শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:০১ পূর্বাহ্ন

খালেদার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয় এসেছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সচিবালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ছয়টি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে আসলেও এখনো তার কাছে উপস্থাপিত হয়নি বলেও জানান আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শর্তযুক্ত মুক্তির মেয়াদ যেটা ৬ মাস ছিল, সেটা বাড়ানো হয়েছি কি না? আবার বলা হচ্ছে তাকে চিকিৎসার জন‌্য বিদেশে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে আমি বলতে চাই, আমি জানতে পেরেছি শর্তযুক্ত মুক্তির মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন‌্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খালেদা জিয়ার একটি আবেদন ফাইল করেছে। ফাইলটি আইন মন্ত্রণালয়ে এসেছে। আমার কাছে এখনো আসেনি। আমাদের মতামত দেওয়ার পর এটিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। যে তথ‌্য (মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ও বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত) টেলিভিশনে দেওয়া হচ্ছে তা সর্বৈব অসত‌্য।

খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে এখনো আবেদনটি আসেনি। এলে আমি নিষ্পত্তি করবো। আমি যখন এটি নিষ্পত্তি করবো, আমি আপনাদের (সাংবাদিক) অবশ‌্যই জানাবো। এখনো আমি জানি না ফাইলের মধ‌্যে কী আছে।

খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কি না- এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, আমি এ ব‌্যাপারে একটা পরিষ্কার কথা বলতে চাই। আমি যেটা বলেছিলাম, সেটা আইনের বইতে কী আছে আপনারা দেখে নেন। তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন কে ঠিক আর কে ভুল। আমি এটার ব‌্যাপারে আর কথা বলবো না।

‘প্রথম দিন আমার কাছে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল, আমি বলেছিলাম ডেড ইস্যু। এটা আমার কাছে ডেড ইস্যু’- বলেন তিনি।

যতটুকু জানা গেছে, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে এবার স্থায়ী জামিন চাওয়া হয়েছে- এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের, সরকারের নয়। প্রথমবার যখন তার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়, তখন দুটি শর্ত দেওয়া হয়। দুটি শর্তের মধ‌্যে রয়েছে- তিনি ঢাকায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। শেষবার যখন মেয়াদ বাড়ানো হয় তখনো এ শর্তগুলো ছিল।

তিনি বলেন, এখন যেটা (আবেদন) এসেছে, আপনারা কিছুদিনের মধ‌্যে সে বিষয়ে জানতে পারবেন। যে শর্ত আছে সেটাই বহাল থাকবে বলে আমি মনে করি।

২০২০ সালের ২৫ মার্চ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’র ধারা-৪০১ (১)-এর ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ওইদিনই হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি। একই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এরপর গত প্রায় তিন বছরে দফায় দফায় বাড়ে মুক্তির মেয়াদ।

৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া প্রায় তিন বছর ধরে গুলশানে নিজ বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়।

ওই বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।

একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার সাত বছরের সাজা হয়।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335