বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় স্কুলছাত্রী জেসিকা মাহমুদার মৃত্যুর ঘটনায় তার বন্ধু বিজয় রহমানের বাবা-মাকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দিনগত রাতে তাদের আটক করা হয়। তারা হলেন মুন্সিগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান ও মা কানিজ ফাতেমা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুমূর্ষু অবস্থায় জেসিকাকে সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসকদের কাছে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার কথা বলেন বিজয়। এরপর পালিয়ে যান তিনি। গুরুত্বর অবস্থায় মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালে থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে মারা যান জেসিকার।
জেসিকা পৌর শহরের সরকারি এভিজেএম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও সদর উপজেলার কেওয়ার এলাকার সেলিমের মেয়ে। সে মায়ের সঙ্গে শহরের কোর্টগাঁও এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতো।
জেসিকার ভাই জিদান বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ি থেকে ঘুরতে বের হয় জেসিকা। সন্ধ্যা পর্যন্ত সে বাড়িতে ফিরেনি। ৬টার সময় হাসপাতাল থেকে বাড়ির পাশের প্রতিবেশী বিজয় নামের এক বন্ধু ফোন দিয়ে জানায় জেসিকার অবস্থা খারাপ, সে ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে। আমরা হাসপাতালে যাওয়ার আগেই বিজয় চলে যায়। ঢাকায় নেওয়ার পথে বোনের মৃত্যু হয়।’
জিদানের দাবি, ‘এটা হত্যাকাণ্ড। ওরা আমাদের বলছে ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে। আর হাসপাতালে জানিয়েছে পড়ে গেছে।’
নিহতের মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে ডাকে নিয়ে অনেক নির্যাতনের পর মেরে ফেলছে বিজয়। আমি এর বিচার চাই।’
হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক বলেন, সন্ধ্যায় ওই কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে একটি ২০-২১ বছরের ছেলে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছিল। রাত ৮টার দিকে আবার মৃত অবস্থায় মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়। তার মুখ ও শরীরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আঘাতে চিহ্ন আছে।
এ চিকিৎসক আরও বলেন, পাঁচ তলার ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে ছেলেটি। তবে এমন ঘটনা হলে মাথায় রক্তক্ষরণের চিহ্ন থাকতো, যা ওই মেয়েটির ছিল না।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেকুজ্জামান বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালে আছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বন্ধুর বাবা-মাকে আনা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে অনেককে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। যেহেতু মেয়েটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে তাই অপমৃত্যু মামলা হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বোঝা যাবে মৃত্যুর কারণ কী। সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।