শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১১:১২ পূর্বাহ্ন

মাতৃমৃত্যু-স্বাস্থ্যঝুঁকি গর্ভপাত আইন নিয়ে প্রয়োজন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের গর্ভপাত আইনে (১৮৬০-এর ব্রিটিশ পেনাল কোড) অন্তঃসত্ত্বার জীবন বাঁচানো ছাড়া অন্য কোনো কারণে গর্ভপাত নিষিদ্ধ। এমনকি ধর্ষণ, শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক বা সামাজিক কারণ অথবা ভ্রুণের বিকলাঙ্গতার কারণেও গর্ভপাত আইনসিদ্ধ নয়। কিন্তু প্রায় পৌনে দুইশো বছর আগে ব্রিটিশদের করা এ আইন নিয়ে আছে প্রশ্ন। ভারত ও নেপালের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে এরইমধ্যে গর্ভপাত আইন বা পেনাল কোডের বিভিন্ন ধারা বাতিল করা হয়েছে। নারীর মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানোর পাশাপাশি জনস্বার্থে বাংলাদেশেও এ আইনের সংশোধন প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

গর্ভপাত আইনে দণ্ডবিধি বা পেনাল কোডের ৩১২ ধারায় বলা হয়েছে, গর্ভধারিণীর জীবন বাঁচানোর উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো কারণে গর্ভপাত করা বা করানো অপরাধ। এক্ষেত্রে গর্ভধারিণী নারী নিজেও অপরাধী হতে পারেন। অপরাধ প্রমাণ হলে তিন বছর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদে সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। গর্ভের শিশু সচল হওয়ার পর যদি এই অপরাধকর্ম করা হয় তাহলে কারাদণ্ডের প্রকৃতি আগের মতো হলেও সর্বোচ্চ মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত হতে পারে।

পেনাল কোডের ৩১৩ ধারায় বলা হয়েছে, গর্ভধারিণীর সম্মতি ছাড়া গর্ভপাত করানো অপরাধ। এক্ষেত্রে অপরাধী গর্ভসঞ্চারকারী ব্যক্তিও হতে পারেন, অন্য কেউও হতে পারেন। অপরাধ প্রমাণ হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ১০ বছর মেয়াদ পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদে কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড উভয়ই হতে পারে। একইভাবে গর্ভপাত আইনের পৃথক পাঁচটি ধারায়ই শাস্তি বা দণ্ডের বিধানের ব্যাখ্যা রয়েছে।

তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, দেশে প্রান্তিক পরিবারের পাশাপাশি সচ্ছল পরিবারের নারীরাও গর্ভপাতজনিত মৃত্যু এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যহানির শিকার হচ্ছেন। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোরও রয়েছে সীমাবদ্ধতা। অনেক ক্ষেত্রে গর্ভপাতের কাজটি চলছে লুকোচুরির মাধ্যমে। কিছু ক্ষেত্রে এর সুযোগ নিচ্ছে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো (যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকুক বা না-ই থাকুক)। গোপনে গর্ভপাত করিয়ে আদায় করে নেওয়া হচ্ছে মোটা অংকের অর্থ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ সমস্যার সমাধানে সরকার এবং জনগণের আন্তরিক ভাবনা ও সদিচ্ছা প্রয়োজন। এ আইন নিয়ে দ্রুত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

পেনাল কোডের পাঁচটি ধারার বৈধতা নিয়ে ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট একটি রিট দায়ের করা হয়েছিল। পরদিন ১৮ আগস্ট ওই রিটের ওপর রুল জারি করেন আদালত।

এ বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন  বলেন, দণ্ডবিধি আইনের গর্ভপাত সংক্রান্ত পাঁচটি ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই রুলের বিষয়ে শুনানির উদ্যোগ নিচ্ছি। আশা করি, আমরা শুনানি করতে পারবো।

তিনি মনে করেন, নারীদের এই গুরুত্বপূর্ণ (গর্ভপাতের) স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে সরকার ও সাধারণ মানুষের আরও সচেতন হতে হবে। গর্ভপাত হ্রাসে রাষ্ট্রের উদ্যোগ সবচেয়ে বেশি জরুরি।

প্রায় আড়াই বছর আগে করা ওই রিটের পক্ষে শুরুতে একমাত্র বাদী ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন। পরে রিটের পক্ষভুক্ত বাদী হয় নারী অধিকার ও শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক)।

অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন জানিয়েছেন, রুল জারির পর আইন সংশোধনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি এখন পর্যন্ত জানা নেই। তবে আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে এ বিষয়ে যোগাযোগে করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নারীদের এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি নিরসনে বেশকিছু সংগঠন কাজ করছে।

দেশে গর্ভপাত সংক্রান্ত বিষয়ে কাজের ক্ষেত্রে অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরই মধ্যে রিপ্রোডাকটিভ হেল্থ (প্রজনন স্বাস্থ্য) নিয়ে কয়েকটি প্রোগ্রাম হয়েছে। বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি) ও আইপাস বাংলাদেশ এসব প্রোগ্রাম করেছে। নারীদের গর্ভপাত সমস্যার সমাধানে কিছুটা অগ্রগতি তো অবশ্যই হয়েছে। এফপিএবি এবং আইপাস দক্ষিণ এশিয়ার একটি নেটওয়ার্ক, যেটাকে ‘সারজাই’ বলে। এর পূর্ণ রূপ South Asia Reproductive Justice and Accountability Initiative (SARJAI)। তাদের সঙ্গে কাজ করছি।

হাইকোর্টের ওই রুল বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী  বলেন, দণ্ডবিধি আইনের গর্ভপাত সংক্রান্ত পাঁচটি ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির বিষয়ে শুনানির জন্য হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে কার্যতালিকায় এসেছিল।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ  বলেন, আইন করার ক্ষমতা পার্লামেন্টের। কোনো আইন যদি সংবিধান পরিপন্থি হয়, মানবাধিকার বা মৌলিক অধিকার পরিপন্থি হয়, সেটাকে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করতে পারেন। এ ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের আছে। কিন্তু আমাদের বিভিন্ন মামলায় ডিসিশন আছে। আমার একটি মামলায় আদালত বলেছিলেন, পার্লামেন্টকে আইন করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট কোনো নির্দেশ দিতে পারেন না। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, কোনো আইন করার জন্য যদি কেউ রুল নিয়েও থাকেন, শুনানিতে কী হবে সেটা বলা মুশকিল। কারণ, আমাদের তো সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পর্যন্ত একটা সিদ্ধান্ত আছে। যদি সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সেটা অন্য কথা। সেটা একটা হতে পারে।

তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের জারি করা রুল শুনানির জন্য যারা মামলা করেন এটা তাদের এক্টিভিটিজ। তাদেরই উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। দ্বিতীয়ত, কোর্ট রাজি হচ্ছে কি না, সেটিও বিষয়।

মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, এখন তো অনেক নতুন কোর্ট আছে, সেখানে একটি রিট নিয়ে গেলে শুনানি হবে কি না কিংবা কোনো কোর্টে যদি শুনানির জন্য নির্ধারিত থাকে তারপরও কবে শুনানি হবে তা নিয়ে পেরেশান হতে হয়। খুব বেশি মামলার শুনানি হচ্ছে তা নয়, বিভিন্ন কারণে মূল শুনানির কাজটা খুবই কম হয়। এ কারণে কেউ কোনো রিট করতে চাইলে আইনজীবী যদি একান্ত আগ্রহী ও উদ্যোগী হন, তাহলেই শুনানিতে আসা সম্ভব। এক্ষেত্রে সাবজেক্টও মেটার করে। গর্ভপাত একটি জটিল বিষয়। বিভিন্ন দেশে তা হয়।

গর্ভপাত সংক্রান্ত স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে কাজ করা আইপাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. সাইদ রুবায়েত  বলেন, পেনাল কোডের পাঁচটি ধারা বাতিল নিয়ে যে রুল জারি করা হয়েছে, এটি নিশ্চয় উচ্চ আদালত একটি প্রেক্ষাপটে করেছেন। পেনাল কোডের ধারাগুলো আজ থেকে প্রায় পৌনে দুইশো বছর আগের, ১৮৬০ সালের দিকে করা। যেটি করেছিল ইউরোপের দেশ ইংল্যান্ড। তারাও কিন্তু পরবর্তীকালে এ ধরনের ধারা রাখেননি। এছাড়া আমাদের প্রতিবেশী অনেক দেশও সাম্প্রতিককালে এসব ধারা বাতিল করেছে। সম্প্রতি ভারত করেছে, নেপাল তো আরও আগেই করেছে। সময় এবং বাস্তবতার তাগিদে জনস্বার্থে যে কোনো আইন পরিবর্তন বা বাতিল হতেই পারে।

তিনি বলেন, আমরা স্বাধীন হয়েছি ৫০ বছরেরও বেশি সময়। মানুষের প্রয়োজনে যুগোপযোগী নীতিমালা করা উচিত। যে নীতিমালায় মানুষের স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত হবে। হাইকোর্ট এ ধরনের একটা প্রেক্ষাপটে মানুষের অধিকার হরণ ও করুণ পরিণতির কথা ভেবে আইনের ধারাগুলো নিয়ে রুল জারির নির্দেশনা দিয়েছেন। হাইকোর্টে যে ইস্যুতে রুল জারি করেছেন বা মামলা চলমান, সেটা আমাদের সঠিক পথে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে বলে আশা করি।

দণ্ডবিধি আইনের গর্ভপাত সংক্রান্ত পাঁচটি ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট যে রুল জারি করেছিলেন, সেখানে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ সংশ্লিষ্ট চার বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।

জনস্বার্থে দায়ের করা এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট বিচারপতি তারিক-উল-হাকিম এবং বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। ওইদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।

আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন বলেন, মূলত ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং পছন্দ নিশ্চিত করার জন্য এ রিট দায়ের করি। বাস্তবতা থেকে দেখলে মামলার ভয়ে অনেক ডাক্তার-নার্স গর্ভপাত করাতে চান না। তাই প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার-নার্সদের দিয়ে গর্ভপাত করানো অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। তখন স্থানীয় ডাক্তার-নার্সদের বাসায় ডেকে গর্ভপাত করান অনেকে। এতে কখনো কখনো গর্ভপাত সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় না। পরবর্তীকালে সেটি অন্য রোগের কারণ হয়। এমনকি এতে গর্ভবতী নারীর ক্যানসার ঝুঁকিও বাড়ে।

‘গর্ভপাতের সুযোগ না থাকায় পথশিশু ও এতিখানায় শিশুদের হার দিন দিন বাড়ছে। এ ধারাগুলোতে ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভপাতের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ সুযোগ রাখা হয়নি। সংসার জীবনে অনেকের অপ্রত্যাশিতভাবে সন্তান জন্ম হচ্ছে। মূলত ওই সময়ে সন্তান নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি না থাকা সত্ত্বেও আইনি বাধার কারণে তাদের শিশুর জন্ম দিতে হচ্ছে। এসব কারণেই আইনের ধারাগুলো চ্যালেঞ্জ করে রিট পিটিশন দায়ের করি’- বলেন সৈয়দা নাসরিন।

পেনাল কোডের ধারাগুলো বাতিল নিয়ে ২০২০ সালের ৩১ মে সরকারকে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তাতে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ার তথ্য পেয়ে ওই বছরের ১৭ আগস্ট রিটটি করেন সৈয়দা নাসরিন।

১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইনের ৩১২ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভবতী স্ত্রীলোকের গর্ভপাত করান এবং যদি সে গর্ভপাত সরল বিশ্বাসে উক্ত স্ত্রীলোকের জীবন বাঁচাবার উদ্দেশ্যে না করা হয়, তবে সে ব্যক্তি তিন বৎসর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হবেন; এবং যদি স্ত্রীলোকটি শিশুর বিচরণ অনুভব করে, তবে সে ব্যক্তি সাত বৎসর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন, এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

৩১৩ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি পূর্ববর্তী ধারায় বর্ণিত অপরাধটি সংশ্লিষ্ট স্ত্রীলোকের সম্মতি ছাড়া সম্পাদন করেন, স্ত্রীলোকটি আসন্ন প্রসবা হোক বা না হোক, তবে সে ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা ১০ বৎসর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

৩১৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো গর্ভবতী স্ত্রীলোকের গর্ভপাত করানোর উদ্দেশে কৃত কোনো কাজের ফলে স্ত্রীলোকটির মৃত্যু ঘটান, তবে সে ব্যক্তি ১০ বৎসর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

৩১৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো শিশুর জন্মের পূর্বে এমন কোনো কাজ করেন, যাতে শিশুটি জীবিত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হতে না পারে বা জন্মের পরে তার মৃত্যু হয় এবং অনুরূপ কাজের ফলে শিশুটি জীবিত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ না হয় বা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তার মৃত্যু হয় এবং যদি কাজটি সন্তান জন্মদানকারী মায়ের জীবন রক্ষার জন্য সরল বিশ্বাসে কৃত না হয়, তবে সে ব্যক্তি ১০ বৎসর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবেন।

৩১৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করেন, যা দ্বারা সে কোনো মৃত্যু ঘটালে অপরাধজনক নরহত্যার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হতেন এবং অনুরূপ কার্যের সাহায্যে একটি জীবন্ত অজাত শিশুর মৃত্যু ঘটায়, তবে উক্ত ব্যক্তি যে কোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে (যার মেয়াদ ১০ বৎসর পর্যন্ত হতে পারে) দণ্ডিত হবেন এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335