শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৪ অপরাহ্ন

মানবতাবিরোধী অপরাধ: গাইবান্ধার ৯ আসামির পক্ষে প্রথম সাফাই সাক্ষ্য শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মোফাজ্জল হক প্রধানসহ ৯ আসামির পক্ষে প্রথম সাফাই সাক্ষী আব্দুল করিমের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

এ মামলার আসামিদের পক্ষে পরবর্তী সাফাই সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আগামী ১৮ এপ্রিল দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বিষয়টি  নিশ্চিত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী।

সোমবার (১৩ মার্চ) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাফাই সাক্ষ্য দেন আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষী। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী। আর আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম ও আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

২০১৯ সালের ২৫ মার্চ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মোফাজ্জল হক প্রধানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন- মো. মোফাজ্জল হক প্রধান ওরফে মোফা (৮২), মো. সেকেন্দার আলী (৬৬), মো. আব্দুল করিম (৬৩), মো. ইসমাইল হোসেন (৭০), মো. আকরাম প্রধান (৬৮) ও মো. হাফিজার রহমান (৬৪)। পলাতক রয়েছেন- মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন ওরফে মো. শরফ উদ্দিন খান (৬৪), মো. সামছুল ইসলাম খান (৬৪) এবং মো. আব্দুল মান্নান (৬৪)। তাদের মধ্যে তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ওইদিন রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত তদন্ত সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনটি ভলিউমে ১৮১ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক মো. আব্দুল হান্নান খান।

আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণসহ মোট চারটি অভিযোগ তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ এ মামলার তদন্ত কাজ শেষ হয়। তদন্তে মোট ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১০ মে থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিরা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার কাটাবাড়ীর ইউনিয়নের ৭ ও ১০ নম্বর কাটাবাড়ী গ্রাম এবং মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের শ্রীপতিপুর ও বালুয়া গ্রামে অপরাধ সংগঠন করেন। এছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে চারটি অভিযোগ আনা হয়।

প্রথম অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১০ মে আসামিরা কাটাবাড়ী ইউনিয়নের ৭ নম্বর কাটাবাড়ী গ্রামের শহীদ জিয়া মণ্ডল, শহীদ মনা মণ্ডল ও শহীদ ওমেছ মণ্ডলকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, জবাই করে হত্যা এবং লুণ্ঠন চালান। এরপর শহীদ জিয়া মণ্ডলের ছেলে ভিকটিম আব্দুর রশীদ ও আব্দুল জোব্বার এবং কাঠালবাড়ী উত্তরপাড়ার মো. আজিজার রহমানকে আটক, অপহরণ ও নির্যাতন করেন।

দ্বিতীয় অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই আসামিরা গাইবান্ধা বালুয়া গ্রামের মো. ইউনুস আলী আকন্দের বাড়িতে তার স্ত্রীসহ মোট দুজনকে ধর্ষণ করেন।

তৃতীয় অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ৩ আগস্ট রাতে আসামিরা গোবিন্দগঞ্জের শ্রীপতিপুর গ্রামের শহীদ আব্দুল কাদের সরকার, শহীদ আব্দুস সোবহান আকন্দ ও শহীদ এমাদ উদ্দিন আকন্দকে আটক, অপহরণ, হত্যা ও শ্রীপতিপুর গ্রামের একজনকে ধর্ষণ করেন।

চতুর্থ অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর আসামিরা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ১০ নম্বর কাটাবাড়ী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ দেলোয়ার হোসেন ওরফে দুলাল এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শাহজালাল মিয়া ওরফে ঝালু মিয়াকে আটক, অপহরণ, হত্যা ও লুণ্ঠন করেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335