বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৬ পূর্বাহ্ন

ক্রমেই বাড়ছে বাংলাদেশের ফল ও শাক-সবজি রপ্তানি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ থেকে ফল শাকসবজি রপ্তানি বাড়ছে। গত ২০১৮১৯ অর্থবছরে হাজার ৩০৭ টন সবজি ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। ২০২১২২ অর্থবছরে তা বেড়ে হাজার ৯১৩ টনে দাঁড়ায়। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই রপ্তানি হয়েছে হাজার ২০৭ টন শাকসবজি। তাছাড়া ২০১৮১৯ অর্থবছরে হাজার ২০৩ মেট্রিক টন ফল রপ্তানি হয়েছিল। ২০২১২২ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে হাজার ১৯৯ টন। আর চলতি ২০২২২৩ অর্থবছরের প্রথম মাসেই রপ্তানি হয়েছে হাজার ৬৫৯ টন ফল। তার মধ্যে যুক্তরাপজ্যে বেশি রপ্তানি হচ্ছে।

কৃষি অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদেশে শাকসবজি ফল রপ্তানি বাড়ায় দেশের কৃষকরা আশার আলো দেখছে। কারণ প্রতি বছরই দেশে মৌসুমের সময় সবজি বিক্রি হয় অনেকটা পানির দরে বিক্রিতে লোকসানের মুখে পড়ে কৃষকরা। কিন্তু বিদেশে যদি দেশের সবজির বড় বাজার গড়ে ওঠে তাহলে আর সমস্যা থাকবে না। বরং ফল সবজি রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের দেশগুলোতে শাকসবজি রপ্তানি করতে হলে এই খাতের সঙ্গে জড়িত উৎপাদনকারী, বিপণনকারী রপ্তানিকারককে অবশ্যই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) দ্বারা স্বীকৃত খাদ্যপণ্য (ফল শাকসবজি) নীতির মানদণ্ড পূরণ করতে হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর শর্তানুযায়ী গুড এগ্রিকালচার প্র্যাকটিস বা গ্যাপ অনুসরণ করে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে কৃষিপণ্য উৎপাদন করতে হয়। বাংলাদেশ সেক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যে ফল শাকসবজি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়, তা সাধারণত সেখানে অবস্থানরত বাঙালি কমিউনিটির বাজারেই বিক্রি হয়। এখনো বিদেশী চেইন শপগুলোতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা ফল শাকসবজি তেমন দেখা যায় না।

কারণ সেখানে নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত বিশেষ শর্ত পালনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ফল শাকসবজি রপ্তানি বাড়াতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। ওই লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শর্তানুযায়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরবাংলাদেশ ফাইটোসেনেটারি সামর্থ্য শক্তিশালীকরণশীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২০১২২০১৯ সময়ে প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজধানীর শ্যামপুরে সেন্ট্রাল প্যাকিং হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২১ সালে ১৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কেন্দ্রীয় ওই প্যাকিং হাউজেই স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরিতে রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যাতে সেখানে বিদেশে রপ্তানির জন্য ফল শাকসবজির মান পরীক্ষা করা যায়। প্যাকিং হাউজের নিচতলা দোতলায় সবজি ফলমূলের মান যাচাইবাছাই, পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা, ধোয়া শুকানো এবং মোড়কজাত করার জন্য আলাদা আলাদা অত্যাধুনিক কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে থেকে ডিগ্রি তাপমাত্রায় সবজি ফলমূল সংরক্ষণের জন্য কয়েকটি কুলিং কক্ষ ভবনের তৃতীয় তলায় রপ্তানিকারকদের প্রশিক্ষণের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণকক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে।

তাছাড়া ফল সবজির মান পরীক্ষার জন্য ১০টি ল্যাব নির্মাণ করা হচ্ছে। ইউরোপের যে কোনো দেশে সবজি ফলমূল রপ্তানির জন্য নিয়মিতই সালমোনেলাসহ যে কোনো ধরনের দূষণ, কীটনাশকের রেসিডিউ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণ রয়েছে কি না, বিভিন্ন ধরনের এমআরএল পরীক্ষা সেখানে করা যাবে। প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির পরিচালক . জগত চাঁদ মালাকার জানান, আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে স্থাপিত ল্যাবরেটরির অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রায় সিংহভাগই সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা যায় ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্যাকিং হাউজের কাজ শেষ হবে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরি নির্মাণের ফলে দেশের শাকসবজি ফল রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে। কারণ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) মান অনুযায়ী পরীক্ষা করা হবে। আন্তর্জাতিক মানের এই ল্যাবে কাজ করার জন্য ইতোমধ্যে কোয়ারেন্টাইন কর্মকর্তাসহ মোট ১৮০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আলাদা কোয়ারেন্টাইন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335