শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:১১ অপরাহ্ন

মারা গেছেন প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন

জিটিবি নিউজ ডেস্ক : মারা গেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট খন্দকার মাহবুব হোসেন। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। প্রবীণ এই আইনজীবী হৃদরোগ, রক্তচাপ ও কিডনি জটিলতায়ও ভুগছিলেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভেন্টিলেটশন সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি খন্দকার মাহবুব হোসেনের আত্মার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। প্রবীণ এ আইনজীবীর চেম্বারের সহকারী (কনিষ্ঠ) আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্যার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ রাত ১০টা ৪৪ মিনিটে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ‘ খন্দকার মাহবুব হোসেন একাধিকবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে দন্ডিত অনেকের মামলা লড়েছেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি বরগুনার বামনায় ১৯৩৮ সালের ২০ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা খন্দকার আবুল হাসান ছিলেন শিক্ষাবিদ। প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয় সেখানেই। পরবর্তীতে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে নারায়নগঞ্জে চলে আসেন। ভর্তি হন নারায়ণগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে। উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র থাকা অবস্থায় খন্দকার মাহবুব হোসেন ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে কারাবরণ করেন। নারায়ণগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে তিনি মেট্রিক পাস করেন। পরবর্তীতে ভর্তি হন ঐতিহ্যবাহী নটর ডেম কলেজে। ১৯৫৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ অ্যাসোসিয়েশনের ভিপি নির্বাচিত হন। তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খানের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করায় কয়েকজন সহযোগীসহ তিনি পুনরায় গ্রেপ্তার হন। সামরিক আদালতে তাদের বিচার শুরু হলে তিনি নিজেই মামলা লড়ে মামলা থেকে অব্যাহতি পান। তবে সামরিক শাসক তাকে এমএ পরীক্ষায় অংশ নিতে দেননি। ১৯৬৪ সালে আইন পাস করে তিনি আইন পেশায় যুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় নেপথ্যে থেকে সহায়তা করেন মুক্তিযোদ্ধাদের। ১৯৬৭ সালে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে দালাল আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলে ওই বিচারে চিফ প্রসিকিউটরের (প্রধান কৌসুলি) দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৮৮ সালের ১৭ জুলাই তিনি সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে চারবার নির্বাচিত হন । এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইবার দায়িত্ব পালন করেন। খন্দকার মাহবুব হোসেন বিয়ে করেছেন অধ্যাপিকা ফারহাত হোসেনকে। দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জনক তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335