শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫৬ অপরাহ্ন

বগুড়ার উন্নয়নে রাজনৈতিক দর্শণ

জিটিবি নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় রয়েছে পরপর তিন দফা। কিন্তু দীর্ঘ এ সময়েও জেলাওয়ারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পিছিয়ে রয়েছে বগুড়া। এখন আওয়ামী লীগের চলতি মেয়াদের শেষ সময়। স্বাভাবিক কারণেই এই অঞ্চলের মানুষের কাছে দলের নেতাকর্মীরা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে ভোট কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।
আওয়ামী লীগ বগুড়া থেকে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে একটিও আসন না পেলেও ২০০৮ ও ২০১৩ এবং ২০১৮ নির্বাচনে সাতটির মধ্যে দুটি আসনে জয়লাভ করে। সর্বশেষ উপ-নির্বাচনেও ৫০ বছর পর বগুড়া সদর আসনটিতে নৌকার প্রার্থী।জয়লাভ করলেও বিসিবির কর্মকান্ডে তা কুলষিত হয়েছে বলে সাধারণ মানুষের মুখে উঠেছে।

সাধারণ মানুষের অব্যাহত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহান জাতীয় সংসদে বগুড়াবাসীর পক্ষ থেকে কয়েক দফায় কয়েকটি দাবী দাওয়া উত্থাপন করেন সাংসদ মোঃ রেজাউল করিম বাবলু, এই সাংসদ বলেন বগুড়া উত্তরবঙ্গের প্রবেশ দ্বার, বগুড়ার উন্নয়ন হলে গোটা উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন হবে এবং সারাদেশের মানুষ ইহার সুফল ভোগ করবে। তিনি আরো বলেন বগুড়ার উন্নয়নে আমার সাধ্যমত ছুটাছুটি করছি তবে ভবিষ্যতে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখতে পারছি।

জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, এসব ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বগুড়ার মানুষ এখনও উন্নয়ন হবে বলে বিশ্বাস করছে। বিএনপি সরকারের শাসনামলে বগুড়ার উন্নয়ন হলেও হাজার হাজার মানুষ বঞ্চনার শিকার হয়েছে। বনানী-মাটিডালি সড়ক সম্প্রসারণ এবং অনেক প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। তাদের পুনর্বাসনে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা করা হয়নি। বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন, দখলবাজি, হামলা ও মামলার শিকার হয়েছে বহু মানুষ। এসব নানা কারণে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা এই দলটির নেতাকর্মীরাও এখন চাঁজাবাজি, দখলবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এসব কারণে বগুড়ার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনে জেলায় ভোটের হিসাব সম্পূর্ণ পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। যদিও জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার দাবি- বগুড়ার উন্নয়ন যে হয়নি কথাটা সঠিক নয়। তবে বগুড়াবাসীর অনেক দাবি অসম্পন্ন রয়েছে ।

দাবীগুলোর মধ্যে বগুড়াকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা, বিমানবন্দর চালু, শহরের করতোয়া নদী দখলমুক্ত করে পুনর্খনন, প্রস্তাবিত টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপন, নতুন শহীদ মিনার নির্মাণ, ছেলে ও মেয়েদের জন্য দুটি সরকারি বিদ্যালয় ও বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ রেলপথ স্থাপন, শহর থেকে মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত পৃথক সড়ক নির্মাণ, সাংবাদিকদের আবাসন প্রকল্প, আধুনিক ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণ, দ্বিতীয় বিসিক শিল্পনগরী স্থাপন, এই অঞ্চলকে অর্থনৈতিক জোন ঘোষণা, কৃষি মেশিনারি শিল্পের বিকাশে পৃথক জোন করা, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও লাইব্রেরি স্থাপন, মহাস্থানগড়কে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা, নাব্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে যমুনা নদী খনন, বগুড়া আবহাওয়া অফিসের আধুনিকায়ন, হার্ট ফাউন্ডেশন, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার ও সারিয়াকান্দিতে ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপন করা।
বগুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দরটি বাণিজ্যিকভাবে চালুর ব্যাপারে একটি প্রস্তাব অনেক আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখনও এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা মেলেনি। বিমানবন্দরটি বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ স্কুল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। রেললাইন স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু বলেন, এই সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী। বগুড়ার উন্নয়ন হচ্ছে না তা বলা যাবে না। মানুষের চাহিদার কোনো শেষ নেই। তবে বগুড়াবাসী হিসেবে আমাদের চাহিদা রয়েছে অনেক কিছুর। এসব ব্যাপারে নেত্রীর কাছে জানানো হয়েছে। আমরা ভালো কাজের মাধ্যমেই মানুষের মন জয় করতে চাই।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335