শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন

হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন হবে ঢাকায়, চুক্তি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক: শতভাগ হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন লাগেজ তল্লাশির কাজ ঢাকায় সম্পন্ন হবে। জন্য সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। একই সঙ্গে দুদেশের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি চুক্তি সই হয়েছে

বাংলাদেশ সফররত সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল দাউদের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে চুক্তি হয়। রোববার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠক হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

 বৈঠক শেষে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনার পর আমরা দুটি এমওইউ সই করেছি। একটি হলো নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি, আরেকটি হলো রুটটুমক্কা সার্ভিস এগ্রিমেন্ট।

তিনি বলেন, ‘প্রথমটিতে দুদেশের নিরাপত্তা আরও কীভাবে উন্নতি করা যায়, সেই বিষয় আছে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় এর মধ্যে রয়েছে। রুটটুমক্কার মধ্যে রয়েছে, আমাদের হজযাত্রীদের আরও কীভাবে সহযোগিতা দেওয়া যায়। এখান থেকে ইমিগ্রেশন সবকিছু ঠিকঠাক করে করে তারা উড়োজাহাজে উঠে যাবে। সুবিধাগুলো আগে পরীক্ষামূলকভাবে ছিল।

মন্ত্রী বলেন, ‘এখন চুক্তি হলো। এখন ইমিগ্রেশন, ব্যাগেজ চেকিং সবকিছু বাংলাদেশের বিমানবন্দর থেকে হয়ে যাবে। এটাই হলো রুটটুমক্কা সার্ভিস এগ্রিমেন্টের বিষয়।

সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে মৌখিকভাবে রুটটুমক্কা বাস্তবায়ন হচ্ছিল। এখন আনুষ্ঠানিকতা মেনে চুক্তি হলো। এরপর থেকে যারা হজে যাবেন, ইমিগ্রেশন আমাদের এখানে হবে। ওখানে বিমানবন্দরে নেমে গাড়িতে উঠে যাবেন। লাগেজও হোটেল চলে যাবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এছাড়া আরও অনেক বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যু আলোচনায় এসেছে। আমাদের দুদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে প্রশিক্ষণ এবং পারস্পরিক তথ্য আদানপ্রদান। ভাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশ, দুদেশের সম্পর্ক আরও উন্নত করা যায়, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের যে শ্রমিকরা যেখানে যাচ্ছে, দক্ষ শ্রমিকদের সেখানে পাঠানোর জন্য তারা অনুরোধ জানিয়েছেন। দক্ষ শ্রমিক পাঠালে তারা আরও ভালো সুবিধা পাবেন বলে আলোচনা হয়েছে।

আমরা তাদের জানিয়েছি যে, আমরা ট্রেনিং ইনস্টিটিউট তৈরি করেছি। যখনই শ্রমিক বিদেশে যায় তারা এখান থেকে ট্রেনিং নিয়ে বিদেশে যায়, সরকার থেকে আমরা সেটা করে যাচ্ছি।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা আরও বলেছি, কীভাবে ভিসা আরও সহজ করা যায়। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর হজ ওমরাহযাত্রী, ব্যবসায় চাকরির জন্য প্রতিনিয়ত সৌদি আরব যাচ্ছেন। তারা যে স্কলারশিপ দিচ্ছেন, সেটা আরও কীভাবে সহজ করা যায় সেটা নিয়ে এবং বিজনেস ভিসাটা আরও কীভাবে সহজ করা যায় সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। সবকিছু তারা বিবেচনায় নেবেন বলে আমাদের জানিয়ে গিয়েছেন।

আগামী দিনগুলোতে সাইবার চ্যালেঞ্জ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, সৌদি আরবও সেটা মনে করে। এটা কীভাবে মোকাবিলা করবো সে জন্য চুক্তি হয়েছে। সাইবার ক্রাইম মোকাবিলায় যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ট্রেনিং দেবে

সৌদি আরবে ২৭ লাখ ৬০ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন পেশায় তারা নিয়োজিত, আবার ব্যবসাবাণিজ্যও করেন। সেই ব্যবসায় যাতে একটু সুবিধা পায় সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সবকিছু নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আশাকরি আমাদের সম্পর্ক আরও গাঢ় হবে, আরও উন্নত হবে সফরের পর

নতুন করে শ্রমিক নেওয়া সৌদি আরব থেকে এলএনজি আনার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি নাজানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এলএনজির কোনো বিষয় আলোচনায় আসেনি। শ্রমিকদের পাসপোর্ট তাড়াতাড়ি দেওয়ার বিষয়ে তারা অনুরোধ করেছেন। আমরা বলেছি আমরা তাড়াতাড়িই করবো, কিন্তু প্র্যাকটিক্যালি অসুবিধাগুলো আছে।

রোববার সকাল সোয়া ১০টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সৌদি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হয়। এর আগে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি সচিবালয়ে এসে পৌঁছায়। এরপর তাদের গার্ড অব অনার লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বৈঠক চলে সোয়া ১২টা পর্যন্ত

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে ছিলেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, সুরক্ষাসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আলমামুনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335