শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন

অনুমোদন পেলো বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধ, এক ডোজ ৩৫ কোটি টাকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বায়োটেক কোম্পানি সিএসএল বেহরিং-এর হিমোফিলিয়া বি জিন থেরাপির অনুমোদন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা। এটি হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি নতুন ওষুধ, যা মাত্র একবার নিলেই যথেষ্ট। কিন্তু সেই এক ডোজ নিতে গেলেই খরচ পড়বে ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকারও বেশি। আকাশছোঁয়া এই দামের কারণেই এটি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধে পরিণত হয়েছে।

হিমোফিলিয়া মূলত রক্ত জমাট বাঁধায় সমস্যাজনিত একটি গুরুতর রোগ। এ ধরনের রোগীদের রক্ত সহজে জমাট বাঁধে না। ফলে কোনো কারণে কেটে গেলে বা অস্ত্রোপচারের সময় রোগীদের শরীর থেকে রক্তপাত বন্ধ হতে চায় না। এটি তাদের মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে। রক্তে বেশ কিছু প্রোটিন থাকে, যারা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এদের ‘ক্লটিং ফ্যাক্টর’ বলা হয়।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হিমোফিলিয়ার চিকিৎসায় সিএসএল বেহরিং-এর তৈরি ওষুধটির নাম হিমজেনিক্স। আরোগ্যলাভের জন্য এর মাত্র এক ডোজই যথেষ্ট।

গবেষণা বলছে, হিমজেনিক্স এক বছরের মধ্যে প্রত্যাশিত রক্তপাতের ঘটনা ৫৪ শতাংশ কমাতে সক্ষম। এটি ফ্যাক্টর আইএক্স’র সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল ইনফিউশন (শরীরে প্রবেশ) থেকে ৯৪ শতাংশ রোগীকে মুক্ত করেছে। বর্তমানে হিমোফিলিয়া রোগীদের সম্ভাব্য গুরুতর অবস্থা নিয়ন্ত্রণে ফ্যাক্টর আইএক্স ইনফিউশন পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে।

বায়োটেকনোলজিতে বিনিয়োগকারী ও লোনকার ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্র্যাড লোনকার বলেন, হিমজেনিক্সের দাম যদিও একটু বেশি, তবু আমি মনে করি, এটি সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম কারণ, বিদ্যমান ওষুধগুলোও অনেক ব্যয়বহুল। দ্বিতীয়ত, হিমোফিলিয়া রোগীরা ক্রমাগত রক্তপাতের ভয়ে থাকেন। তাই তাদের কাছে জিন থেরাপি আকর্ষণীয়ই হবে।

শিশুদের ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি’ বা মেরুদণ্ডের ক্ষয়রোগের চিকিৎসায় ২০১৯ সালে নোভারটিসের একটি ওষুধ অনুমোদন পেয়েছিল। ‘জোলগেনসমা’ নামে ওষুধটির দাম ২১ লাখ ডলার (২১ কোটি ৪২ লাখ টাকা প্রায়)। এছাড়া, এ বছরের শুরুর দিকে থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসায় অনুমোদন পাওয়া ব্লুবার্ড বায়ো’র তৈরি জিনটেগ্লো ওষুধের দাম ধরা হয়েছে ২৮ লাখ ডলার (২৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা প্রায়)।

যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) সেন্টার ফর বায়োলজিক্স ইভালুয়েশন অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক পিটার মার্কস বলেছেন, হিমোফিলিয়ার চিকিৎসায় যদিও অগ্রগতি হয়েছে, তবে রক্তপাত প্রতিরোধ ও চিকিত্সার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো রোগীদের জীবনযাত্রার মান নষ্ট করতে পারে।

ম্যাসাচুসেটসের লেক্সিংটনে ইউনিকিউর এনভি কারখানায় তৈরি হবে জিন থেরাপি হিমজেনিক্স। ২০২০ সালেই এটি বাজারজাত করার অধিকার সিএসএল বেহরিংয়ের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল ইউনিকিউর।

ইউনিকিউর এনভির তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ হিমোফিলিয়া বি’তে আক্রান্ত। সেই তুলনায় হিমোফিলিয়া এ’র রোগী প্রায় পাঁচগুণ বেশি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335