শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন

খাস জমি বন্দোবস্ত নীতিমালা উপেক্ষিত বগুড়ার শাজাহানপুরে খাস জমি থেকে ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদ করে বৃত্তবানদের লীজ দেওয়ার অভিযোগ

শাজাহানপুর, (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার শাজাহানপুরে সরকারী খাস সম্পত্তি বন্দোবস্ত নীতিমালা উপেক্ষিত হয়ে ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছে করে বৃত্তবানদের দখলের নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আবু জাকারিয়া দেওয়ান নামের এক ভূমিহীন ব্যক্তি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর কবুলিয়াত বন্দোবস্ত দলিল স্থগিত করার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়নের ডোমনপুকুর দেওয়ান পাড়া গ্রামে সরকারী খাস সম্পত্তির ১৫০৮ দাগের ২০ শতক জমি পূর্ব পুরুষের ধরে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন ভূমিহীন মৃত আবুল হাসনাতের পুত্র আবু জাকারিয়া দেওয়ান।

এমতাবস্থায় উপজেলার সাজাপুর গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের পুত্র আব্দুর রশিদ নামের এক বৃত্তবান প্রভাবশালী ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করে ভূমিহীন জাকারিয়া দেওয়ানের ভোগদখলকৃত ওই ২০ শতাংশ জমি নিজের নামে কবুলিয়াত বন্দোবস্ত দলিল করে নিতে আবেদন জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে ওই জমির দলিল সম্পন্ন করতে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ভূমিহীন জাকারিয়া দেওয়ান দিশেহারা হয়ে রোববার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর কবুলিয়াত বন্দোবস্ত দলিল স্থগিত করার জন্য লিখিত আবেদন জানান।
ভূমিহীন জাকারিয়া দেওয়ান জানান, আব্দুর রশিদ একজন বৃত্তবান প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার মাঝিড়া কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেটে একাধিক দোকান ঘর রয়েছে। এছাড়াও তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত মৎস্য ব্যবসায়ী। এবং কয়েক বিঘা জমির মালিক। আব্দুর রশিদ ভূমিহীন না হয়েও সংশ্লীষ্ট প্রশাসনকে বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করে নিজ নামে দলিল করে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকার যদি আব্দুর রশিদের নামে জমি কবুলিয়াত বন্দোবস্ত দলিল করে দেন তাহলে পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।
মাঝিড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আফজাল হোসেন বাচ্চু বলেন, সরকারী খাজ জমি ভূমিহীন মানুষেরাই পাওয়ার যোগ্য। তাছাড়া জাকারিয়া দেওয়ান পূর্ব পুরুষের ধরে ওই জমিতে বসবাস করে আসছে। সে ক্ষেত্রে প্রকৃত ভূমিহীনকে বঞ্চিত করে অন্য গ্রামের বৃত্তশালী ব্যক্তিকে কবুলিয়াত বন্দোবস্ত দলিল করে দেয়া কোন ভাবেই সমুচিন হবে না।
অপরদিকে একই মৌজার খাস সম্পত্তিতে বসবাসকারী দুদু মিয়া নামের এক ব্যক্তি গত ৩০ জুলাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর প্রায় একই রকম লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

আবেদনে উল্লেখ রয়েছে, খাস সম্পত্তির সাবেক ২২১৭ দাগের ১৭ কাতে ১০ শতকের মধ্যে ৬ শতক মৃত মহিতুল্লাহর পুত্র দুদু মিয়া এবং ৪ শতক মৃত মোজাম্মেল হোসেনের পুত্র আব্দুস সাত্তার ভোগদখল করে আসছে। এমতাবস্থায় আব্দুস সাত্তার নিজস্ব ৪-৫ শতক জমি থাকা সত্তেও ভূমিহীন সেজে দুদু মিয়ার ভোগদখলকৃত ওই ৬ শতক সহ ৭ শতক জমি পত্তনের জন্য আবেদন দাখিল করেছেন।

ভূমিহীন না হয়েও ভূমিহীন সেজে অন্যের ভোগদখলকৃত খাস জমি সরকারের নিকট থেকে পত্তন নেয়ার কথা জানতে পেরে দুদু মিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর যাচাই-বাছাই ও সরেজমিন তদন্ত করে পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়ার লিখিত আবেদন জানান।
এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন খাস জমি বন্দোবস্ত নীতিমালা উপেক্ষা করে কোন কিছু তোয়াক্কা না করে ওই সমস্ত জমি পত্তন ও কবুলিয়াত বন্দোবস্ত দলিল স¤পন্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা।

ভূমিহীনদেরকে বঞ্চিত করে বৃত্তশালী ব্যক্তিদেরকে সরকারী খাস জমি কবুলিয়াত বন্দোবস্ত দলিল করে দেয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিভা চাকমা জানান, উপজেলা খাস জমি বন্দোবস্ত কমিটির সিদ্ধাšত মোতাবেক ওই জমিগুলি দলিল সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তাছাড়া আবেদনের বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335