মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০১:০৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: কাগজসহ শিক্ষা উপকরণের দাম কমানো না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। সেই সঙ্গে শিক্ষা উপকরণের দাম নিয়ন্ত্রণে ‘ব্যর্থতার’ দায়ে শিক্ষামন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে সংগঠনটি।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে কাগজসহ শিক্ষা উপকরণের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ হুশিয়ারি দেয় ছাত্র ইউনিয়ন।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা কাগজে লেখা প্ল্যাকার্ডের পরিবর্তে কলাপাতা ও কচুপাতায় বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
এসময় ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, করোনার মধ্যে এমনিতেই শিক্ষাব্যবস্থা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। মূল্যস্ফীতির কারণে খাদ্যের বা নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার বিষয়টি যেভাবে আলোচনায় আসে, শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ার বিষয় সেভাবে আলোচনায় আসে না। মানুষের খরচের বোঝা আরও ভারি হচ্ছে। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা পড়াশোনা চালাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে, এমনকি পড়াশোনা বন্ধ করার মতো সিদ্ধান্তও নিচ্ছে।
তিনি বলেন, বইয়ের পাশাপাশি শিক্ষার জন্য অপরিহার্য শিক্ষার বিভিন্ন উপকরণ, খাতা–কলম–ফাইলের বাইরে রঙিন কাগজ, পেন্সিল, শার্পনার, ইরেজার, মার্কার, স্ট্যাপলার, পিন, ক্লিপ, অফিস ফাইল, ক্যালকুলেটর, কলমের বক্স, স্টিল ও প্লাস্টিক স্কেল, রংপেন্সিল, অ্যান্টিকাটার, কাঁচি, পরীক্ষায় ব্যবহৃত হয় এমন ক্লিপবোর্ড, ছাপানোর কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য, প্রিন্টারের কালিসহ শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহৃত প্রায় সব উপকরণের দাম বেড়েছে। মাত্র পাঁচ–ছয় মাসের ব্যবধানে এসব উপকরণের দাম ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত এবং কোনো কোনো উপকরণে দাম বেড়েছে দ্বিগুণ পর্যন্ত।
‘এতে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর যেমন বাড়তি চাপ পড়ছে, তেমনি অনেক নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ারও উপক্রম হয়েছে। আজকের সমাবেশ থেকে আমরা দাবি জনাই কাগজ কলমসহ সব শিক্ষা উপকরণের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য সাইফ রুদাদ বলেন, আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে ৬২’র শিক্ষা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল সেই আন্দোলনই সামরিক শাসক আইয়ুব খানের পতন করেছিল। ছাত্রস্বার্থে আঘাত করে কোনো সরকারই ক্ষমতায় টিকতে পারেনি। সর্বক্ষেত্রে শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তরের পায়তারা করছে এ সরকার। আমরা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ নীতি মানি না। সব শিক্ষা উপকরণের দাম কমানো এবং শিক্ষার ব্যয় সংকোচনের দাবি জানাই। শিক্ষা উপকরণের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ শিক্ষামন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীকে অপসারণ করতে হবে। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে সর্বাত্মক ছাত্র আন্দোলনের মধ্যদিয়ে সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে বাধ্য করা হবে।
ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজার সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের আহ্বায়ক কাজী রাকিব হোসাইন, ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক লাভলী হক, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক শাওন বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।