শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:২২ অপরাহ্ন

ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুট মেঘনায় নাব্য সংকটে নৌযান চলাচল ব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক: মেঘনা নদীতে নাব্য সংকটের কারণে প্রতিদিনই ব্যাহত হচ্ছে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল। লঞ্চে যে পথ পাড়ি দিতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগতো এখন নাব্য সংকটের কারণে সময় লাগছে আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টা। অন্যদিকে ফেরিতেও সময় বেড়েছে দ্বিগুণ। এ অবস্থায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও নৌযান শ্রমিকদের।

সরেজমিনে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সহজ যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুট। ভোলার ইলিশাঘাট থেকে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীহাট ঘাটে প্রতিদিনই ১৫টি লঞ্চ ও ৫টি ফেরি চলাচল করছে। যাত্রী পারাপার করছেন প্রায় ১৫-২০ হাজার। কিন্তু মাত্র ২৩ কিলোমিটার নৌপথে বর্তমানে কাটাখালী, বিরিবির, লালবয়া, রহমতপুর, মতিরহাটসহ ৭-৮টি পয়েন্টে নদীতে জেগে উঠেছে ডুবোচর। যার কারণে আগে যেখানে ইলিশা থেকে লঞ্চে মজুচৌধুরীহাট ঘাটে যেতে সময় লাগতো এক থেকে দেড় ঘণ্টা বর্তমানে সেখানে ঘুরে যেতে সময় লাগছে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। লঞ্চের মতো ফেরির সময় বেড়েও দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণ। এতে প্রতিদিনই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এই রুটের সাধারণ যাত্রী ও নৌ-শ্রমিকদের।

ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীহাট রুটের যাত্রী মো. রিয়াজ, মো. মহিউদ্দিন, মো. আজিজ, মো. মমিন ও ডেইজি আক্তার জানান, প্রতিনিয়ত তারা এ রুটে চলাচল করেন। আগে ইলিশা থেকে মজুচৌধুরীহাট ঘাটে যেতে লঞ্চে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগতো কিন্তু এখন তাদের আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগছে। এছাড়াও কখনো যদি চরে লঞ্চ আটকে যায় তাহলে জোয়ারের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

তারা আরও জানান, এ রুটে নদীতে অসংখ্য ডুবোচরের কারণে লঞ্চ চরে আটকে পড়ার ভয়ে ঘুরে যায়। এতে সময় বেশি লাগে। দ্রুত এই সমস্যা সমাধানেরও দাবি করেন তারা।

এ রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ প্রিন্স অব মনপুরার মাস্টার আবু হানিফ ও আল মদিনা-২ লঞ্চের মাস্টার মো. আরিফুল রহমান আরমান জানান, যখন ইলিশা থেকে মজুচৌধুরীহাট ঘাটে রওয়ানা হই তখনই মাথায় একটা চিন্তা কাজ করে। সেটা হলো ডুবোচরে লঞ্চ আটকানোর ভয়। ডুবোচরের কারণে আমরা লঞ্চ ২৩ কিলোমিটারের পথ ৩১ কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাই। এতে আমাদের যেমন তেল খরচ বেশি হয় তেমনি ডুবোচরের কারণে কিছুটা গতি কমিয়ে চালানোয় সময় বেশি লাগে। এতে যাত্রীরা সঠিক সময় পৌঁছাতে পারে না। অনেক সময় যাত্রীরা আমাদের বিভিন্ন কথা শোনায়।

তারা আরও জানান, বর্তমানে যে অবস্থা রয়েছে তাতে লঞ্চ চলাচল করা খুবই মুশকিল। এ অবস্থায় আমরা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত নদীতে ড্রেজিংয়ের অনুরোধ করছি।

কিষাণী ফেরির মাস্টার মো. আতিকুর রহমান জানান, ডুবোচরের কারণে আমরা ঠিকমতো ফেরি চালিয়ে যেতে পারি না। ঘুরে গেলেও ডুবোচরে আটকা পড়ে ফেরি। পরে জোয়ারের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

বিআইডব্লিউটিসির ভোলার মেরিন অফিসার মো. আল-আমিন যাত্রী ভোগান্তির কথা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি আমরা দ্রুত সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবে।

বিআইডব্লিউটিএ ভোলা নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ড্রেজিংয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335