মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৪ অপরাহ্ন

বানারীপাড়ায় নদী ভাঙনের শিকার পরিবারের পাশে সাংবাদিক রাহাদ সুমন

মো. সুজন মোল্লা,বানারীপাড়া প্রতিনিধি: পৈত্রিক ভিটে-মাটি মাথা গোঁজার শেষ সম্বল বসত বাড়ি যারা হারিয়েছেন নদী ভাঙনে মূলত তারাই জানেন এর ব্যথীত মর্ম ব্যথার গভীরতার পরিধি কতটুকু। এমনই একটি গ্রামের সহ¯্রাধিক পরিবারের দুঃসহ দিন গুলির কথা লিখতে হচ্ছে এখানে। ওই গ্রামটি বরিশালের বানারীপাড়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের ঐতিহ্যবাহী দক্ষিণ নাজিরপুর। আজ থেকে প্রায় ২৫/৩০ বছর পূর্বে এই গ্রামটি প্রায় উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে গিয়েছিলো। তখন বসত বাড়ি হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব ও রিক্ত হয়েছিল। কেবল বসত বাড়িই নয় ওই গ্রামের সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, ঈদগাঁহ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট, ফসলি জমি, বসতভিটা সবই সন্ধ্যা নদী গ্রাস করে ফেলে।

বসতভিটা ও ফসলি জমিসহ সব কিছু হারিয়ে কয়েকশত পরিবার নিঃস্ব ও রিক্ত হয়ে পড়ে। সম্পত্তি ক্রয় করে বাড়িঘর করার যাদের সঙ্গতি নেই তারা অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে সদর ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম ও পৌরসভার  ১ নং ওয়ার্ড এবং সলিয়াবাপুর ইউনিয়নের খেজুরবাড়ি আবাসনে আবার কেউ কেউ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ও পৌরসভার অন্য ওয়ার্ডেও বসতি গড়েন। সপরিবারে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরেও চলে যান অনেকে।

যাযাবর জীবনও বেছে নিয়েছেন কেউ কেউ। নদীর তীরে ছাপড়া ঘরে থেকে কোন একদিন চর জেগে উঠবে সেখানে আবার ঘরবসতি গড়ে তুলবেন এ আশায় বুক বেধে আছেন অনেকে। তার পরের কথা প্রায় এক যুগ ধরে সেই ভেঙ্গে যাওয়া বসত বাড়ির জায়গা সন্ধ্যা নদীর বুক চিরে জেগে উঠতে শুরু করে। পৈত্রিক ভিটা আবার ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো। দু’একটি পরিবার বালি ভরাট করে ঘর নির্মাণের

প্রস্তুতিও নেয়। কিন্তু হঠাৎ করে উপজেলা ভূমি অফিস ওই সম্পত্তির খাজনা নেওয়া ও বালি ভরাট বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের স্বপ্ন ফিকে হতে শুরু করে। সন্ধ্যা নদীর তীরে জেগে ওঠা বিশাল এ চর খাস সম্পত্তি হয়ে যেতে পারে এ শঙ্কায় পড়েন তারা। অভিযোগ রয়েছে ওই সম্পত্তি খাস করে একটি ভূমিগ্রাসী চক্র ডিসিআর নিয়ে ভোগ দখলের পায়তারা করছেন। পৈত্রিক ভিটেমাটি ফিরে পাওয়ার দাবীতে নদী ভাঙনের শিকার পরিবার

আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। ১২ অক্টোবর সোমবার সন্ধ্যায় বানারীপাড়া প্রেসক্লাব ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত সভা থেকে ১৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ভূমি অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার মীর সাইদুর রহমান শাহজাহানের সভাপতিত্বে  অনুষ্ঠিত এ সভায়  বানারীপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি রাহাদ সুমনকে আহবায়ক ও সাবেক পৌর

কাউন্সিলর মশিউর রহমান কামাল, অধ্যাপক এমএ কাইয়ুম,পৌর কাউন্সিলর ইউনুস মিয়া ও সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ব্যক্তিগত সহকারী সাজ্জাদ হোসেনকে যুগ্ম আহবায়ক এবং সাবেক পৌর কাউন্সিলর রফিকুল আলমকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট দক্ষিণ নাজিরপুর গ্রাম রক্ষা ও উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হয়। নদী ভাঙনের শিকার পরিবার গুলো তাদের আন্দোলনে বানারীপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রাহাদ সুমনকে পেয়ে আবেক আপ্লুত হয়ে পরেন। এছাড়াও বানারীপাড়া প্রেসক্লাব এ আন্দোলনের সাথে থাকার কথা ঘোষণা করেছেন।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন উপজেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহবায়ক ও আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াহীদুজ্জামান দুলাল, সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ব্যক্তিগত সহকারী সাজ্জাদ হোসেন, বানারীপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি রাহাদ সুমন, সাবেক কাউন্সিলর রফিকুল আলম ও মশিউর রহমান কামাল, কামরুজ্জামান অপু প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335