বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৭ অপরাহ্ন

দেশজুড়ে পাহাড়ের কলার চাহিদা বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সবুজে মোড়ানো সম্ভাবনাময় পাহাড়ের বুকজুড়ে সাজানো কলাবাগান। পাহাড়ে ১২ মাস কলা চাষ হয় বলে সব মৌসুমে এখানে কলা পাওয়া যায়। এ অঞ্চলে দেখা যায়, কলা গাছের সবুজ পাতার আড়ালে ঝুলে আছে কাঁচা-পাকা কলার ছড়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ে কলা চাষে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার পথে হাঁটছেন চাষিরা। বিভিন্ন প্রত্যন্ত জনপদ থেকে দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে বিপুল পরিমাণ কলা বিক্রি হয় খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট-বাজারে।

দেশজুড়ে পাহাড়ের কলার চাহিদা বেশি হওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। এখানে সাপ্তাহিক হাটের দিন লাখ লাখ টাকার কলা বেচাকেনা হয়। সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে খাগড়াছড়ির সবচেয়ে বড় কলার হাট হিসেবে পরিচিত মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা বাজারে। পাহাড়ে উৎপাদিত কলা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাইকারদের হাত ধরে ঢাকা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।

আবহাওয়া ও মাটির উর্বরতার ফলে পাহাড়ে দেশীয় কলা চাষের উপযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে। পার্বত্যাঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশি কলার চাষ বাড়লেও বাড়েনি কলা চাষে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। দুর্গম যোগাযোগব্যবস্থার কারণে সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে না পারায় উপযুক্ত দাম মেলে না। এমনটিই জানিয়েছেন কলা চাষিরা।

জানা গেছে, পাহাড়ে মাটিভেদে বিভিন্ন জাতের কলার আবাদ হয়। এর মধ্যে দুই জাতের কলার আবাদ হতে দেখা যায়। একটি দেশি জাতের বাংলা কলা আর অন্যটি চম্পা কলা। বাংলা কলা ও চম্পা কলা ছাড়াও সবরি ও সাগর কলার আবাদ হয় এখানে। এ এলাকায় কলা আবাদে কীটনাশক ব্যবহার হয় না বললেই চলে। কলা এমনিতেই পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। সারাবছর এসব কলার ফলন পাওয়া গেলেও আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসে ফলন মেলে সবচেয়ে বেশি।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা বাজারে কুমিল্লা থেকে আসা ব্যবসায়ী মো. আব্দুল করিম জানান, সারাবছরই তিনি মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা বাজার থেকে কুমিল্লা ও আশেপাশের জেলায় কলা নিয়ে যান। বেশ সুস্বাদু হওয়ায় সমতলের জেলায় এই অঞ্চলের কলার চাহিদা অনেক বেশি। যার ফলে মানুষ পাহাড়ের কলা সামনে পেলেই লুফে নেয়।

চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি কলা বাজারে আসা ব্যবসায়ী মো. নুরুল আমিন বলেন, ‘শহরের বাজারগুলোয় পাহাড়ি অঞ্চলের কলার চাহিদা অনেক বেশি। সমতল এলাকার কলা আর পাহাড়ের কলার গুণগত মানে অনেক পার্থক্য। তাই এখানকার কলার দামও অনেকটা বেশি। দাম বেশি হলেও সমতলের ক্রেতাদের কাছে পাহাড়ি কলার চাহিদা বেশি।’

স্থানীয় বাজারে প্রতি ছড়া কলা (কমপক্ষে ১০০ পিস) মানভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। যা সমতলের জেলায় দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি হয়। এমনটিই জানিয়েছেন ব্যবসায়ী মো. নুরুল আফছার।

পাহাড়ের মাটি কলা চাষের উপযোগী জানিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কিশোর কুমার মুজমদার বলেন, ‘পাহাড়ের মাটিতে বাংলা ও চাপা কলা ভালো হয়। এখানে কলা প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে বলে তেমন পরিচর্যারও প্রয়োজন পড়ে না। শুধু কলা চারার আশপাশে জঙ্গল পরিষ্কারসহ মরা পাতা ও অতিরিক্ত চারা কেটে ফেলে দিলেই হয়।’

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335