মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৪৯ অপরাহ্ন
আলু খেতে পছন্দ করুন আর না-ই করুন, কিচ্ছু যায় আসে না। বরং আলু না থাকলেই বিপন্ন হয়ে পড়ত মানবসভ্যতা! বিশেষ করে ইউরোপে শান্তি বলে কিছুই থাকত না!
গবেষকরাই এমনটি জানান। কিন্তু এটি আবার কেমন গবেষণা? তবে হ্যাঁ, এ গবেষণাই কঠোর সত্য। গবেষণা বলছে, যুদ্ধ-বিগ্রহে ইউরোপ দীর্ণ হয়ে যেত, পারিবারিক ধারাবাহিকতা ধ্বংস হয়ে যেত যদি আলু না থাকত!
‘নিউজউইক’র প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একদল গবেষক সম্প্রতি এক নিবন্ধে তুলে এনেছেন এমন এক ইতিহাস, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আলু। তাদের চমকপ্রদ তথ্য ছিল এরকম-
১. ১৬ শতকে ইউরোপে প্রথম আলু চাষ শুরু হয়। এবং তা ইউরোপের কৃষিকে সামগ্রিকভাবেই বদলে দেয়। ফলে কৃষকরা কম জমিতে অধিক ফসল ফলাতে শুরু করে। কর্ষিত জমির পরিমাণ কমায় জমির দাম কমে। ফলে গোটা মধ্যযুগ ধরে চলা আসা সামন্ততান্ত্রিক জমি-বিবাদ কমে আসে। বন্ধ হয় জমিদারদের দাঙ্গা-হাঙ্গামা।
২. ১৭ শতক থেকে ইউরোপের যেসব জায়গা অতিমাত্রায় যুদ্ধপ্রবণ ছিল, তার সংখ্যা কমে আসে। এ জায়গাগুলোর অধিকাংশতেই আলুর চাষ তখন বেড়ে যায়।
৩. আলু চাষ অন্য ফসলের চেয়ে বেশি নিশ্চিত। এতে লাভও বেশি। ফলে কৃষক রাতারাতি বড়লোক হয়ে যেতে শুরু করেন। আদি মধ্যযুগের হা-অন্ন দারিদ্র্য লুপ্ত হয়। ক্রমেই সমৃদ্ধ গ্রাম দেখা দিতে শুরু করে।
৪. আলুর আগে যেসব সবজির চাষ ইউরোপে হতো, তাদের চেয়ে আলুর খাদ্যগুণ অনেক বেশি। ফলে ইউরোপীয়দের পুষ্টিজনিত সমস্যার সমাধান হয়।
৫. আলুর সংরক্ষণ সহজ। শীত ও খরার সময় ইউরোপে খাদ্যাভাব লুপ্ত হয়। খাদ্যদাঙ্গা কমে আসে। গুদাম লুট, যা এক সময় ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, তা বন্ধ হয়। গ্রামে শান্তি স্থায়ী হয়।
আমেরিকা মহাদেশ আবিষ্কারের আগে আলু ইউরোপের কাছে অজানা ছিল। আজকের পেরু নামক দেশটি থেকেই আলু ইউরোপে ঢোকে। আর ভারতে আলু প্রবেশ করে পর্তুগিজ বণিকদের মাধ্যমে।