শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন

 গাইবান্ধা শহর রক্ষা বাঁধ কেটে কাকড়া চলাচলের রাস্তা তৈরী

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধা : গাইবান্ধা শহর রক্ষা বাঁধ কেটে কাকড়ার চলাচলের রাস্তা তৈরী করছে ইউনুছ আলী শাহীন নামের গাইবান্ধা পৌরসভার এক কাউন্সিলর। দানবের মতো ভয়ঙ্কর শব্দ করে গাইবান্ধার গ্রাম-শহর দাঁপিয়ে বেড়ায় অদ্ভুত পরিবহণ ‘কাঁকড়া’। এই কাঁকড়ার ভয়ঙ্কর শব্দ শুনলেই অনেক দূরের মানুষও আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। সামনে ইঞ্জিন, পেছনে বডি আর বড় বড় চাকা দেখলেই মনে হয় যমদূত তেড়ে আসছে।

কাঁকড়ার ইঞ্জিনসহ সামনের অংশটি মূলত জমি চাষ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। যার নাম পাওয়ার টিলার। পাওয়ার টিলারের পেছনে একটি বডি যুক্ত করে মালবাহী পরিবহণ তৈরি করা হয়েছে। অদ্ভূত এই পরিবহনটি গাইবান্ধার মানুষের কাছে কাঁকড়া নামেই পরিচিত। খুব দ্রুত চলাচল করায় প্রায়ই এই যানবাহনটির নিচে চাপা পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছেই। এই যানবাহনগুলোর চালকদেরও কোনো প্রশিক্ষণ নেই। অল্প বয়সী ছেলেদের দিয়ে এই যানবাহনগুলো চালানো হয়।

কোনো প্রকার ফিটনেস বা অনুমোদনহীন এই যানবাহনটি বেপরোয়া চলাচল করে থাকে। সচেতন মহলের দাবি, বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করেই অবৈধ এই পরিবহনটি চলাচল করছে। যার ফলে একের পর এক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটলেও কারো টনক নড়ছে না। এমনকি একাধিকবার জেলা আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে আলোচনার পরও উলে¬¬খযোগ্য কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। কাঁকড়া নামের এই পরিবহনটি প্রথমদিকে মূলত মাটি ও বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হতো। এখন ইটভাটাগুলোর ইট, কয়লা, ধান-চালের বস্তা,কাঠসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করছে।

শুধু তাই নয়, সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের লোহাচোড়া ব্রীজের পার্শ্বে রনি, পটল, লিটন ও শহর সংলগ্ন কুঠিপাড়া শাহীন লেকের পাশ থেকে কমিশনার ইউনুস আলী শাহীন প্রভাব খাটিয়ে কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। আর এইসব বালু বিক্রির জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য শহর রক্ষা বাঁধ কেটে এইসব কাকড়া অবাধে চলাচল করছে। ফলে শহর রক্ষা বাঁধগুলো ঝুকির মধ্যে রয়েছে। তাই আসন্ন বর্ষা মৌসুমে যে কোনমুহুর্তে বাঁধগুলো ধসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এব্যাপারে এলাকাবাসি জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশি¬ষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন সুফল পায়নি।

ভূক্তভোগীরা বলেন, এই অদ্ভুত যানবাহনের চলাচলের কারণে গ্রামগঞ্জের রাস্তাঘাট ধসে গিয়ে একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সংস্কার করা হলেও কাঁকড়ার অবাধ চলাচলের কারণে লাখ লাখ টাকা খরচ করেও রাস্তাগুলো ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। গ্রামাঞ্চল ছাড়াও গাইবান্ধা শহরের ডেভিডকোম্পানী পাড়া, সরকার পাড়া, ভি-এইড রোড, গাইবান্ধা-বালাসিঘাট সড়ক, গাইবান্ধা-পলাশবাড়ি সড়ক, স্টেডিয়াম সংলগ্ন সড়ক, ব্রীজ রোড, গাইবান্ধা-সাদুল্যাপুর সড়ক এবং গাইবান্ধা-কলেজ রোড-নাকাইহাট সড়ক দিন দিন কাঁকড়ার দখলে চলে যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335