বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন

ফরিদপুরে বাস ধর্মঘটে মালিক-শ্রমিকের ক্ষতি অর্ধ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফরিদপুরে ৩৮ ঘণ্টার পরিবহন-বাস-মিনিবাস ধর্মঘটে মালিক-শ্রমিকের অন্তত অর্ধ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে পরিবহন-বাস মালিকদের ক্ষতি হয়েছে ২৮ লাখ টাকার বেশি। আর এসব পরিবহন-বাস-মিনিবাসের সঙ্গে জড়িত শ্রমিক-কর্মচারীদের দুদিনের আয় হতো ২৩ লাখ টাকার অধিক। সব মিলিয়ে ৫১ লাখ টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে।

জানা গেছে, ফরিদপুরে মিনিবাস ও বড় (পরিবহন) বাসের সংখ্যা ৫৭৬টি। এর মধ্যে মিনিবাস ১৩১টি, স্থানীয় রুটের বড় বাস ১৯৫টি এবং পরিবহন বাসের সংখ্যা ২৫০টি। ফরিদপুর জেলা শহর বাস টার্মিনাল থেকে টেকেরহাট, সদরপুর, সালথা ও মুকসুদপুর- এই চার রুটে মিনিবাস চলাচল করে। ফরিদপুরের অন্যান্য উপজেলা ও পাশের জেলাগুলোতে চলে বড় লোকাল বাস। এছাড়াও রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলার মধ্যে দূরপাল্লার পরিবহন বাস চলাচল করে।

ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের নির্বাহী সদস্য কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী  বলেন, একটি মিনিবাস মালিকের প্রতিদিন কমপক্ষে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা আয় হয়। সে হিসাবে সব মিনিবাসে দুই দিনের মোট আয় প্রায় ৫ লাখ ২৪ হাজার টাকা। বড় লোকাল বাসের দুই দিনের আয় প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। দূরপাল্লার বাসে প্রতিদিনের আয় কমপক্ষে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। সেই হিসাব অনুযায়ী এই জেলার দূরপাল্লার সব বাসে দুই দিনের আয় প্রায় ১৫ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে মালিকদের মোট ক্ষতি ২৮ লাখ টাকার অধিক।

এদিকে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সব বাসেই ড্রাইভার, সুপারভাইজার ও চালকের সহকারী মিলে অন্তত তিনজন শ্রমিক থাকেন। তিনজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি গড়ে অন্তত দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়। সেই হিসাবে ৫৭৬টি বাসের শ্রমিকদের দুই দিনের মোট আয় ২৩ লাখ চার হাজার টাকা। এতে বাস মালিক ও বাসের শ্রমিক মিলিয়ে মোট ক্ষতির পরিমাণ ৫১ লাখ টাকার অধিক।

গত ৭ নভেম্বর জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে ২২টি মহাসড়কে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের অবৈধ ত্রি-হুইলার যেমন- নছিমন, করিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্র, ব্যাটারি চালিত রিকশা, ইজিবাইক ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের জন্য একটি আলটিমেটাম দেওয়া হয়। তাতে বলা হয় বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দিনগত রাত ১২টার মধ্যে এ দাবি কার্যকর করা না হলে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ৩৮ ঘণ্টা ফরিদপুরের সব রুটে বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ থাকবে। মালিক-শ্রমিক ঐক্যজোটের আলটিমেটামের সময়সীমা শেষ হওয়ার ১৫ ঘণ্টা আগে গত বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে শহরে মাইকিং করা হয়। এরপর ৩৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ৫ ঘণ্টা বাকি থাকতে সব রুটে বাস চলাচল শুরু হয়।

তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ ছিল ১২ নভেম্বর তাদের ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশে ব্যাঘাত ঘটাতেই বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। গত ৯ নভেম্বর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেছিলেন, বিএনপির গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করা, জনসমাগম সংকুচিত করা এবং গণদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্যই বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির নামে ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।

জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির বিএনপির অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করে বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। এ লক্ষ্যে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর গত সোমবার চিঠি দিয়ে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানাই। তবে সেই দাবি মানা হয়নি। যার ফলে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ফরিদপুর জেলা বাস টার্মিনাল থেকে আঞ্চলিক বাস ও মিনিবাসসহ দূরপাল্লার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335