাপনা করা হয়। কর্মশালায় অতিথিরা দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন।

মিজানুর রহমান বলেন, এখন আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে হবে। এই কর্মশালায় সুপার প্রকল্প দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে কাজ করেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আগুনের খবর খুব দ্রুত পাওয়া যাবে। স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় কাজটি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) গঠন। যেটা ছিল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মতো একটি ধারণা। যা সারাবিশ্বে অনুকরণীয় মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে এবং সাইক্লোনের মতো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বড় সক্ষমতা দিয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইঞ্জিনিয়ার আলি আহমদ খান বলেন, ফায়ার সার্ভিসে কাজ করতে এসে অনেক বড় বড় দুর্যোগের বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়েছে। রানা প্লাজা, এফআর টাওয়ার, চুড়িহাট্টার দুর্ঘটনার মতো ঘটনা বলে দেয় দুর্যোগ মোকাবিলায় দরকার প্রতিরোধ ব্যবস্থা। ফায়ার সার্ভিস হয়তো দুর্যোগ পরবর্তী কুইক রেসপন্স টিম হিসেবে কাজ করে। কিন্তু দুর্যোগ প্রতিরোধে কার্যকরী উদ্যোগ জরুরি। এক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

কর্মশালায় বক্তারা আরও বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। একই সঙ্গে জরুরি কার্যক্রম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রাথমিক শনাক্তকরণের মাধ্যমে দুর্যোগের ঝুঁকি নিরসন করতে হবে।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন- ডিজি একো বাংলাদেশের হেড অব অফিসের আন্না অরলান্ডি, ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইঞ্জিনিয়ার আলি আহমদ খান, ঢাকা ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীরামাপ্পা গঞ্চিকারা, ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও জরুরি সাড়াদান ইউনিটের প্রধান মাসুদ রানা, সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আ ম নাসির উদ্দিন ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কম্পিউটার সায়েন্স প্রকৌশল বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং সিএসসি বিভাগের প্রফেসর ড. খলিলুর রহমান।

কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আ ম নাসির উদ্দিন বলেন, স্ট্রেন্থদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স’ সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্প, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি কৃত্রিক বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক সমাধান কল্যাণপুর বস্তিতে পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করেছে। যা আগুন এবং জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত দুর্যোগ ঝুঁকির আগাম পূর্বাভাস দিতে সক্ষম। ফলে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি রোধ অনেকাংশে সম্ভব হবে।

নাসির উদ্দিন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে ১৫-২০ মিনিট লেগে যাচ্ছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে দুর্যোগের ১০ সেকেন্ডের মধ্যে খবর পাওয়া যাবে। এতে দুর্যোগ ঝুঁকির প্রথমেই জানা গেলে খুব সহজেই মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউমেনিটেরিয়ান এইডের অর্থায়নে জনসাধারণ এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মাঝে দুর্যোগে সহনশীলতা গড়ে তোলার জন্য ‘সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে অ্যাকশনএইড, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন। এ প্রকল্পে কৌশলগত সহায়তাকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তর (ইউএনআরসিও)।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335