শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:১৪ অপরাহ্ন
জিটিবি নিউজ ডেস্কঃ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দেশের চলমান মাদক বিরোধী অভিযান সম্পর্কে বলেছেন, অভিযানে কাউকে হত্যা করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়। কাউকে হত্যা করাও হচ্ছে না। যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। এভাবে যতদিন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে না আসবে ততদিন অভিযান চলবে।
সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দীন আহমদ চৌধুরী, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেখানে মাদক ব্যবসা সেখানে অবৈধ টাকা ও অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। এক্ষেত্রে জীবন বাঁচাতে গোলাগুলি হওয়াটা স্বাভাবিক। অপরাধীরা গুলি ছুড়লে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি ছোড়ে। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও কিন্তু আহত হচ্ছে। তবে সরকার সব ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে। কাউকে হত্যার উদ্দেশ্যে হত্যা করা হচ্ছে না।
অভিযান চলাকাল এ পর্যন্ত কতজন বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারে মারা গেছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে সংখ্যাটি বলা যাচ্ছে না। তবে অভিযান শুরু থেকেই এ পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট ও আদালতের মাধ্যমে মাদক সংশিষ্ট ২২ হাজার জনকে বিচারের মুখোমুখি করে কারাগারে বন্দি আছে। এ সংখ্যাটা হয়তো কম বেশি হতে পারে।
তিনি বলেন, অভিযান শুরুর পর মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকেই অবস্থান ত্যাগ ও সটকে পড়েছে। তবে যাই করুক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাউকে হত্যা করার উদ্দেশ্য সরকারের নেই। চার-পাঁচটি গোয়ন্দা সংস্থা থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা করা হয়েছে। তালিকা ধরেই মাদক বিরোধী অভিযান চলছে। তবে দুই তিনটি সংস্থার যাদের নাম রয়েছে তাদের কাছেও অভিযান টিম যাচ্ছে। যারা আত্মসর্মণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট বা নিয়মিত আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদি তারা মাদকদ্রব্যের সাথে সংশ্লিষ্ট বলে প্রমাণিত হয়, তাদের সাজা হচ্ছে। আর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া না গেলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
যাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, শুধু তাদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। যতদিন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে না আসবে ততদিন এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সন্দেহভাজনদের তালিকায় কোন সংসদ সদস্য বা সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতার নাম রয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। যারাই থাকুক তাকে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। মন্ত্রণালয় থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পাঠানো তালিকাগুলো তারা দেখছে। তবে চলমান দেশব্যাপি মাদক বিরোধী অভিযানকে দেশবাসী ব্যাপক সমর্থন জানিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের আগে বিচারের মুখোমুখী করাই সরকারের উদ্দেশ্য। যারা বিচারের মুখোমুখী হচ্ছে না তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তারা যেখানেই থাকুক অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।
সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা আসার বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি নিজে মিয়ানমারের রাষ্ট্র প্রধানের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তারা মুখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে পার্শ্ববর্তী বন্ধু প্রতীম দেশ ভারত বাংলাদেশ ঘেঁেেস গড়ে ওঠা ফেনসিডিল কারখানা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। অথচ মিয়ানমার ইয়াবা কারখানা বন্ধে উদ্যোগ নিচ্ছে না।
মন্ত্রী আরো বলেন, অধিকাংশ ইয়াবা মিয়ানমার সীমান্ত থেকে আসছে। এজন্য নাফনদী, বান্দরবন ও সাতক্ষীরা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সারাদেশে এটার ডিমান্ড ছিল সেগুলো বন্ধ করার জন্য সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।