বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন

টাকার অভাবে বন্ধ চিকিৎসা, তমার এসএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আমেনা খাতুন তমা (১৬) এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। এক বছর আগে পায়ের একটি টিউমার থেকে ছড়িয়ে পড়ে ক্যানসার। চিকিৎসকের পরামর্শে ১১ দিন আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ডান পা কেটে ফেলা হয়। এখন টাকার অভাবে বন্ধ চিকিৎসা। ফলে পরীক্ষায় বসা তার অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

তমা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের তমির উদ্দিন (৫৫) ও নাজমা বেগমের মেয়ে। সে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

তমারা তিন ভাই-বোন। দুই ভাই অটোরিকশা চালান। তাদের পাঁচ শতক জমির ওপর বসতভিটা ছাড়া জায়গা-জমি কিছুই নেই। বাবা তমির উদ্দিন অসুস্থ তাই কাজেও যেতে পারেন না। মা নাজমা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।

আমেনা খাতুনের ভাই নাঈম ইসলাম বলেন, ‘এক বছর আগে বোনের হাঁটুর নিচে একটি টিউমার ধরা পড়ে। রংপুর মেডিকেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান ডা. বিমল চন্দ্র জানান, তমার পায়ে টিউমার ইনফেকশন হয়ে ক্যানসারে রূপ ধারণ করেছে। এখন তাকে বাঁচাতে হলে তার একটি পা কেটে ফেলতে হবে। মানুষের কাছ থেকে ধার-দেনা টাকায় তার একটি পা কাটা হয়।’

নাঈম আরও বলেন, ‘এখন চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়মিত ওষুধ এবং ১০ দিন পর পর থেরাপি দিতে হবে। তা না হলে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে। সামনে তার এসএসসি পরীক্ষা। বোন কৃত্রিম পায়ে হেঁটে পরীক্ষা দিতে চায়। কিন্তু আমরা দিন আনি দিন খাই। তার চিকিৎসা চালানোর মতোই টাকা আমাদের কাছে নেই। কৃত্রিম পা তো দূরের কথা। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে আমার জীবনটা সুন্দরভাবে চলতো।’

আমেনা খাতুন তমা জানায়, ‘একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে। এখন চিকিৎসা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আমার বাবা-মা ও ভাইয়ের এত টাকা নেই। আমি বাঁচতে চাই। আমি আগের মতো হাঁটতে চাই। সামনে আমার পরীক্ষা। একটি কৃত্রিম পা খুবই প্রয়োজন। তাহলে হেঁটে পরীক্ষা দিতে যেতে পারবো।’

তমার মা নাজমা বেগম বলেন, ‘টাকার অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না। মেয়ের চিকিৎসার জন্য ভিক্ষা চাচ্ছি সবার কাছে। সে যেন পরীক্ষায় বসতে পারে। তার চিকিৎসা এবং একটি কৃত্রিম পা খুবই দরকার।’

গড্ডিমারী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদ  বলেন, ‘আমাদের স্কুলের অদম্য মেধাবী তমারা খুবই গরিব। ক্যানসারের কারণে তার একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে। এখন তার চিকিৎসার মতো টাকাপয়সা নেই বললে চলে। সামনে তার এসএসসি পরীক্ষা। তাই সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন  বলেন, ক্যানসারের কারণে এক শিক্ষার্থীর পা কেটে ফেলা হয়েছে বিষয়টি জেনেছি। তার পরিবার খুবই গরীব। তার চিকিৎসার চালানোর কোনো সমর্থন নেই। তাদের সাহায্যে আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করবো। তার সুচিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335