মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:১৯ অপরাহ্ন

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরুতে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক: পূর্বাচল নতুন শহরের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার তৃতীয় দিন আজ। মেলার তিনদিন পেরোলেও এখনও তেমন ক্রেতার দেখা পাচ্ছে না স্টলগুলো। তবুও ক্রেতার আশায় মেলায় অংশ নেওয়া স্টলে পণ্যের পসরা নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, এখন মেলার প্রথম দিক। তাই ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি। তবে সপ্তাহ গেলে জমবে বাণিজ্যমেলা।

অন্যদিকে এখনো মেলার কয়েকটি স্টলে গোছগাছের কাজ চলতে দেখা গেছে। আংশিক স্টলের কাজ শেষ হলেও কেউ কেউ মালামাল সাজাতে ব্যস্ত। তবে বিবিসিএফইসির বাইরে ছোট পরিসরে মেলার আদলেই যেনো বাজার বসেছে। মেলা প্রাঙ্গণের সড়কঘেঁষে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা ছোট ছোট দোকানের বেশিরভাগই খাবার হোটেল। এসব দোকান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার পরিবেশ বিঘ্ন ঘটাচ্ছে এমন অভিযোগ করেন অনেকেই। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।

মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় ইরান থাই অ্যাম্পোরিয়ারে সেলস এক্সিকিউটিভ সুমনের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি বছরই মেলার শুরুতে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি আসে। অনেকেই মেলার পরিবেশ দেখতে আসেন। তবে যারা প্রথম দিকে মেলায় আসেন তারা কেনাকাটার জন্য মেলার মাঝামাঝি সময়টাই বেছে নেন।

একই কথা বলেন রায়হান ফ্যাশনের সেলস এক্সিকিউটিভ সাব্বির হোসেন। তিনি বলেন, মেলার দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সাধারণত কেনাকাটা জমে ওঠে। তবে এর মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলে সেসব দিনগুলোতেও প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থী আসেন। আমরা আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যেই কেনাকাটা জমে উঠবে।

মেলায় পুরো পরিবার নিয়ে খিলক্ষেত থেকে এসেছেন সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আজ অফিস থেকে একটু আগেই বের হয়েছিলাম। এখন মেলায় ভিড় কম, তাই ঘুরতে আসা। তবে ঘোরা মানেই শুধু ঘোরাঘুরি নয়, পছন্দের পণ্য পেলে অবশ্যই কেনার ইচ্ছা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমতিয়াজসহ চার বন্ধু মেলায় এসেছেন। ইমতিয়াজ বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে প্রায়ই বিভিন্ন স্থানে ঘুরি। মেলায় প্রথম দিকে ভিড় কম হবে, তাই ঘুরতে এলাম। রাস্তা ভালো না থাকায় গতবার আসা হয়নি, এবার আগেই এলাম। কেনাকাটার ইচ্ছা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ছাত্র মানুষ। বড় ছাড় না হলে কীভাবে কিনবো। মেলার শেষ দিকে বড় অফার দেওয়া হয়, সে সময়টাতেই কেনার ইচ্ছা আছে।

এদিকে মেলার মেইন গেট সংলগ্ন সড়কের সামনে একাধিক দোকান আর ভাসমান হকার মালামাল বিক্রি করছেন। রয়েছে ঝালমুড়ি আর ফুসকার একাধিক দোকানও। ভিক্ষুকেরও দেখা মিলছে একাধিক। এমনটা আন্তর্জাতিক মানের মেলাকে ম্লান করছে বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।

এমনই অভিযোগ করেন ইমাম ফয়সাল। তিনি বলেন, যে কোনো আন্তর্জাতিক মেলা বা সেমিনার একটি দেশকে উপস্থাপন করে। সেখানে মেলার মেইন গেটের বাইরে এলামেলো দোকান মানানসই হয় না। হকার আর ভিক্ষুক রয়েছে। মেলায় আগতদের সামনে সবাই চলে আসছে। এখানে অনেক বিদেশি ক্রেতা-বায়ার আসবেন, তারা নানা পণ্যের অর্ডার করবেন আগামীর জন্য। তাহলে তাদের সামনে এগুলো পড়লে কী ভাববে তারা। তাই এগুলোর বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াত সুবিধায় গত বছরের মতো শাটল সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে। কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে এক্সিবিশন সেন্টার পর্যন্ত ৭০টি বিআরটিসি বাস চলাচল করছে। এসব বাসের ভাড়া ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন মেলা রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

মেলায় প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য প্রবেশ মূল্য ৪০ টাকা, আর অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। তবে অনলাইনে টিকিট কিনলে ৫০ শতাংশ ছাড়ের সুযোগ রয়েছে। প্রায় এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে মেলায়।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335