শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৩ অপরাহ্ন

আওয়ামী লীগে কার নেতৃত্বের বয়স কত?

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ দিন নেতৃত্বের দিক থেকে আওয়ামী লীগের বর্তমান সিনিয়র নেতা দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি টানা ৪১ বছর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। এর আগে দীর্ঘদিন দলের নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা ছিল বিগত কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রয়াত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টানা ৫০ বছর নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্তমান নেতৃত্বের সবাই এসেছেন শেখ হাসিনার হাত ধরে। এদিকে বয়স বিবেচনায় বর্তমানে শেখ হাসিনার চেয়ে সিনিয়র রয়েছেন ৬ নেতা।

দলের ২২তম সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জাতির পিতা পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিব‍ুর রহমান সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর নির্বাসনে থাকা অবস্থায় অনেকটা হঠাৎ আওয়ামী লীগের সভাপতি হন শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালে দলের কাউন্সিল শেখ হাসিনাকে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সেই থেকে ১০ টার্মে টানা ৪১ বছর তিনি আওয়ামী  লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বিদায়ী কমিটিতে তার থেকে সিনিয়র নেতা হিসেবে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী থাকলেও নতুন কমিটিতে কেউ নেই। সাজেদা চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর সময়কালে ১৯৭২ সালে দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পান। এরপর থেকে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করে গেছেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর মৃত্যুর দিন পর্যন্ত তিনি দলের সভাপতিমণ্ডলীর সিনিয়র সদস্য ছিলেন।

সভাপতিমণ্ডলীর বর্তমান সিনিয়র সদস্য মতিয়া চৌধুরীর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা শেখ হাসিনার চেয়ে বেশি হলেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিক হিসেবে তিনি পিছিয়ে রয়েছেন। বামপন্থি রাজনীতি দিয়ে অগ্নিকন্যাখ্যাত মতিয়া চৌধুরীর রাজনীতি শুরু। তিনি ন্যাপের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আশির দশকের শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার হাত ধরে ১৯৮৭ সালের সম্মেলনে দলের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসেন। এরপর থেকে তিনি টানা নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। গত ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত দলের ২২তম সম্মেলনে তিনি ষষ্ঠবারের মতো সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা ওবায়দুল কাদেরও ১৯৮৭ সালে মূল দলে জায়গা পান। ওই বছর শেখ হাসিনা তাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত করেন। পর্যায়ক্রমে তিনি শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক এবং সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৬ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এবার তিনি টানা তৃতীয়বারের মতো এ পদে নির্বাচিত হলেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগে এর আগে কেউ টানা তিনবার সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হননি।

আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনও ১৯৮৭ সালে সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হওয়ার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে স্থান পান। এছাড়া তিনি তিন দফায় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ও এক দফায় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। মাঝে দুটি কমিটিতে তিনি দলের বাইরেও ছিলেন।

১৭তম সম্মেলনে (১৯৯৭ সাল) দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হওয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে শেখ ফজলুল করিম সেলিমের আবির্ভাব ঘটে। এরপর ২০০২ সালের কমিটিতে তার জায়গা হয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে। এর ধারাবাহিকতায় তিনি একই পদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির ১ নম্বর সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ১৯৯৭ সালে দলের ১৭তম সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নেতৃত্বে আসেন। এর পর থেকে তিনি টানা একই পদে মনোনীত হয়ে আসছেন।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর পদে নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে ২০০২ সালে কাজী জাফর উল্ল্যাহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসেন। এর পরবর্তী সব সম্মেলনে তিনি একই পদে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

বর্তমান কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পাওয়ার মধ্য দিয়ে ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে নেন। ২০০৯ ও ২০১২ সালের কমিটিতে তিনি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৬ সালে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। বিদায়ী ও বর্তমান কমিটিতে হয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।

উপ-প্রচার সম্পাদকের পদ পেয়ে ২০০২ সালে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পান অসীম কুমার উকিল। ২০০৯  এবং ২০১২ সালের সম্মেলনেও তিনি একই পদ পান। বর্তমান ও বিদায়ী কমিটিতে তিনি সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক ২০০৯ সালে প্রথমে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগের পদ পান। একই কমিটিতে তিনি পরে যুগ্ম সম্পাদক হন। নানক ২০১২ এবং ২০১৬ সালেও যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে নানক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের দায়িত্ব পান। গত ২৪ ডিসেম্বর সম্মেলনে তিনি আবারও একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হওয়ার মাধ্যমে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। এরপর আরও দুটি কমিটিতেও একই পদ পান। তিনি বর্তমান ও বিদায়ী মেয়াদে পেয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব।

বিএম মোজাম্মেল হক উপ-দফতর সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পান। ২০০৯ সালে তিনি দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বর্তমান পর্যন্ত টানা ৫ মেয়াদে একই দায়িত্ব পালন করছেন।

২০০২ সালে দলের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হন। তিনি ২০০৯, ২০১২ ও ২০১৬ সালে একই পদ পান। ২০১৯ সালে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। এবারও তিনি বহাল রয়েছেন।

বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে ২০০২ সালে আওয়ামী লীগে স্থান পান ড. হাছান মাহমুদ। ২০০৯ সালেও তিনি একই পদে নির্বাচিত হন। তিনি ২০১২ এবং ২০১৬ সালেও দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হন। তিনি ২০১৯ সালে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। এবারও তিনি একই পদে আছেন। আগেরবার পদক্রমে তিন নম্বরে থাকলেও এবার তাকে এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে মুহম্মদ ফারুক খান ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের পদ পান। পরে তিনি আন্তর্জাতিক সম্পাদক হন। তিনি ২০১৬ সালে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়ে পর পর তিন টার্ম একই দায়িত্ব পালন করছেন।

২০০২ সালে আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত টানা একই পদে আছেন এইচএন আশিকুর রহমান।

মাহবুব উল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনি ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তারা দুজনই টানা ৫ টার্মে একই দায়িত্ব পেয়েছেন।

২০০২ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি পর পর তিন টার্ম একই পদে মনোনীত হন। ২০১৯ সালে কমিটি গঠনের মাঝামাঝি সময়ে তাকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত করা হয়। নতুন টার্মেও তাকে একই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়ে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিন টার্ম একই পদে মনোনীত হন। ২০১২ সালে কমিটির মাঝামাঝি সময়ে তাকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়। এরপর থেকে তিনি এ পদে আছেন।

শাজাহান খান ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হন। টানা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলেও দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্ব পাননি তিনি। ২০১৯ সালের কমিটিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচন হন। এবারের সম্মেলনেও তিনি একই পদ পেয়েছেন।

অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ইসলাম ২০১৬ সালে দলের কেন্দ্রীয় নেতা মনোনীত হন। ২০১৯ সালেও তিনি একই পদে মনোনীত হন। পরে মেয়াদের শেষ দিকে তাকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়। ২০২২ সালের সম্মেলনেও তিনি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

জাতীয় চার নেতার অন্যতম এইচএম কামারুজ্জামানের ছেলে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ২০০২ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হন। এরপর টানা চার টার্ম তিনি একই পদে মনোনীত হন। তিনি ২০১৯ সালের কমিটি গঠনের সময় বাদ পড়লেও ওই কমিটির মেয়াদের শেষদিকে তাকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচন করা হয়েছে। এবার নতুন কমিটিতেও তিনি একই দায়িত্ব পেয়েছেন।

জাতীয় চার নেতার অন্যতম তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেন। তিনি ২০১৬ সালের কমিটিতেও একই পদে মনোনীত হন। ২০১৯ সালের কমিটি গঠনের সময় তিনি দল থেকে বাদ পড়েন। তবে মেয়াদের শেষ দিকে তাকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত করা হয়। এবারের সম্মেলনেও তিনি এই পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে ওয়াসিকা আয়শা খান ২০১৯ সালে দলের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে নেন। এবারও তিনি একই পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ২০০৯ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক হন। তিনি ২০১২ ও ২০১৬ সালেও একই দায়িত্ব পান। তিনি বিগত মেয়াদে যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। এবারও রয়েছেন একই পদে।

২০০৯ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়ে টানা ৫ টার্ম একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন আহমদ হোসেন ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

আফজাল হোসেন ২০০৯ সালে দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে তিন টার্ম একই দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১৯ সালে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। এবারও তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন।

ফরিদুন্নাহার লাইলী ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পান ২০০৯ সালে। ২০১২ সালেও তিনি একই দায়িত্ব পান। ২০১৬ সালে তিনি কৃষি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে পর পর তিন টার্ম একই দায়িত্ব পেয়েছেন।

মৃণাল কান্তি দাশ দলের উপ-দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পান ২০০৯ সালে। ২০১২ সালেও তিনি একই দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১৬ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। বর্তমানে একই পদে আছেন।

সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম আমিন, আখতার জাহান ২০০৯ সালে প্রথমে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। সৈয়দা জেবুন্নেছা হক এবার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন। এছাড়া সুজিত নন্দী ও আমিন ২০১২ সালেও একই দায়িত্ব পান। ২০১৬ সালে আমিন উপ-প্রচার সম্পাদক হন এবং সুজিত নন্দী হন ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। ২০১৯ সালেও আমিন উপ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে এবার ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন। অপরদিকে সুজিত নন্দীও আরেক টার্ম ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে এবার হয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদক।

২০১৬ সালে প্রথমে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ও পরে উপ-দফতর সম্পাদকের পদে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসেন ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। পরে ২০১৯ সালের সম্মেলনে তিনি দলের পূর্ণ দফতরের দায়িত্ব পান। এবারও তিনি দফতর সম্পাদক হয়েছেন।

ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মনোনীত হন। তিনি দলের দফতর সম্পাদক হন। বিগত ও বর্তমান কমিটিতে তিনি পেয়েছেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব।

বঙ্গবন্ধুর সময়কালের রাজনীতিক পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পর পর তিন টার্ম একই দায়িত্ব পালন করছেন।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ২০১৬ সালে পরিবেশ ও বন বিষয়ক সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই টানা একই দায়িত্ব পালন করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, শামসুন্নাহার চাপা শিক্ষা ও মানবকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও রোকেয়া সুলতানা স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তিন টার্ম দায়িত্ব পালন করে চলছেন।

২০১৬ সালে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন আমিরুল ইসলাম মিলন, আনোয়ার হোসেন, গোলাম রব্বানী চিনু, ইকবাল হোসেন অপু, পারভীন জামান কল্পনা, মেরিনা জামান, মারুফা আক্তার পপি ও রেমন্ড আরেং। এরপর থেকে তিন টার্মই তারা একই পদে আছেন। ২০১৬ সালে দলের কেন্দ্রীয় নেতা হন ড. শাম্মী আহমেদ। পরে তিনি আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হন। এবারও তিনি এ পদে নির্বাচিত হয়েছেন।এসএম কামালও ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। তিনি ২০১৯ ও ২০২২ সালে হন সাংগঠনিক সম্পাদক।

অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরুও ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। ২০১৯ ও ২০২২ সালে তিনি দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. সেলিম মাহমুদ ২০১৯ সালে দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের সম্মেলনেও তিনি একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহম্মদ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর ২০২০ সালের শেষ দিকে অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা তার স্থলাভিষিক্ত হন। ২০২২ সালের কমিটিতেও তিনি একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

বিদায়ী কমিটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি গত নভেম্বরে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলে মহিলা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান জাহানারা বেগম। এর এক মাস পর অনুষ্ঠিত ২২তম সম্মেলনের সময়ও তিনি একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১৯ সালের সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবারও একই পদ পেয়েছেন।

এদিকে সাখাওয়াত হোসেন শফিক ২০১৯ সালের সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হলেও এবার হয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

২০২০ সালে দলের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হন সিদ্দিকুর রহমান। ২০২২ সালের সম্মেলনেও তিনি এ পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১৯ সালের সম্মেলনে দলের উপ-দফতর সম্পাদক নির্বাচিত হন সায়েম খান। এবারও তিনি একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

২০০৯ সালের কমিটিতে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন বিপুল ঘোষ। এরপরের সম্মেলনে তিনি দল থেকে বাদ পড়েন। তবে এবার ২০২২ সালের সম্মেলনে আবার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে তাকে।

দিপঙ্কর তালুকদার ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ২০তম সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে টানা তিন টার্ম একই পদে মনোনীত হয়ে আসছেন তিনি।

ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, সফুরা বেগম, সানজিদা খানম, হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, আনিসুর রহমান, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা, সাঈদ খোকন ও আজিজুস সামাদ ডন ২০১৯ সালের সম্মেলনের পর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন। এবারও তারা স্বপদে বহাল আছেন।

সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম ২০১৯ সালের সম্মেলনের বেশ পরে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন। এবার তাকে উপ-প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে।

যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে মোহাম্মদ এ আরাফাত, তারানা হালিম, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি ও তারিক সুজাত প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছেন।

এদিকে বয়সের দিক থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সবচেয়ে সিনিয়র পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য। তার জন্ম ১৯৪০ সালের ১ মার্চ। এছাড়া বয়সের দিক থেকে সভাপতি শেখ হাসিনার চেয়ে সিনিয়র নেতাদের মধ্যে রয়েছেন এইচ এন আশিকুর রহমান (১৯৪১), বেগম মতিয়া চৌধুরী (১৯৪২), ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন (১৯৪৩), আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ (১৯৪৪) ও সৈয়দা জেবুন্নেছা হক (১৯৪৪)। কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল ইসলাম ঠান্ডুর বয়স প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমান। তিনিও ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জন্মগ্রহণ করেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের অন্যান্য নেতা দলের সভাপতি শেখ হাসিনার চেয়ে বয়সে ছোট।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335