বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৯ অপরাহ্ন

কুমিল্লা গাড়ির এলপিজি রান্নায় ব্যবহার, বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) রিফিল করা হচ্ছে রান্নার কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারে। এতে যে কোনো সময় হতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ৪০ কিলোমিটার এলাকা ও এর আশপাশে মোট ১৫টি এলপিজি গ্যাসের স্টেশন রয়েছে। এসব স্টেশনের অধিকাংশগুলোতেই ১২ ও ৩৫ কেজি ওজনের রান্নার কাজে ব্যবহৃত সিলিন্ডারে গাড়ির জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত এলপিজি রিফিল করা হচ্ছে। দাম রাখা হচ্ছে নির্ধারিত বাজার মূল্য থেকে প্রায় চারশ টাকা কম।

বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপিজিতে ৭০ শতাংশ কোপেন ও ৩০ শতাংশ ডিউটেন সংমিশ্রণ করা হয়। আর গাড়িতে ৬০ শতাংশ কোপেন ও ৪০ শতাংশ ডিউটেন সংমিশ্রণ করে ব্যবহার করতে হয়। তবে এক্ষেত্রে এলপিজি স্টেশনগুলো কোপেন ও ডিউটেন সংমিশ্রণে গরমিল রেখেই সিলিন্ডারগুলোতে রিফিল করে দিচ্ছে। আর এসব সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে রান্নার কাজে। এতে যে কোনো সময় হতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। কারণ গ্যাস তৈল জাতীয়। রিফিল সংমিশ্রণ সঠিকভাবে না হলে গ্যাস সিলিন্ডারের নিচে বসে থাকে। নাড়াচাড়ার কারণে বিস্ফোরণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের নেতওয়া এলাকায় এইচবিএলজিপি স্টেশনে নামিদামি এলপিজি কোম্পানিগুলোর সিলিন্ডারে রিফিল করা হচ্ছে গাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাস। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর পিকাপভ্যান, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পরিবহন যোগে খালি সিলিন্ডার এনে রিফিল শেষে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয় এসব সিলিন্ডার। সরকারের নির্ধারিত মূল্য থেকে দাম কম রাখায় দিন দিন বাড়ছে এর চাহিদা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চিওড়া ইউনিয়নের একাধিক সিলিন্ডার ব্যবসায়ী জানান, এইচবিএলজিপি স্টেশনে সিলিন্ডার রিফিল করার কারণে আমাদের বিক্রি আগের থেকে অনেক কমে গেছে। কারণ তারা বাজার মূল্যর চেয়ে তিনশ থেকে চারশ টাকা কমে বিক্রি করছে। এতে সাধারণ মানুষ রিফিলে ঝুঁকি থাকা শর্তেও সেখান থেকে গ্যাস নিচ্ছেন। বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই।

এ বিষয়ে জানতে এইচবিএলজিপি স্টেশনের মালিক হুমায়ুন পাটোয়ারীকে মোবাইলফোনে কল করা হলে তিনি  বলেন, আপনার কাছে বক্তব্য দিতে আমি বাধ্য নই। এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

যমুনা এলপিজি গ্যাসের সিনিয়র মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. আলা উদ্দিন বলেন, চিওড়ায় নামিদামি কোম্পানিগুলোর সিলিন্ডারে কম দামে গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজি রিফিল করা হচ্ছে। রান্না কাজে ব্যবহৃত এলপিজি আর গাড়িতে ব্যবহৃত এলজিপি এক নয়। সঠিকভাবে রিফিল সংমিশ্রণ না হওয়ার কারণে গ্যাসগুলো সিলিন্ডারের নিচে বসে থাকে। এতে সিলিন্ডার বোতল নাড়াচাড়ার ফলে বিস্ফোরণের আশঙ্কা অনেক বেশি।

কুমিল্লার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. জাকির হোসেন  বলেন, এ রকম কাজে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। সঠিকভাবে তথ্য-প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন  বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খতিয়ে দেখছি, সত্যতা পেলে যেসব স্টেশন এসব কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335