শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন

মৌলভীবাজার রাতে ঠান্ডা দিনে গরম, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাতে ঠান্ডা দিনে গরম। আবহাওয়ার এ বিরূপ প্রভাব নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন মৌলভীবাজারবাসী। সর্দি-কাশিতে ভুগছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষজন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অঞ্চলভিত্তিক জলবায়ু ও আবহাওয়ার পরিবর্তন আসছে। চলতি বছর এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। সিলেট অঞ্চলে গত পাঁচ বছরে আবহাওয়ার এমন তারতম্য দেখা যায়নি।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। বাংলাদেশে পাহাড় টিলা কাটা এবং বৃক্ষলতা নির্মূলের কারণে পরিবেশের বিপর্যয়ের ধাক্কা লেগেছে। শীত ও গরমের ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে না।

শীতকে বিদায় দিয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বসন্তের শুরু হয়েছে। এদিন সকালেও শীতের প্রকোপ দেখা গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার তাপমাত্রা বেড়ে হালকা গরম পড়েছে।

মঙ্গলবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়। তবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৫ আর সর্বোচ্চ ছিল ২৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৮ আর সর্বোচ্চ ছিল ২৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.২ আর সর্বোচ্চ ছিল ২৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মৌলভীবাজার পৌর শহরের ব্যবসায়ী শওকত আলী বলেন, ফাগুন মাস এসেছে তবুও রাতে প্রচণ্ড ঠান্ডা নামে। দিনের বেলা আবার গরম লাগে। এ নিয়ে অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করছি। গ্রামের লোকজন সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। শীতের কাপড় নিয়ে বেরোলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার খুলতে হয়। অনেক সময় শরীর দিয়ে ঘাম ঝরে। যে কারণে সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখা দেয়।

মৌলভীবাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, রাতে শীত দিনে গরম পড়ছে। এর প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশি রোগের ওষুধ বেশি বিক্রি হচ্ছে।

এ নিয়ে কথা হলে মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ  বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৌলভীবাজারের আ স ম সুহেল  বলেন, বিশ্বে জলবায়ু আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটছে। অমাদের অঞ্চলে পাহাড় টিলা কাটা ও বৃক্ষলতা নির্মূলের কারণে প্রকৃতির বিপর্যয় ঘটছে। এতে শীত ও গরমের তারতম্য দেখা দিয়েছে। এটা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সংকেত।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান  বলেন, চলতি বছর আবহাওয়ার বড় পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। এটা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী  বলেন, অঞ্চল ভিত্তিক আবহাওয়ার বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। ২০২২ সালে সিলেট অঞ্চলে ৯১ দিন বৃষ্টি হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ এ বৃষ্টিপাতের শুরুটা ছিল শীতের মধ্যখান থেকে। পৌষ ও মাঘ মাসেও বৃষ্টি হয়েছে। এবার এখনো বৃষ্টি নামেনি।

তিনি আরও বলেন, চলতি শীত মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত পাঁচ বছরে এমনটা ছিল না।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335