শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন

পরমাণু অস্ত্র বাড়াতে চান কিম

জিটিবি নিউজ ডেস্ক : নিজ দেশের পারমাণবিক অস্ত্রসম্ভার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। এর মধ্যে দূরপাল্লার আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও (আইসিবিএম) রয়েছে। রবিবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে। কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) পরিবেশিত খবরে বলা হয়, ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির এক বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার সুরক্ষায় ‘ব্যাপক সামরিক ক্ষমতা’ অর্জনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন কিম। উত্তর কোরীয় রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমটি আরো জানায়, দক্ষিণ কোরিয়া ‘অযৌক্তিক ও বিপজ্জনক অস্ত্রসম্ভার গড়ে তোলার দিকে ঝুঁকেছে’ বলে ওই বৈঠকে অভিযোগ করেন শীর্ষ নেতা কিম। তিনি বলেন, দেশটি পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিম জং উনের মতে, উত্তরকে বিচ্ছিন্ন এবং তার কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্রমাগত পারমাণবিক আক্রমণের রসদ পাঠানো হচ্ছে, যা ‘মানব ইতিহাসে নজিরবিহীন’। বৈঠকে পৃথক একটি আইসিবিএম ব্যবস্থা তৈরির প্রস্তাবও দিয়েছেন কিম। এর মূল লক্ষ্য হবে দ্রুত পারমাণবিক হামলার পাল্টা জবাব দেওয়া। ২০২২ সালের প্রায় পুরোটাতেই কোরিয়া উপদ্বীপে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। গত শনিবারও তিনটি স্বল্পমাত্রার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর। দক্ষিণ কোরিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ (জেসিএস) জানান, সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্রটি ৪০০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব সাগরে গিয়ে পড়েছে। জেসিএস ওই উেক্ষপণকে ‘গভীর উসকানি’ হিসেবেই দেখছেন। তাঁদের মতে এটি কোরিয়া উপদ্বীপ এবং গোটা বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। অন্যদিকে জাপানের উপকূলরক্ষী বাহিনী বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় ওঠে এবং সাগরের দিকে ৩৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পথ পাড়ি দেয়। জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসুকাজু হামাদা বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের এই পরীক্ষামূলক উেক্ষপণের প্রতিবাদ জানিয়েছে টোকিও। এক বিবৃতিতে মার্কিন ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই উেক্ষপণে পিয়ংইয়ংয়ের অবৈধ অস্ত্র কর্মসূচির ‘অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী প্রভাব’ ফুটে উঠছে। এ ছাড়া বিবৃতিতে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে এখনো দৃঢ়ভাবে অটল রয়েছে ওয়াশিংটন। সিউলের ইহোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইয়াসলের মতে, পিয়ংইয়ং গত বছর নিজেদের সামরিক আক্রমণের সক্ষমতা দেখিয়েছে বিশ্বকে। তিনি বলেন, ‘তাদের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র উেক্ষপণ কারিগরি দিক থেকে ততটা ভালো হয়নি। অস্বাভাবিক সময়ে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে এত বেশি উেক্ষপণের বিষয়টি যা তুলে ধরছে, তা হলো—উত্তর কোরিয়া যেকোনো সময় বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ করতে সক্ষম। ’ এরিক ইয়াসলে আরো জানান, দক্ষিণ কোরিয়াকে চাপে রাখতে উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি ড্রোনও ব্যবহার করছে। গত সপ্তাহে পিয়ংইয়ং দক্ষিণ কোরীয় আকাশসীমায় পাঁচটি ড্রোন উড়িয়েছে। সেগুলোকে অনুসরণ করতে নিজস্ব যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার পাঠিয়েছিল সিউল। শুধু উত্তর কোরিয়া নয়, দক্ষিণও নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। গত মাসেই সিউলের প্রতিরক্ষা ক্রয় কর্মসূচি প্রশাসন (ডিএপিএ) জানায়, আগামী ১০ বছরে সামরিক খাতে ২৭০ কোটি ডলারেরও বেশি খরচ করা হবে। সূত্র : সিএনএন, ডয়চে ভেলে

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335