বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রক্তদহ বিলে নৌকা ডুবে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায়। এরা হল সান্দিড়া গ্রামের পশ্চিমপাড়া শহিদ হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার চাঁদনী (২৫) এবং ছেলে স্বাদ হোসেন (৬)। নৌকার ভিতর পানি প্রবেশ করে ডুবে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, উপজেলার সান্দিড়া গ্রামের শহিদ হোসেনের স্ত্রী, ছেলে স্বাদ সহ ১০/১২ জন আত্মীয়-স্বজন মিলে ভাড়া করা নৌকা যোগে পাশের করজবাড়ি গ্রামে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিল। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নৌকাটি বিলের মাঝামাঝি যাবার পর নৌকার ফুটো দিয়ে পানি প্রবেশ করে ডুবে যায়। নৌকা থেকে ছিঁটকে পানিতে পড়ে যায় শিশু স্বাদ। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে গভীর বিলের পানিতে তলিয়ে যায় মা ফাতেমা আক্তার চাঁদনী। এসময় নৌকায় থাকা লোকজন তাদের খুঁজে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। স্ত্রী-ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে দিনমজুর শহিদ হোসেন। নৌকায় থাকা অন্য লোকজনদের আরেকটি নৌকা এসে তাদের উদ্ধার করে।
আদমদীঘিতে নামের মিলে খুন হল নিরপরাধ মেধাবী ছাত্র সিহাব
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার আদমদীঘিতে পুর্ব ঘটনার জেরে, নামের মিলে খুন হল সিহাব হোসেন (১৮) নামের নিরপরাধ এক মেধাবী ছাত্র। ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন রবিবার রাতে রক্তদহ বিলের বেইলী ব্রীজ এলাকায় এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে নিহতের দুই বন্ধু। নিহত সিহাব হোসেন উপজেলার দমদমা গ্রামে হারুনুর রশিদের ছেলে। সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেছে।
জানা যায়, ঈদের দিন বিকেলে দমদমা গ্রামের উত্তরপাড়ার সোহাগ হোসেনের ছেলে শিহাব তার কয়েক বন্ধু নিয়ে ওই বেইলিব্রিজ এলাকায় আড্ডা দিতে যায়। এসময় সেখানে শিহাব গ্রুপের সাথে পাশের করজবাড়ি গ্রামের এখলাস হোসেনের ছোট ছেলে শিপন গ্রুপের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এঘটনার বদলা নিতে ফুঁসে উঠে শিপনের বড় ভাই শিপলু।
তার পর দিন সন্ধা রাতে দমদমা পুর্বপাড়ার হারুনুর রশিদের ছেলে সদ্য মাধ্যমিক পাস করা সিহাব তার দুই বন্ধু প্রহর (১৫) ও জাকির হোসেন (১৭)কে নিয়ে ওই বেইলি ব্রীজ এলাকায় বেড়াতে যায়। এসময় সেখানে অবস্থান করা করজবাড়ি গ্রামের এখলাস হোসেনের বড় ছেলে শিপলু হোসেন, সিহাব হোসেনের নিকট এসে নাম জিজ্ঞাসা করে। সিহাব সরল বিশ্বাসে তার নাম বলা মাত্রই শিপলু সিহাবের উপর হামলা চালিয়ে প্রথমে ছুরিকাঘাত করে পরে তাঁর গলা কেটে দেয়। এর পর সিহাবের বন্ধু প্রহর ও জাকিরকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় সিহাবসহ তিনজনকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা শুরুর পুর্বেই সিহাব মারা যায়। সিহাবের মৃত্যু সংবাদ গ্রামে পৌঁছলে শোকের ছায়া নেমে আসার পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের উত্তেজনা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা করজবাড়ি গ্রামের মনে করে অন্য গ্রামের কয়েকটি যানবাহন (অটো এবং চার্জার ভ্যান) ভাংচুর করে। এসময় সাদা পোশাকের পুলিশ ভাংচুর আটকাতে গেলে তারা বিক্ষুব্ধ জনতার রোসানলে পড়ে। এঘটনায় সোমবার রাতে নিহত সিহাবের বাবা হারুনুর রশিদ বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ সহ ৫জন অজ্ঞাতনামাকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন।
এব্যপারে মঙ্গলবার আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ জালাল উদ্দীন জানান, এই খুনের সাথে জড়িতরা ঘটনার পরই পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে গ্রেফতারের জোর তৎপরতা চলছে। বর্তমানে দমদমা-করজবাড়ি সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘটনা পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।