বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন

সৌদিতে চাকরি দেয়ার নামে নারীর সম্ভ্রম হরণের চেষ্টা

নওয়াগ সংবাদদাতা: সৌদিতে চাকরি দেয়ার নাম করে স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারীর সম্ভ্রম হরণ করতে চেয়েছিল নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার এক লম্পট। নাম আলম খাঁ। পিতা নওঁশাদ খাঁ। বাড়ি উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের চকদেউলিয়া গ্রামে। শুধু তাই নয় এই প্রলোভনে তার নিকট থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বিশ হাজার টাকা। সম্ভ্রম হরণ করতে ওই লম্পট পাসপোর্ট করিয়ে দেয়ার নাম করে ওই নারীকে সঙ্গে নিয়ে নওগাঁর একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছিল।

লম্পটের অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে সম্ভ্রম রক্ষা করে নারীটি। শুধু তাই নয় বাড়িতে ফিরেও প্রভাব বিস্তার করে নানা হুমকি-ধামকী দিয়ে যাচ্ছে ওই লম্পট। এ ঘটনায় নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অভিযোগ দাখিল করেছে রুবিনা।

এমন ঘটনার স্বীকার নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের চকদেউলিয়া গ্রামের মোস্তফার মেয়ে রুবিনা। রুবিনার সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৪/৫ বছর আগে তার বিয়ে হয়। বিয়ের ১ বছরের মাথায় কন্যা সন্তানের মা হন তিনি। কিন্তু যৌতুকলোভী স্বামীর নির্যাতনে ওই সংসারে আর থাকতে পারেননি তিনি। তাই ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তাদের। এরপর গরিব মা-বাবার সংসারে মানবেতর জীবন যাপন শুরু হয় তার।

জীবন-জীবিকার তাগিদে রুবিনা পাবনা জেলার সদর উপজেলার একটি বাসা বাড়িতে গৃহ পরিচারিকার কাজ নেয়। কিন্তু একই গ্রামের প্রতারক ও নারী লোভী আলম খাঁ মোবাইল ফোনে রুবিনাকে সৌদিতে পাঠানোর স্বপ্ন দেখান। দিনের পর দিন তাকে ফোন করে উন্নত জীবনের স্বপ্নে বিভোর করে। আলম খাঁর এক ভাই সৌদিতে থাকে বলে বিষয়টি বিশ্বাস করে রুবিনা গৃহপরিচারিকার কাজ ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে সৌদি যাওয়ার উদ্দেশ্যে।

এরপর পাসপোর্ট খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা চাই আলম খাঁ এবং রুবিনাকে পাসপোর্টের জন্য নওগাঁ পাসপোর্ট অফিস যাওয়া লাগবে বলে সে। সরল বিশ্বাস ও সৌদির স্বপ্নে রুবিনা আলম খাঁর হাতে ২০ হাজার ঠাকা তুলে দিয়ে তার সাথে নওগাঁ পাসপোর্ট অফিস যায়। পাসপোর্টের বিভিন্ন অজুহাতে সময় অতিবাহিত করে সন্ধ্যা লাগায় সে এবং রুবিনাকে বলে বাড়ি ফিরার কোনো বাস নেই তাই আজ নওগাঁতেই থাকতে হবে বলে জানায়। এরপর রুবিনাকে নিয়ে লম্পট সন্ধ্যায় একটি আবাসিক হোটেলের ভাড়া করা কক্ষে উঠে।

হোটেলে উঠার পর রুবিনা আলম খাঁর অসৎ উদ্দেশ্য ও কুপ্রস্তাব পেয়ে আঁতকে উঠে। কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে সম্ভ্রম রক্ষা করে সে। বাড়ি ফিরে বিষয়টি জানালে স্থানীয় মাতবররা ঘটনাটি ধামা-চাপা দেয়ার চেষ্টা করে এবং আলম খাঁর পক্ষ থেকে শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের হুমকি। কোনো উপায় না দেখে রুবিনা এর প্রতিকার চেয়ে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে।

এমন ঘটনায় অভিযুক্ত আলম খাঁর সাথে কথা বলতে, তার ব্যবহৃত মুঠো ফোনে (০১৭১৪-৪৭৪৫৪৫) একাধিকবার ফোন করেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি লিখিত অভিযোগের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চত করেন এবং বলেন বিষয়টি তদন্তের জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335