শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন

বাহিনীর অপকর্ম সবার কাছে কষ্টের: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: তিনদিন আগে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভার থেকে দুই ব্যক্তিকে অপহরণের চেষ্টার ঘটনায় র‍্যাবের উপস্থিতির তথ্য শুনেছি, তবে তথ্য অফিশিয়ালভাবে আসেনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন এ কথা।

তিনি বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপকর্ম সবার কাছে কষ্টের। এখন পর্যন্ত ১৭ জনেরও বেশি র‍্যাব সদস্য ও পুলিশের একজন ডিআইজিসহ একাধিক ব্যক্তি কারাগারে রয়েছেন। র‍্যাব-পুলিশ কিংবা জনপ্রতিনিধি, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন এ কথা।

বেতন-ভাতা সময় মতো পেলেও বারবার কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এমন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি দুষ্কর্ম করে, তা সবার কষ্টের জায়গা। র‍্যাব-পুলিশ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১৭ জনেরও বেশি র‍্যাব সদস্য ও পুলিশের একজন ডিআইজিসহ একাধিক ব্যক্তি কারাগারে রয়েছেন। তাদের যে নিয়মিত কার্যক্রম, সেখান থেকে বিচ্যুতি ঘটেছিল। আইন অনুযায়ী সবারই বিচার হবে। সেদিনের (২০ জানুয়ারি) ঘটনায় র‍্যাবের সদস্যদের উপস্থিতির তথ্য শুনেছি। এখন পর্যন্ত তিনজন গ্রেফতার আছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। নিয়মিত কর্মকাণ্ড থেকে বিচ্যুতি ঘটলে তার বিচার হবে।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা দেশকে কঠিন অবস্থানে ফেলে দিচ্ছে। কর্মহীন মানুষ একসঙ্গে থাকলে যা হবার, তাই হচ্ছে। রোহিঙ্গারা শুধু আমাদের নয়, সারা বিশ্বের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। তারা যে কোনো প্রলোভনে প্রলুব্ধ হতে পারে। এর দ্রুত সমাধানের জন্য বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে গাড়ি থামিয়ে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্য পরিচয়ে দুই ব্যক্তিকে অপহরণের চেষ্টার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় র‌্যাব সদস্য পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন মো. মুমিনুল, তার গাড়িচালক ও একজন আত্মীয়।

পুলিশ জানায়, র‍্যাব সদস্য পরিচয়ে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) রাতে মহাখালী ফ্লাইওভার থেকে দুই ব্যক্তিকে অপহরণের চেষ্টায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নম্বর-২১। মামলার বাদী শহিদুল ইসলাম এ ঘটনার একজন ভুক্তভোগী। গ্রেফতারদের মধ্যে মুমিনুল নিজেকে র‍্যাব সদস্য পরিচয় দিয়েছেন। এ ঘটনায় গ্রেফতার বাকি দুজনের মধ্যে একজন গাড়িচালক ও অপরজন মুমিনুলের আত্মীয়।

শুক্রবার মধ্যরাতে মহাখালী ফ্লাইওভার দিয়ে যাওয়ার সময় এ ঘটনার দৃশ্য ধারণ করে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেল। ওই টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার রাত সোয়া ২টার দিকে তাদের গাড়িটি মহাখালী ফ্লাইওভার দিয়ে যাওয়ার সময় সেটিকে থামতে বলেন জড়ো হওয়া লোকজন। সেখানেই দেখা মেলে হ্যান্ডকাফ পরা দুই ব্যক্তির। একজনের নাম শহীদুল ইসলাম, অন্যজন রিয়াজ। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগনে। শহীদুল ইসলাম পেশায় ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী।

তাদের অভিযোগ, বিমানবন্দর এলাকা থেকে গাড়ি ভাড়া করে যাচ্ছিলেন তারা। ফ্লাইওভারে উঠতেই তাদের গাড়ির গতিরোধ করে পেছন থেকে আসা আরেকটি গাড়ি। ওই গাড়ির আরোহী চার ব্যক্তি র‍্যাব পরিচয়ে অস্ত্র দেখিয়ে তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তাদের। একপর্যায়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে মারধর করে। সন্দেহ হওয়ায় চিৎকার শুরু করেন ভুক্তভোগীরা।

শহীদুল ইসলাম ওই টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেন, আমাদের গাড়ি থামিয়ে জানালা দিয়ে পিস্তল ধরে। গাড়ি থেকে বের হওয়ার পর বলে, তোরা (আমরা) সোনা চোরাচালানকারী। আমরা বলি, আমাদের চেক করে দেখেন। তখন আমাদের মারধর শুরু করে। বলে, গুলি করে মেরে ফেলবো। তারপর হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয়। এ সময় আমরা চিৎকার শুরু করি। আমাদের চিৎকার শুনে এক ব্যক্তি গাড়ি থামিয়ে পরিস্থিতি দেখে ৯৯৯ এ কল করেন। আর তখন সে পথ দিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন এক পুলিশ সদস্য। হট্টগোল দেখে তিনি এগিয়ে এসে ভুক্তভোগীদের সহায়তা করেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335